ঢাকা: প্রথমবারের মতো গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাবের ওপর ভোক্তাদের মতামত নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ২ ফেব্রুয়ারি থেকে এ বিষয়ে গণশুনানি শুরু হবে বলে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) সূত্র জানিয়েছে।
এর আগে প্রত্যেকবারই সরকারি নির্বাহী আদেশে গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়। গণশুনানিতে প্রস্তাবকারী কোম্পানি ও ভোক্তাদের মধ্যে যুক্তিতর্ক হবে। এরপর মূল্যবৃদ্ধির যৌক্তিকতা যাচাই-বাছাই শেষে আদেশ দিবে বিইআরসি।
প্রথমদিন গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেডের (জিটিসিএল) হুইলিং চার্জ (সঞ্চালন) বৃদ্ধির প্রস্তাবের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। কোম্পানিটি প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের জন্য ভাড়া ৩২ পয়সা বাড়িয়ে ৪৭ পয়সা করার প্রস্তাব করেছে।
এরপর ৩ ফেব্রুয়ারি তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড ও পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের প্রস্তাবের ওপর শুনানি হবে।
৪ ফেব্রুয়ারি শুনানি হবে বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি ও কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির। শেষ দিন ৫ ফেব্রুয়ারি জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম লিমিটেড ও সুন্দরবন গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির প্রস্তাবের বিষয়ে শুনানি হবে।
গ্যাস কোম্পানিগুলো আবাসিক খাতে এক চুলা ৪’শ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮৫০ টাকা, দুই চুলা ৪৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
ক্যাপটিভ পাওয়ারে প্রতি হাজার ঘনফুট ১১৮ টাকা ২৬ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ২৪০ টাকা, সার উৎপাদনে ৯ দশমিক ৭১ শতাংশ, শিল্পে ৩২ দশমিক ৬ শতাংশ, সিএনজিতে ৩৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ বাড়ানোর সুপারিশ করেছে কোম্পানিগুলো।
সর্বশেষ ২০০৯ সালের আগস্টে বিইআরসি সব ধরণের গ্যাসের মূল্য ১১ দশমিক ২২ শতাংশ বাড়ায়। এছাড়া ২০১১ সালে দুই দফা সিএনজির দাম বাড়িয়ে প্রতি ঘনমিটার ৩০ টাকা করা হয়।
গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি বিদ্যুতের মুল্যবৃদ্ধির গণশুনানি প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
২০ জানুয়ারি শুরু হচ্ছে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির ওপর গণশুনানি। বিদ্যুতের মুল্য ১৫ থেকে ১৮ শতাংশ বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। অন্যদিকে অক্টোবর মাসে পাইকারি বিদ্যুতের দাম ১৮ দশমিক ১২ শতাংশ বৃদ্ধির প্রস্তাব করে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড।
প্রথম দিনে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) পাইকারি বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির উপর শুনানি হবে। এরপর ২১ জানুয়ারি সকালে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ’র (পিজিসিবি) হুইলিং চার্জ (সঞ্চালন ভাড়া) ও বিকেলে ওয়েস্ট-জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড’র (ওজোপাডিকো) গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবের উপর শুনানি গ্রহণ করা হবে।
২২ জানুয়ারি বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) ও ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি) এবং শেষদিন ২৫ জানুয়ারি পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) ও ঢাকা ইলেক্ট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানির (ডেসকো) প্রস্তাবের ওপর শুনানি হবে।
এদিকে বিএনপিসহ বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল গ্যাস ও বিদ্যুতের মুল্যবৃদ্ধির প্রস্তাবের বিরোধীতা করে আসছে। এমনকি দাম বাড়ানো হলে হরতাল দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে বিএনপি। কিন্তু এ বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে না বিইআরসি।
বিইআরসি চেয়ারম্যান এআর খান বাংলানিউজকে জানান, আন্দোলনের হুমকি নিয়ে ভাবছি না। অতীতেও এ রকম হুমকি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু যৌক্তিক কারণে দাম বাড়ানো হলে তেমন কোনো প্রতিবাদ হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০১৫