ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

পাইকারি বিদ্যুতের দাম ৫.১৬ শতাংশ বৃদ্ধির সুপারিশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০১৫
পাইকারি  বিদ্যুতের দাম ৫.১৬ শতাংশ বৃদ্ধির সুপারিশ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটারি কমিশনের (বিইআরসি) কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি পাইকারি বিদ্যুতের দাম ৫.১৬ শতাংশ বৃদ্ধির সুপারিশ করেছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) প্রস্তাব করেছে ১৮.১২ শতাংশ বৃদ্ধির।



মঙ্গলবার (২০ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে দশটায় রাজধানীর কারওয়ানবাজারের টিসিবি ভবনে অবস্থিত বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির প্রক্রিয়া নিয়ে বিইআরসি আয়োজিত গণশুনানিতে এ সুপারিশ করা হয়।

গণশুনানি গ্রহণ করেন বিইআরসি’র চেয়ারম্যান এআর খান, সদস্য ড. সেলিম মাহমুদ, প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন, রহমান মুরশেদ ও মাকসুদুল হক।

শুনানি শেষে কমিশন সদস্য ড. সেলিম মাহমুদ বলেন, সার্বিক বিষয়ে বিশ্লেষণ করেই সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে।   তিনি বলেন, আগামী ১০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শুনানি শেষ করা হবে। তারপর সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে।   দাম বড়ানো হলে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর করা হবে।

শুনানিতে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) পাইকারি বিদ্যুতের দাম ১৮.১২ শতাংশ অর্থাৎ ইউনিট প্রতি পঁচাশি পয়সা বৃদ্ধির প্রস্তাব করে। বিপিডিবি’র প্রস্তাবে বলা হয়, বর্তমানে তাদের পাইকারি বিদ্যুতের ইউনিট প্রতি উৎপাদন ও সরবরাহ খরচ পড়ছে ৬.৫৪ টাকা। আর বর্তমানে তারা বিদ্যুতের পাইকারি দাম নিচ্ছেন ইউনিট প্রতি ৪.৬৭ টাকা।

আগামী অর্থবছরে ৪ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি ধরে এ প্রস্তাব করা হয়েছে। একই সঙ্গে ১২ শতাংশ বাড়তি বিদ্যুৎ উৎপাদনের হিসেব দিয়েছে বিপিডিবি।

গণশুনানিতে আলোচনায় অংশ নিয়ে ক্যাবের জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, ২০১২ সালে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির অজুহাত দেখিয়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়। তখন বলা হয়েছিল, ২০১৪ সালে গিয়ে দাম কমানো হবে।


এখন জ্বালানি তেলের দাম ৭০ শতাংশ কমে গেছে। এখন দাম বাড়ানো নয়, কমানোর সময় এসেছে। আর বিপিডিবি যে ১২ শতাংশ বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা বলেছে তা অবাস্তব। অতীতে কখনই ১০ শতাংশের ওপরে যেতে পারেনি। তাই এই প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য না।

বিপিডিবি’র প্রধান প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন,  তেলের দাম কমলেও আমরা তার সুফল পাচ্ছি না।   তেলের দাম কমালে উৎপাদন খরচ কমে আসবে।

তার এ বক্তব্যের জবাবে বিইআরসি’র কারিগরি মূল্যায়ন কমিটির বরাত দিয়ে শামসুল আলম বলেন,  হিসেব করে দেখা গেছে, দাম যদি বাড়ানো না হয়, মাত্র ১ হাজার কোটি টাকা ঘাটতি থাকবে (সরকার যদি ভর্তুকি ২ হাজার কোটি টাকা কমিয়ে দেয়)। এ টাকা তেলে যে মুনাফা হচ্ছে সেখান থেকে সরবরাহ হতে পারে।

শামসুল আলম দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা ও অপচয়ের অভিযোগ তুলে বলেন, দুর্নীতি ঠেকানো গেলে দাম বাড়ানোর প্রয়োজন পড়তো না।

জবাবে বিইআরসি চেয়ারম্যান এআর খান বলেন, দুর্নীতি অপচয় তো কিছুটা রয়েছেই। বিইআরসি স্বীকার কিংবা অস্বীকার কোনোটাই করছে না। সংশ্লিষ্টরা ব্যবস্থা নেবেন। বিইআরসিও কিছু করার থাকলে করবে।
 
এদিকে ভেতরে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির লক্ষ্যে এ গণশুনানি চলাকালে বাইরে এর প্রতিবাদে গণঅবস্থান কর্মসূচি পালন করে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা। বাম মোর্চাভুক্ত বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন ও গণসংহতি আন্দোলনের নেতাকর্মীরা গণঅবস্থানে অংশ নেন।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকী বাংলানিউজকে বলেন, বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির এ প্রক্রিয়া অবৈধ। এর কোনো যৌক্তিকতা নেই। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে আমরা এখানে অবস্থান করছি।

বুধবার (২১ জানুয়ারি )সকালে পাওয়ার গ্রিড অব কোম্পানি’র (পিজিসিবি) হুইলিং চার্জ বৃদ্ধির প্রস্তাবের ওপর গণশুনানি হবে।   আর বিকেলে ওয়েস্ট-জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড’র (ওজোপাডিকো) গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবের ওপর শুনানি গ্রহণ করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০১৫

** ভেতরে গণশুনানি, বাইরে গণঅবস্থান

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।