ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

সুবিধা নয়, মোদির সফরে অধিকার নিশ্চিত হোক ‍

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৮ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০১৫
সুবিধা নয়, মোদির সফরে অধিকার নিশ্চিত হোক ‍ ছবি: দেলোয়ার হোসেন বাদল / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: বাংলাদেশে বিনিয়োগে ক্ষেত্র বিশেষে বিশেষ ছাড় পান ভারতের ব্যবসায়ীরা। আমাদেরও ভারতে বিনিয়োগ করার ইচ্ছা ও সামর্থ্য রয়েছে।

আমরা চাই, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরে এসব বিষয়ের যৌক্তিক সমাধান হোক।
 
দেশের বেসরকারি খাতের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী সামিট গ্রুপের পরিচালক (অর্থ) আয়েশা আজিজ খান এ আহবান জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৮ মে) দুপুরে মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে ভারত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরকে স্বাগত জানিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
 
আয়েশা আজিজ বলেন, মোদির সফর আমাদের জন্য সম্মানের। আমাদের প্রত্যাশা হচ্ছে, মোদির এ সফরের মধ্য দিয়ে ব্যবসার দ্বার অবারিত হোক। আমরা সমান সুযোগ আদায় হোক, এ কামনা করবো।
 
তিনি বলেন, কিছু ক্ষেত্র রয়েছে ভারতের ব্যবসায়ীরা বেশি সুবিধা ভোগ করেন। কিছু ক্ষেত্রে আমরা বেশি সুবিধা ভোগ করি। তারা অনেক কিছু করতে পারেন। কিন্তু আমরা পারি না। আমরা বাড়তি সুযোগ চাই না। আমরা সমান সুযোগ চাই।
 
ভারতের বেশ কিছু ব্যবসায়ী গ্রুপের সঙ্গে যৌথ বিনিয়োগের আলোচনা চলছে। মোদির এ সফরে বাংলাদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য সমান সুযোগ তৈরির দাবি জানান সামিট গ্রুপের এই অন্যতম কর্ণধার।
 
তিনি বলেন, খুব সংক্ষিপ্ত সময়ে বিবিয়ানা-২ ৩৪৪ মেগাওয়াট পাওয়ার প্লান্ট ও মেঘনাঘাট ৩৩৫ মেগাওয়াট পাওয়ার প্লান্ট উৎপাদনে এসেছে। এতে সামিট গ্রুপ যেমন খুশি, তেমনি আত্মবিশ্বাসও বেড়েছে।  
 
২০১৩ ও ২০১৫ সালে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার মধ্যেও তারা লক্ষ্যে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছেন। যে কারণে সামিট গ্রুপের প্রতি বিদেশি কোম্পানির আগ্রহ বেড়েছে। শ্রীলঙ্কা, ভূটান, নেপাল, ইন্দোনেশিয়াসহ অনেক দেশ থেকেই বিনিয়োগের প্রস্তাব পেয়েছেন বলেও জানান আয়েশা আজিজ খান।
 
তিনি বলেন, এ প্রকল্প দু’টি শুরুর সময় অনেকে ব্যঙ্গ করেছিলেন। তারা বলেছিলেন, এতো টাকা অভ্যন্তরীন মার্কেট থেকে তোলা হলে সংকট দেখা দেবে। আমরা স্বল্প সুদে দীর্ঘমেয়াদের জন্য ৪শ’ মিলিয়ন ডলার বিদেশি ঋণ নিয়েছি। কোনো সংকট দেখা দেয়নি।
 
ভবিষ্যতে দেশ থেকেই ইক্যুইটি(সম্পদ) সংগ্রহ করা হলে বলেও জানান তিনি।
 
বেসরকারি মালিকানায় প্রতিষ্ঠিত সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র হচ্ছে বিবিয়ানা-২। ৩৪৪ মেগাওয়াট গ্যাস ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পরীক্ষামুলক উৎপাদন শুরু করেছে। এ কেন্দ্রটি থেকে সবচেয়ে কম দরে বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। দুই টাকার কম দরে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। এ ছাড়া বেসরকারি খাতের আরেকটি বৃহৎ প্রকল্প ৩৩৫ মেগাওয়াট মেঘনাঘাট ডুয়েল ফুয়েল জ্বালানি ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ৮ মাস আগে উৎপাদনে এসেছে।
 
দেশের ১১টি স্থানে সামিট গ্রুপের বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে। এসব বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ১ হাজার ২৬২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছে। যা দেশে বেসরকারি খাতে একক কোনো কোম্পানির সর্বোচ্চ উৎপাদন বলে জানা গেছে।
 
তবে সামিটের এ বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর উৎপাদনে আসতে বিলম্বের অভিযোগ রয়েছে। এমন প্রশ্নের জবাবে আয়েশা আজিজ বলেন, এ অভিযোগ সত্য নয়। কারণ, প্রধান চুক্তির পর নির্ধারিত সময়েই উৎপাদনে এসেছে। টেন্ডার পাওয়ার পর চুক্তির প্রক্রিয়ায় কিছুটা বিলম্ব হয়েছে যার দায় সামিটের একার ওপর বর্তায় না।
 
বিবিয়ান-১ বিদ্যুৎকেন্দ্রটিও সামিট গ্রুপের ‍মালিকানায় নির্মিত হওয়ার কথা। কিন্তু সামিট নির্মাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। যে কারণে শেষ পর্যন্ত টেন্ডারটি বাতিল করা হয়েছে এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে আয়েশা আজিজ বলেন, জমি দেওয়ার কথা ছিল সরকারের। তারা দিতে বিলম্ব করেছে।
 
আমরা অনেক অপেক্ষা করেছি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যখন তারা দিতে পারেনি, তখন বাধ্য হয়ে সামিট সরে এসেছে বলেও দাবি করেন তিনি।
 
মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সামিট পাওয়ার লিমিটেডের ডিএমডি এএনএম তারিকুর রশিদ, সামিট গ্রুপের চিফ লিগ্যাল কাউন্সিলর কারিশমা জাহান প্রমুখ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সামিট গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক (পাবলিক রিলেশন অ্যান্ড মিডিয়া) শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৮ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০১৫
এসআই/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।