ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

দুই মিলিয়ন ডলার ঘুষ

‘ওয়েলস ফারগো’র কাছে তথ্য চেয়েছে বিবি

সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৪৫ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০১৫
‘ওয়েলস ফারগো’র কাছে তথ্য চেয়েছে বিবি

ঢাকা: আশুগঞ্জে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে ঠিকাদার নিয়োগে আমেরিকার ব্যাংকে ঘুষ লেনদেনের তথ্য চেয়ে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি)। অর্থ জালিয়াতির ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির অনুরোধে এই চিঠি দিয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র।


 
অন্যদিকে অভিযুক্ত আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানির (এপিএসসিএল) সাবেক এমডি নুরুল ইসলাম ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহের জোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। সানফ্রান্সিসকোর ‘ওয়েলস ফারগো’ ব্যাংকে তার ছেলে মাহফুজ আলমের অ্যাকাউন্টে জমা হওয়া দুই মিলিয়ন ডলার ঘুষের অর্থ কনসালট্যান্সি ফি হিসেবে দেখাতে তৎপর হয়ে উঠেছেন। এর স্বপক্ষে তারিখ পরিবর্তন করে কাগজ তৈরিরও উদ্যোগ নিয়েছেন। যাতে ওই অর্থ (দুই মিলিয়ন ডলার) বৈধ বলে প্রমাণ করানো যায়।
 
বিষয়টিতে স্প্যানিশ কোম্পানি টিএসকে ইলেক্ট্রনিক’র কিছুটা সায়ও নাকি মিলেছে। কারণ, উৎকোচ প্রদানের বিষয়টি প্রমাণিত হলে বিশ্বব্যাংকসহ দাতাদের কাছে কালো তালিকাভুক্ত হতে পারে স্প্যানিশ কোম্পানিটি। এমনটি হলে বিশ্ব থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না টিএসকে ইলেক্ট্রনিকের। যে কারণে কোম্পানিটি এতে সায় দিয়েছে বলে দাবি একটি সূত্রের।
 
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশের পিপিআর অনুযায়ী, চূড়ান্ত দর অনুমোদনের পর আপস-রফার সুযোগ নেই। কিন্তু পিপিআর ভঙ্গ করে অবৈধ লেনদেনের মাধ্যমে ২২’শ ২৬ কোটি টাকার দরপত্র ৩২’শ কোটি টাকা করা হয়েছে।

অর্থাৎ এক হাজার কোটি টাকা বাড়তি পরিশোধ করতে হবে বাংলাদেশকে। ইপিসি ঠিকাদারকে অর্থ বাড়িয়ে দেওয়ার এমন ঘটনা নজিরবিহীন। কিন্তু সেই কাজটি করেছে আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানি লিমিটেডের (এপিএসসিএল) ৪৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে। কোম্পানিটির বোর্ড চেয়ারম্যান ও বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত আনোয়ার হোসেন সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুরুল আলম।
 
আর এর বিনিময়ে তাদের পকেটে গেছে ৬ মিলিয়ন ডলার বা ৪৮ কোটি টাকা। যার মধ্যে দুই মিলিয়ন ডলার লেনদেন হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের সানফ্রান্সিসকোর ওই ব্যাংকে। ব্যাংকটিতে রয়েছে এপিএসসিএলের সাবেক এমডি প্রকৌশলী নুরুল আলমের ছেলে মাহফুজ আলমের অ্যাকাউন্ট। স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদ থেকে ওই অ্যাকাউন্টেই পাঠানো হয়েছে দুই মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
 
তদন্ত কমিটির প্রধান পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য আরস্তু খান বাংলানিউজকে জানান, সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে তথ্য চাওয়া হয়েছে। তদন্ত চলছে, এখনই এর বেশি বলতে চাচ্ছি না।
 
তদন্ত কমিটির সদস্য বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর সীতাংশু কুমার সুর চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
 
ঠিকাদার নিয়োগে জালিয়াতির মাধ্যমে ঘুষ লেনদের সম্পর্কিত একটি রিপোর্ট বাংলানিউজে প্রকাশিত হয়। সেই খবরের ভিত্তিতে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য আরস্তু খানকে প্রধান করে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ঘুষ লেনদেনের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে তথ্য চেয়ে কমিটি চিঠি দিয়েছে আমেরিকান ব্যাংকের কাছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৪৫ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০১৫
এসআই/জেডএস

** বিনিময় ছয় মিলিয়ন, তদন্ত কমিটি গঠন
** বিনিময় ছয় মিলিয়ন, দেশের ক্ষতি ৪৫ মিলিয়ন

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।