জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: বর্তমানে (০৫ নভেম্বর, ২০১৫) পর্যন্ত যে পরিমাণ জ্বালানি তেলের মজুদ রয়েছে, তাতে তেলের সঙ্কট হওয়ার কোনো সম্ভবনা নেই বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
রোববার (১৫ নভেম্বর) বিকেলে জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তরকালে সরকার দলীয় সদস্য মো. মামুনুর রশীদ কিরনের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী এ কথা জানান।
প্রতিমন্ত্রী জানান, ০৮ নভেম্বর পর্যন্ত দেশের জ্বালানি তেলের মজুদ রয়েছে সাত লাখ ৫৭ হাজার ৪শ ৫৭ মেট্রিক টন। দেশের বিভিন্ন স্থানে স্টোরেজ ট্যাংক নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। গৃহীত পরিকল্পনার মধ্যে মংলায় এক লাখ মেট্রিক টন, চট্টগ্রামে ১২ দশমিক ৫০ হাজার মেট্রিক টন ও কুর্মিটোলা এভিয়েশন ডিপুতে সাত দশমিক ৫০ হাজার মেট্রিক টন স্টোরেজ ট্যাংক নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। বিদ্যমান জ্বালানি ব্যবস্থাপনায় দেশে জ্বালানি তেলের সঙ্কট হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
ভোলা-৩ আসনের সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরীর অন্য এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, দেশে গ্যাসের চাহিদার সঙ্গে তাল রেখে সরবরাহ বাড়ানো সম্ভব হবে না।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশে দৈনিক গড়ে ২৭শ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে গ্যাস উত্তোলন বাড়ানোর লক্ষ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। আগামী ২০২০ সাল নাগাদ মোট ২৯টি কূপ থেকে দৈনিক ৩শ ২৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন বাড়ানোর কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
অন্যদিকে ২০২১ সালের মধ্যে বাপেক্স’র স্থলভাগে ১৬টি ও ২০১৮ সালের মধ্যে আইওসি’র অফশোরে ৪টি অনুসন্ধান কূপের খনন কার্যক্রম পরিচালিত হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
‘ওই অনুসন্ধান কূপ খননের মাধ্যমে স্থলভাগে দৈনিক ১শ ৩০ এমএমসিএফ গ্যাস প্রাপ্তি আশা করা হচ্ছে| এটি সবার জানা, দেশে গ্যাসের চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে গ্যাসের সরবরাহ বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। অন্যদিকে, গ্যাসের মজুদও পর্যাপ্ত না হওয়ায় জ্বালানি চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে সরকার এখনই গ্যাসের তরলজাত এলএনজি আমদানির জন্য কাতারের সাথে এমওইউ স্বাক্ষর করেছে এবং এফএসআরইউ ক্রয় ও এলএনজি টার্মিনাল স্থাপনের জন্য আমেরিকাভিত্তিক একটি কোম্পানিকে দায়িত্ব দিয়েছে। ’
আগামী ২০১৬-২০১৭ নাগাদ গ্যাসের তরলজাত এলএনজি আমদানি করা সম্ভব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি বলেন, আপাতত দৈনিক ৫শ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের সমতুল্য এলএনজি আমদানি করা হবে।
তিনি জানান, বর্তমান সরকারের সময়ে (০১ জানুয়ারি ২০০৯ থেকে এ পর্যন্ত) সন্ধানপ্রাপ্ত ৬টি স্ট্রাকচারে গ্যাস অনুসন্ধানের লক্ষ্যে কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এর মধ্যে ৩টি (সুন্দলপুর, শ্রীকাইল ও রূপগঞ্জ) স্ট্রাকচার গ্যাসে আবিষ্কৃত হয়। সুন্দলপুর ও শ্রীকাইলে-এ একত্রে ১শ ৯৬ দশমিক ১৪ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুদ রয়েছে।
‘সুন্দলপুর থেকে দৈনিক গড়ে তিন দশমিক ছয় এমএমসিএফ ও শ্রীকাইল হতে দৈনিক গড়ে ৩৭ দশমিক এক এমএমসিএফ হারে দৈনিক গড়ে মোট ৪০ দশমিক সাত এমএমসিএফ গ্যাস উৎপাদিত হচ্ছে। এছাড়া মার্চ ২০১৫ থেকে বেগমগঞ্জ গ্যাস ফিল্ড থেকে দৈনিক প্রায় চার দশমিক পাঁচ এমএমসিএফডি হারে গ্যাস উৎপাদিত হচ্ছে। ’
তিনি আরও জানান, খুব শিগগিরই রূপগঞ্জ গ্যাসফিল্ডটি উৎপাদনে আসবে। সর্বোপরি বর্তমান সরকার যখন ক্ষমতায় আসে তখন দৈনিক উৎপাদন ছিল প্রায় এক হাজার ৭শ ৪৪ এমএমসিএফডি। সরকারের গৃহীত বিভিন্ন কার্যকর পদক্ষেপের ফলে তা ৯শ ৮৬ এমএমসিএফডি বেড়ে বর্তমানে প্রায় দুই হাজার ৭শ ৩০ এমএমসিএফ-এ উন্নীত হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৫
এসএম/এসএস
** প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাতে সংসদে বিশেষ প্রস্তাব