ঢাকা: আমি বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকতা হিসেবে বলবো আজকে বিদ্যুতের চাহিদা ছিলো ৫হাজার ৭শ মে. ওয়াট। এর বিপরীতে সোমবার উৎপাদিত হয়েছে ৪হাজার ৪ শ ৪১ মে. ওয়াট ( রাত ৮ টায়)।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা বলেছেন, এরপর আমায় যদি প্রশ্ন করেন বিদ্যুতের সঠিক চাহিদা কতো তাহলে বলবো আমি প্রায় ৭ হাজার মে. ওয়াট।
তিনি বলেন, বিদ্যুতের উৎপাদন এবং চাহিদা নিয়ে লুকোচুরি খেলা আমাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। কোন সময়েই সঠিক হিসাব প্রকাশ করা হয় না। প্রকৃত চাহিদার চেয়ে অনেক কম দেখানো হয়। এর থেকে যে কি লাভ হয় আমি বুঝতে পারি না।
সারা দেশে যখন লোড শেডিং চলছে তখন কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, পরিস্থিতি আগের চেয়ে অনেক উন্নতি হয়েছে।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ( বিপিডিবি) এর পাওয়ার সেল সূত্র জানিয়েছে, দেশে বর্তমানে বিদ্যুতের উৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে ৫ হাজার ৪শ ২৫ মে. ওয়াট।
এর বিপরীতে উৎপাদন হচ্ছে কমবেশি সাড়ে ৪ হাজার মে. ওয়াট। এর মধ্যে ডিস্টিবিউশন লস ১৪ দশমিক ৩৩ শতাংশ এবং ট্রান্সমিশন লস ৩ দশমিক ০৬ শতাংশ। অন্যদিকে সর্বোচ্চ চাহিদা হচ্ছে ৫ হাজার ৭শ মে. ওয়াট।
২০০৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে গ্রাহক সংখ্যা ছিলো ১১ দশমিক ৬৭ মিলিয়ন। যা মোট জনসংখ্যার মাত্র ৪৭ শতাংশ ( পূর্বের আদম শুমারী অনুযায়ী)।
পাওয়ার সেল যখন এই পরিসংখ্যান দিচ্ছে ঠিক সে সময়ে সারা দেশে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং চলছে।
অতীতে রাতে তেমন কোন লোড-শেডিং না হলেও বর্তমানে সেই নিয়ম উল্টে গেছে।
রাজধানীর অনেক স্থানে রোববার দিবাগত গভীর রাতেও বিদ্যুতের লোড শেডিং ছিল বলে গ্রাহকরা জানিয়েছেন।
মিরপুর ১ নম্বর এলাকার বাসিন্দা শাহজাহান আলী জানিয়েছেন গতকাল রোববার দিনে রাতে অর্ধেক সময়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ পাওয়া যায়নি। অতীতে কখনও আমি রাত ১২ টার পরে তেমন লোড শেডিংয়ের কবলে পড়িনি। গতকাল সন্ধা থেকে যাওয়া আসা করেছে বিদ্যুৎ।
বিকেলে চলে গিয়ে আসে রাত ৮টায়। মাত্র ১ ঘণ্টা পর ৯ টায় আবার চলে যায়। এবার দেখা মেলে রাত সোয়া ১০ টায়। এর মাত্র ১ ঘণ্টার মাথায় আবার চলে গিয়ে আসে রাত সোয়া ১ টায়।
ঢাকা ইলেক্ট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি ( ডেসকো) এর পরিচালক (সরবরাহ) শাহজাহান মিয়া বাংলানিউজকে জানিয়েছেন পরিস্থিতি ভালো না। গতকাল রাত ৮ টায় ৬ শ ৪৪ মে. ওয়াট চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ পাওয়া গেছে ৪ শ ১০ মে. ওয়াট।
চাহিদার ৩ ভাগের এক ভাগ সরবরাহ পাওয়া গেছে। সে হিসেবে ২ ঘণ্টা পর পর এক ঘণ্টা লোড শেডিং থাকা স্বাভাবিক। তবে অনেক স্থানে ১ ঘণ্টা পর পর লোড শেডিং দিতে হয়েছে বলে তিনি স্বীকার করেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা বিদ্যুৎ উৎপাদন করি না তাই এ বিষয়ে আমাদের করার কিছু নেই। আমরা যে ভাবে সরবরাহ পাচ্ছি সেভাবে বাই রোটেশনে বিতরণ করে আসছি।
বিপিডিবি এর পরিচালক ( উৎপাদন) আবু ইউসুফ বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, গরম বাড়ার কারণে চাহিদা প্রায় ৫ শ মে. ওয়াট বেড়েছে।
তিনি বলেন, গরম বাড়ার কারণে এসির ব্যবহার বাড়ায় পরিস্থিতি কিছুটার অবনতি হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে শিগগিরই পরিস্থিতি উন্নতি হবে।
চলতি সপ্তাহে নতুন কোন কেন্দ্র বিদ্যুৎ উৎপাদনে না গেলেও পুরাতন কয়েকটি কেন্দ্র সংস্কারের কাজ চলছে যার মাধ্যমে উৎপাদন বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫২ ঘণ্টা, আগস্ট ০১, ২০১১