ঢাকা: জ্বালানি তেলে মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে বিরোধী দলের আন্দোলন কর্মসূচিকে অনর্থক এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই এলাহী চৌধুরী।
বিএনপিহীন রাজনৈতিক সংস্কৃতি চর্চ্চা থেকে বিরত থাকবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
বুধবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তরে (জিএসবি) এক কর্মশালার উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
বিএনপি জামায়ত জোট সরকারের সময়ে ৯ দফায় জ্বালানি তেলের প্রায় শতভাগ দাম বাড়ানো হয়েছিলো উল্লেখ করে বলেন, ‘তাদের মুখে এসব মায়াকান্না মানায় না। ’
তিনি আরো বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে প্রথম দফায় জ্বালানি তেলের দাম ২ টাকা কমিয়ে দেয়। পরে তা সমন্বয় করে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ানোর কারণে ২ দফায় তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। ’
সম্প্রতি জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধিকে তিনি ভর্তুকি কমানো বলে উল্লেখ করে বলেন, ‘এখনও জ্বালানি তেলে ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে। ’
`আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমেছে বাংলাদেশে তেলের দাম কমানো হবে কিনা?` এ প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলে এখনই তার ফল বাংলাদেশ পাবে না। এর ফল পেতে বাংলাদেশকে আরো ৬ মাস সময় অপেক্ষা করতে হবে। ’
জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার স্থিতিশীল রাখতে একটি ফোরাম গঠিত হয়েছে। ওই ফোরামে তেল রপ্তানিকারক এবং আমাদানিকারক দেশসমূহ রয়েছে।
এই ফোরাম কার্যকর হলে আন্তর্জাতিক বাজার স্থিতিশীল থাকবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
সিএনজির দাম বাড়ানোর কোনো সম্ভাবনা আছে কিনা এ প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘দাম বাড়ানোর বিষয়টি এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন ভালো বলতে পারবে। ’
জিএসবি এবং নরওয়েজিয়ান ইনস্টিটিউট এর যৌথভাবে পরিচালিত ইনহেন্স ইন্সটিউশনাল সার্পোট অ্যান্ড ক্যাপাসিটি বিল্ডিং প্রকল্পকে সময়োচিত ও যথাযথ উদ্যোগ বলে উল্লেখ করে বলেন, ‘এই প্রকল্পের বাস্তবায়ন হলে দেশ বড় ধরণের দুর্যোগ থেকে অনেকাংশে রক্ষা পাবে। এই প্রকল্পের আওতায় বড় বড় স্থাপনা সার্বিক অবস্থা মূল্যায়ন করে মেরামত করা হবে। ’
ঢাকা শহররক্ষা বাঁধের সার্বিক অবস্থা মূল্যায়ন করে কোনও দুর্বল দিক থাকলে আগেই মেরামত এবং চট্টগ্রামের ভূমি ধসের আগাম সতর্কতা হিসেব প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কাজ করবে।
কর্মশালা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দেশে ভূমিকম্প ও ভূমিধসের মতো বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় সরকার তৎপর রয়েছে। সেজন্য এ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মকর্তারা দক্ষতা অর্জনের পাশাপাশি নানা বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবে। ’
‘ইনহেন্স ইন্সটিটিউশনাল সার্পোট অ্যান্ড ক্যাপাসিটি বিল্ডিং অফ জিওলোজিক্যাল সার্ভে অব বাংলাদেশ ফর মিটিগেশন অব জিওহ্যাজার্ড ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় জিএসবি এ কর্মশালার আয়োজন করে।
তিনি বলেন, ‘জিএসবির নেওয়া এই প্রকল্পের মাধ্যমে বড় বড় স্থাপনা (ব্রিজ, ভবন), শহর রক্ষা বাঁধ ও পাহাড় সম্পর্কে নানা ধরনের তথ্য পাওয়া যাবে সে অনুযায়ী আগাম সর্তকতা গ্রহণ সহজ হবে। ’
কর্মশালায় আরো বক্তব্য দেন নরওয়ের রাষ্ট্রদূত রাগনে বার্টে লুণ্ড, ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মুনিরা আক্তার চৌধুরী প্রমুখ।
জাতীয় এই কর্মশালায় ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তর বিভিন্ন দেশের ১৩০ জন জিয়োলজিস্ট অংশগ্রহণ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১১