বাংলাদেশসহ বিশ্বজুড়ে চলছে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক। এর মধ্যেও রাশিয়ার সার্বিক সহযোগিতায় বাস্তবায়নাধীন বাংলাদেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বাংলানিউজকে বলেন, স্বাস্থ্যবিধির সব কিছু মেনটেইন করেই রূপপুর প্রকল্পের কাজ চলছে। এখানে যারা কাজ করছে দেশি-বিদেশি সবার স্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় সব ধরনের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দেড় হাজারের উপরে রাশিয়ান এখানে কাজ করছে। আরও কিছু রাশান এক্সপার্ট আসার কথা রয়েছে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে তাদের আসা স্থগিত আছে, পরিস্থিতি বুঝে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এখন পর্যন্ত কাজের ধারাবাহিকতা অব্যাহত আছে,পুরোদমে এগিয়ে চলছে কাজ।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এই লক্ষ্য পূরণে আগের মতোই নির্মাণ কাজের ধারাবাহিকতা চলমান। এরই মধ্যে প্রকল্পটির প্রথম ইউনিটের রিয়্যাক্টর ভবনের ইনার মাউন্টেইন কনটেইনমেন্টের নির্মাণ কাজ ২০ মিটার পর্যন্ত সম্পন্ন হয়েছে। এরপর থেকে মাউন্টেইন ব্লক প্রিপারেশনের কাজ ৩৪.৫ মিটার পর্যন্ত চলমান। ১২টি মাউন্টেইন ব্লকের তিনটি স্থাপন করা হয়েছে। বাকিগুলো স্থাপনের কাজ চলছে। প্রকল্পের দ্বিতীয় ইউনিটের কাজও এগিয়ে চলেছে। সব মিলিয়ে এ প্রকল্পের প্রায় ২৫ শতাংশ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন।
এদিকে সংশ্লিষ্টরা আরও জানান, দেশি-বিদেশি কোনো কর্মী যেন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত না হন তার জন্য নেওয়া হয়েছে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। প্রকল্প সাইটের সব প্রবেশ পয়েন্টসহ অফিস বিল্ডিং ও ক্যান্টিনের প্রবেশ পয়েন্টে থার্মাল স্ক্যানার স্থাপন করা হয়েছে। প্রকল্প এলাকার সব স্থানে সার্বক্ষণিক পরিচালিত হচ্ছে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম। এ ভাইরাস প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় সব স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করা হচ্ছে এবং সব কর্মীকে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার সরবরাহ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক ড. শৌকত আকবর বাংলানিউজকে বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার স্বাস্থ্যবিধি মেনেই কাজ চলছে। এরই মধ্যে প্রথম ইউনিটের রিয়্যাক্টর ভবনের ইনার মাউন্টেইন কনটেইনমেন্ট নির্মাণ কাজ ২০ মিটার শেষ হয়েছে। এখন ২০ থেকে ৩৪.৫ মিটার পর্যন্ত নির্মাণ কাজ চলছে। অনুরূপভাবে অন্য স্থাপনার কাজও এগিয়ে চলেছে। এখানে যারা কাজ করছেন তাদের থার্মাল স্ক্যানার দিয়ে শরীরের তাপমাত্র মেপে প্রকল্প এলাকায় প্রবেশ করানো হচ্ছে।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণু শক্তি করপোরেশন-রোসাটম প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। গত মার্চ মাসে প্রকল্প এলাকায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী, পরিকল্পনামন্ত্রী এবং রোসাটমের মহাপরিচালক সরেজমিনে পরিদর্শন করে প্রকল্পের অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেন। এই প্রকল্পে রাশিয়ার সর্বাধুনিক থ্রি প্লাস প্রজন্মের ভিভিইআর-১২০০ রিঅ্যাক্টরভিত্তিক দু’টি ইউনিট স্থাপন করা হবে। ২০২৩ সালের মধ্যে ১২শ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন প্রথম ইউনিট এবং ২০২৪ সালের মধ্যে ১২শ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দ্বিতীয় ইউনিটের বাণিজ্যিক অপারেশন শুরু হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৫, ২০২০
এসকে/এএ