ঢাকা: শনিবার সন্ধায় সামান্য ঝড়ে ঢাকার বিদ্যুৎ বিতরণে চরম বিপর্যয় দেখা দেয়। তাই প্রশ্ন উঠেছে সক্ষমতা নিয়ে।
এই জোনের অনেক এলাকায় সন্ধা ৬ টায় বিদ্যুৎ চলে গিয়ে আসে রাত ২ টার দিকে। দুর্ভোগের শিকার এই জোনের বাসিন্দাদের ডিপিডিসির আচরণ চরম ক্ষুব্ধ করে তোলে।
‘সন্ধ্যারাতে যখন বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে এলাকা তার পর থেকেই বেশ কয়েকটি কন্ট্রোল রুম ফোন ও সেলফোন সেবা বন্ধ করে দেয়। এমনকি স্বয়ং মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মঞ্জুরুল ইসলামের সেলফোনে কল করেও তাকে পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। ’
‘গ্রাহকদের এ অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য রাত ৮ টা থেকে ১২ টা পর্যন্ত অনেক চেষ্টা করের খিলগাঁও কন্ট্রোল রুমের সেল ফোনে সাড়া পাওয়া যায়নি। সারাক্ষণেই ফোন (নম্বর ৭২১২২৪৪) ব্যস্ত করে রাখা হয়। ’
‘অভিযোগ উঠেছে গ্রাহকরা যাতে যোগাযোগ করতে না পারেন সেজন্য ফোনের রিসিভার তুলে কৃত্রিম ভাবে ব্যস্ত করে রাখা হয়। ’
সন্ধ্যারাতে মহাব্যবস্থাপক মঞ্জুরুল ইসলামের সেলফোনে যোগাযোগ করলেও তিনি একবার ধরে বলেন, ’পরিস্থিতি না জেনে কোনো কথা বলতে পারছি না। তবে ছোট খাটো কিছু সমস্যা হয়েছে কিছুক্ষণের মধ্যেই ঠিক হয়ে যাবে।
এরপরে রাত ৯ টা থেকে ১২ টা পর্যন্ত সার্বিক খোঁজ নেওয়ার জন্য বাংলানিউজের পক্ষ থেকে মহাব্যবস্থাপকের সেলফোনে কল করলেও তিনি রিসিভ করেন নি। এমন কী বারবার এসএমএস দিলেও তিনি তাতে সাড়া দেননি।
মালিবাগ চৌধুরীপাড়া এলাকার বাসিন্দা শামীম আহমেদ বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, আমার মনে হয়েছে গ্রাহকদের প্রতি তাদের কোনো দায়িত্ব নেই। কন্ট্রোল রুমের ২৪ ঘন্টা সেবা দেওয়ার কথা। অথচ বারবার ফোন করেও তাদের ফোনে যদি না পাওয়া যায় তাহলে কি বলা উচিত।
তিনি আরও বলেন, এই ঘটনার জন্য জিএম এবং খিলগাঁও জোনের কর্মকর্তাদের শাস্তি হওয়া উচিত।
জাইদুল ইসলাম নামের এক এলাকাবাসী বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, তারা যদি ফোন রিসিভ করে কখন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হবে জানাতেন তাহলেও মানুষ কিছুটা স্বস্তি পেত। রাতে বিদ্যুৎ পাচ্ছি কি পাচ্ছি না সে বিষয়েও জানা ছিল না কারো। এ ব্যাপারটা চরম কষ্টভোগের পাশাপাশি ক্ষুব্ধ করে এলাকাবাসীকে।
ওই ঘটনায় ক্ষোভে ফুসছেন এলাকাবাসি ।
বিদ্যুৎ বিভাগের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিদ্যুৎ বিভাগে এক শ্রেণীর কর্মকর্তা রয়েছেন যারা সরকারকে বিব্রত করতে চান। তারা ইচ্ছা করেই এ ধরণের কাজ করেছেন কিনা খতিয়ে দেখা উচিত।
তার ছিড়ে গেলে তা সারাতে কোনোভাবেই এক ঘন্টার বেশি সময় লাগার কথা নয়’ বলেও তিনি দাবি করেন।
একই অবস্থা ছিলো পূর্ব রামপুরা, পশ্চিম বনশ্রীসহ রাজধানীর অনেক এলাকায়। সেখানে মাঝরাত পার হয়ে গেলে বিদ্যুৎ সরবরাহ ঠিক হয়।
আজ রোববার খিলগাঁও জোনে যোগাযোগ করা হলে সুপারভাইজার শহীদ বাংলানিউজকে জানান, মালিবাগ চৌধুরীপাড়া এলাকায় একটি বিলবোর্ড লাইনের উপর পড়ে গিয়েছিলো। বিলবোর্ডটি সরিয়ে নিতে সময় লেগেছে।
ফোন সেট এবং সেলফোন বন্ধ করে কেন রাখা হলো?’—এ প্রশ্নের জবাবে কোনো মন্তব্য করতে চাননি তিনি।
স্থানীয়রা বলছেন, এই যদি হয় বিতরণ ব্যবস্থার সক্ষমতা তাহলে বড় কোনো বিপর্যয় ঘটলে তা কীভাবে সামাল দেবে ডিপিডিসি?
বাংলাদেশ সময়: ২১১৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০১২
সেরাজুল ইসলাম সিরাজ
সম্পাদনা: জুয়েল মাজহার, কনসালট্যান্ট এডিটর