ঢাকা: দেশে বর্তমানে বিদ্যুতের মোট ঘাটতি এক হাজার ৮০০ মেগাওয়াট বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) চেয়ারম্যান এএসএম আলমগীর কবির।
সোমবার দুপুরে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) কার্যালয়ে পাইকারি বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর গণশুনানিতে অংশ নিয়ে বক্তব্য রাখার সময় অনেকটা উত্তেজিত হয়ে তিনি এতথ্য জানান।
জ্বালানি বিশ্লেকরা বলছেন, বিদ্যুৎ চাহিদার প্রকৃত তথ্য সবসময় গোপন রাখা হয়। রোববারও পিডিবির ওয়েবসাইটে দাবি করা হয়, ওই দিন দেশে মাত্র ৪৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎঘাটতি ছিল। তাদের অভিযোগ, ‘বিদ্যুৎ চাহিদা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মিথ্যাচারের সংস্কৃতি চলে আসছে। এমনকি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়েও মিথ্যা তথ্য প্রচার করে আসছে পিডিবি। ’
কঠোর গোপনীয়তার এ বিষয়টি আর গোপন রাখতে পারলেন না পিডিবি চেয়ারম্যান এএসএম আলমগীর কবির। তিনি ‘মুখ ফসকে’ প্রকৃত বিদ্যুৎ ঘাটতির কথা বলে ফেলেন।
কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর বিরোধিতা করলে এর জবাবে পিডিবি চেয়ারম্যান এ কথা বলেন।
পিডিবি চেয়ারম্যান বলেন, ‘দেশে এখন ১৮০০ মেগাওয়াট লোডশেডিং রয়েছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি ডিজেল ও ফার্নেস অয়েল দিয়ে এক সময় যে সময় ধরে চালানো হতো, এখন আরো বেশি সময় চালানো হচ্ছে। ফলে জ্বালানি তেলের ব্যবহার বাড়ছে। সঙ্গে বাড়ছে উৎপাদন খরচ। ’
রোববার দেশে বিভিন্ন স্থানে মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিং হলেও পিডিবির ওয়েবসাইটে দেখানো হয়েছে, পিক আওয়ারে শুধুমাত্র কুমিল্লায় ১৯ ও ময়মনসিংহে ২৫ মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়েছে। আর কোথাও লোডশেডিং হয়নি। এদিন রাত নয়টায় সারাদেশে বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদা দেখানো হয়েছে পাঁচ হাজার ৫৫০ মেগাওয়াট। আর উৎপাদন হয়েছে পাঁচ হাজার ৪৯৮ মেগাওয়াট। ফলে ঘাটতি দাঁড়ায় ৪০ মেগাওয়াট।
বিশ্লেষকরা জানাচ্ছেন, পিডিবির এই তথ্য বরাবরের মতোই কাল্পনিক। বিদ্যুৎ বিভাগ এতদিন এই মিথ্যাকেই প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করেছে।
বিদ্যুৎ বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, ‘প্রকৃত সত্য এর চেয়েও আর কঠিন। আমরা বুঝি না কেন এই বিষয়টি গোপন করে রাখা হয়। ’
‘গোপন করে যদি জনগণের কোনো লাভ হতো তাহলে কোনো আপত্তি ছিল না। কিন্তু এতে করে মানুষ হতাশ হয়। প্রশাসনের প্রতি আস্থা হারায়। ’
বাংলাদেশ সময় : ১৮৪০ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০১২
সম্পাদনা: রানা রায়হান, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর