দামী এই মাছের খামার গড়ে উঠেছে বিভিন্ন দ্বীপে। এটাই ইন্দোনেশিয়ার বাস্তবতা।
আকাশছোঁয়া দাম আর ক্রমবর্ধমান চাহিদা। সামুদ্রিক মাছের পাশাপাশি তাই আরওয়ানার প্রতি বিশেষ গুরুত্বই দেখা গেলো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দ্বীপ রাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়ায়।
কেন এই মাছের এতো দাম? কীভাবেই বা চাষ হচ্ছে অভিজাত এই মাছের?
দেশটির মিনিস্ট্রি অব মেরিন অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড ফিশারিজের অ্যাকোয়াকালচার অধিদফতরের মাধ্যমে চি বুবুর এলাকায় আরওয়ানা ফার্ম পরিদর্শনের সুযোগ পায় বাংলানিউজ।
চীন ও জাপানি নাগরিকরদের অনেকের বিশ্বাস, অ্যাক্যুয়ারিয়ামে থাকা আরওয়ানা কেবল ঘরের সৌন্দর্যই বাড়ায় না, এটা পরিবারে আনে সমৃদ্ধি আর উন্নতি।
বাস্তবে কতোটা সমৃদ্ধি আনে তা দেখার সুযোগ না হলেও, এটা যে ইন্দোনেশিয়ার সমৃদ্ধিতে বিশাল ভূমিকা রাখছে তা বলে দেয় এই মাছের ক্রমবর্ধমান খামারের সংখ্যা।
আরওয়ানাকে দেখতে দক্ষিণ জাকার্তা থেকে যাত্রা শুরু। শহর জার্কাতা প্রতি মুহূর্তেই পাল্টে নিচ্ছে নিজের চেহারা। উন্নত দেশের আদলে আট লেন সড়ক, সারিবদ্ধভাবে যান চলাচল।
এঁকে-বেঁকে যাওয়া অসংখ্য উড়াল সড়ক। আধুনিক আর উন্নত সড়ক ব্যবস্থাপনা। বাসগুলো পৃথক লেন ধরে অবাধে নির্বিঘ্নে ছুটে চলেছে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায়। যানজটে আটকে থাকার বালাই নেই আলাদা লেনে চলা বাসযাত্রীদের।
বড় সড়ক ধরে পাহাড়ি পথ। তারপর সরু রাস্তা ধরে গ্রামীণ পরিবেশের চি বুবুর। সেখানেই বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে গড়ে তোলা আরওয়ানা মাছের পোনা উৎপাদনের হ্যাচারি ও খামার।
সেখানে দেখা গেলো, এক যুবক গামলা বোঝাই পোকা নিয়ে যাচ্ছেন পুকুরে।
এগুলো কী?
ঘাসের পোকা, ক্রিকেত। বনেদি এই মাছের খাবার। বাটিতে নিয়ে পোকা ছিটানো মাত্রই ডুবে থাকা প্রমাণ সাইজের আরওয়ানা ভেসে উঠলো। উঁকি দিয়ে যেনো দেখলো তাদের দেখতে আসা আগন্তুকদের।
সেখানেই কথা হলো মিনিস্ট্রি অব মেরিন অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড ফিশারিজের অ্যাকোয়াকালচার অধিদফতরের পরিচালক (ফিশ সিড) কো কো কোকারকিনের সঙ্গে।
বাংলানিউজকে জানান, সোনালি রঙের যে আরওয়ানা দেখছেন, পোনা উৎপাদনের পর সেগুলোর গায়ের রঙ ছিলো কালো। ধীরে ধীরে ধারণ করেছে সোনালি বর্ন। কেবল সোনালিই নয়- লাল, সবুজ, রুপালি আর মার্বেল রঙের আরওয়ানার চাষ হচ্ছে এখানে।
তবে রেড আরওয়ানার চাহিদা ও দাম দু’টোই বেশি। দিন দিন এই মাছের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এখন ইন্দোনেশিয়াতেই গড়ে উঠেছে ৫শ ৭৬টি খামার।
এসব খামার থেকে মাছ উৎপাদন করে তা পাঠানো হয় চীন ও জাপানসহ অন্যান্য দেশে। আবার ইন্দোনেশিয়ায় বসবাসকারী এসব দেশের নাগরিকদের কাছেও রয়েছে এই মাছের চাহিদা।
দুই থেকে ছয় কেজি ওজনের আরওয়ানা মেলে এখানে। যাদের গড় বয়স ১০ বছর।
কাচের বাক্সে বা অ্যাক্যুয়ারিয়ামের এই মাছটিই এখন ইন্দোনেশিয়ার ঘরে তুলছে মোটা অংকের বৈদেশিক মুদ্রা, কো কো কোকারকিন।
বাংলাদেশ সময়: ১০৪৪ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০১৭
এসএনএস
আরও পড়ুন
** ঘামে ভেজা গেঞ্জি থেকেই সাফল্য!
** ইন্দোনেশিয়ায় নেমেই কোটিপতি!
** বাংলার পুকুরেই সাগরের ভেটকি
** প্রবাসে ভবিষ্যত বাংলাদেশ
** ইন্দোনেশিয়ায় অনন্য বাংলাদেশকেই মেলে ধরছেন হুমায়রা
** সন্ধ্যা হতেই বাতি নেভে শাহজালালের ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের
**ঢাকা-জাকার্তা অনন্য উচ্চতায়
** ইন্দোনেশিয়া হতে পারে সেরা গন্তব্য
** এবার ইন্দোনেশিয়ার পথে বাংলানিউজের জাহিদ