ওই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ তদন্ত করে এর সত্যতা এবং তাঁর স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে গত সপ্তাহে এ ব্যবস্থা গ্রহণ করে দূতাবাস কর্তৃপক্ষ।
কয়েক মাস আগে আরও এক বাংলাদেশি ভিসা ব্যবসায়ীকে প্রতারণার অভিযোগে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল দূতাবাসের পক্ষ থেকে।
কাতারে বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে, কয়েক মাস আগে তিন জন বাংলাদেশিকে কাতারে আনার পর তাদের আইডি(পরিচয়পত্র) তৈরি করে না দিয়ে বরং পাসপোর্ট আটকে রেখেছিলেন মোহাম্মদ আলী নামের ওই ব্যবসায়ী।
এছাড়া আরও একজনের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার পরও তাঁর আইডি (পরিচয়পত্র) তৈরি করে দেননি তিনি। এই চার প্রতারিত বাংলাদেশি দূতাবাসের কাছে সুনির্দিষ্টভাবে অভিযোগ জানালে দূতাবাসের পক্ষ থেকে মোহাম্মদ আলীকে ডাকা হয়। তিনি দূতাবাসে রাষ্ট্রদূত ও অন্যান্য কর্মকর্তার সামনে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। কিন্তু পাসপোর্ট ফেরত দেওয়ার জন্য ওই চারজনের কাছে তিনি ২৮ হাজার রিয়াল দাবি করেন।
দূতাবাসের কর্মকর্তারা তাকে বলেন, পাসপোর্ট বাংলাদেশ সরকারের সম্পদ। এটি আটকে রেখে তিনি বেআইনি কাজ করছেন। কাতারের আইনেও পাসপোর্ট আটকে রাখা অবৈধ।
এ সময় তাঁকে পাসপোর্ট ফেরত দেওয়ার জন্য এক সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়। কিন্তু এ ব্যাপারে কোনো লিখিত প্রতিশ্রুতিতে স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানান মোহাম্মদ আলী। এরপর নানা বাহানায় তিনি পাসপোর্ট ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে গড়িমসি করতে শুরু করেন।
এক পর্যায়ে রাষ্ট্রদূতের নেতৃত্বে দূতাবাসের কর্মকর্তারা তাঁর ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন। পরে এ ব্যাপারে কাতারের সংশ্লিষ্ট আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যোগাযোগ করে দূতাবাস। তাকে তুলে দেওয়া হয় কাতার পুলিশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের হাতে।
দূতাবাসের শ্রম সচিব রবিউল ইসলাম জানান, আমরা মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়ার পর সেটি যাচাই করার জন্য তাঁকে দূতাবাসে ডেকে আনি। দীর্ঘ আলাপ আলোচনার পরও তিনি কর্মীদের পাসপোর্ট নানা কৌশলে আটকে রেখেছিলেন।
এছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে এমন আরও বেশ কিছু অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পর তাকে দূতাবাস আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
শ্রমসচিব বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে আরও অন্যান্য অভিযোগ ছিল। আরও অনেক বাংলাদেশি কর্মীর সঙ্গে তিনি এমন অন্যায় ও প্রতারণামূলক আচরণ করেছেন। আমরা এ ধরণের ভিসা ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণে বদ্ধ পরিকর। দূতাবাসের পক্ষ থেকে এ ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যাহত থাকবে। তিনি এ ব্যাপারে দূতাবাসে অভিযোগ করার আহ্বান জানান।
এ ব্যাপারে রাষ্ট্রদূত আসুদ আহমদ বলেন, বাংলাদেশ দূতাবাস কোনো দালাল বা প্রতারককে প্রশ্রয় দেবে না। বরং ভিসা বাণিজ্য ও প্রতারণায় জড়িত যে কারও বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তা যাচাই করার পর আমরা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০২ ঘণ্টা, নভেম্বর ০২, ২০১৭
আরআই