বুধবার (০৩ জুলাই) যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশ হাইকমিশনের পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, বাংলাদেশ হাই কমিশন, রয়েল জিওগ্রাফিক্যাল সোসাইটি ও ইন্টারন্যালশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেইঞ্জ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইসিসিসিএডি) উদ্যোগে এক সেমিনারের আয়োজন৷ করা হয়।
গত ১ জুলাই (সোমবার) আয়োজিত এই সেমিনারে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশের পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন।
‘ক্লাইমেট চেঞ্জ: লেসনস ফ্রম বাংলাদেশ’ শীর্ষক এ সেমিনারে আলোচকদের মধ্যে ছিলেন যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার সাঈদা মুনা তাসনীম, বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের সদস্য ও পরিবেশ বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী, আইসিসিসিএডি-এর পরিচালক ড. সালেমুল হক এবং যুক্তরাজ্য সরকারের সাবেক প্রধান বিজ্ঞান বিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর স্যার ডেভিড কিং।
রয়েল জিওগ্রাকিক্যাল সোসাইটির পরিচালক প্রফেসর জো স্মিথ এতে সভাপতিত্ব করেন। পরিবেশ কর্মীসহ বিভিন্ন পেশা ও শ্রেণীর ৩০০ শতাধিক দর্শক এই সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন।
সাঈদা মুনা তাসনীম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিবেশ সুরক্ষায় শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বের বিভিন্ন ফোরামে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে চলেছেন। এ ক্ষেত্রে তার অসামান্য অবদানের জন্য তাকে জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক সর্বোচ্চ সম্মাননা ‘চ্যাম্পিয়ন অব দ্য আর্থ’ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, পরিবেশ দূষণে বাংলাদেশের ভূমিকা খুবই নগন্য, তারপরও বাংলাদেশই পরিবেশ ঝুঁকি মোকাবেলায় সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে সবার আগে ‘ক্লাইমেট ফান্ড’ প্রতিষ্ঠা করেছে। এছাড়াও বিভিন্ন আইন ও নীতিমালা প্রণয়ন করে এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি চালু করে বিশ্বে এক অনন্য নজির স্থাপন করেছে। এদিক দিয়ে বাংলাদেশকে ‘ক্লাইমেট ক্রসেডার’ বলা যায়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরিবেশ সুরক্ষায় বাংলাদেশের দৃষ্টান্ত বিভিন্ন দেশে সফলভাবে অনুসরণ করার জন্য পরিবেশ সচেতন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে ঐক্যবদ্ধ উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান হাই কমিশনার।
সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশ প্রতি বছর চার বিলিয়ন ডলারেরও বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। এ ক্ষতি যাতে ক্রমান্বয়ে না বাড়ে সে জন্য সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ ও কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে চলেছে। এসব কার্যক্রমের মাধ্যমে পরিবেশ পরিবর্তনের ঝুঁকিগুলো মোকাবিলা করার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করে তোলা হচ্ছে, বিভিন্ন ধরনের গবেষণা করা হচ্ছে যাতে ভবিষ্যতের ঝুঁকিগুলো মোকাবিলায় প্রস্তুত হওয়া যায়। তবে পরিবেশের ঝুঁকি কোনো একটি দেশের পক্ষে একা মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। এ জন্য সব দেশের সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন।
পরিবেশ সুরক্ষায় কঠোর আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগের ওপর জোর দিয়ে ড. সালেমুল হক বলেন, জ্বালানি কোম্পানিসহ যেসব প্রতিষ্ঠান ও কোম্পানি সবচে বেশি পরিবেশ দূষণ করছে তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
পরিবেশ সুরক্ষায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাফল্যের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ এক্ষেত্রে অনেক দেশের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে।
ডেভিড কিং বলেন, পরিবেশ পরিবর্তনের কারণে কলকাতা হবে বিশ্বের প্রথম বাসযোগ্যহীন শহর। কাজেই প্রতিবেশী বাংলাদেশের বিভিন্ন শহরের ঝুঁকি সংগত কারণেই অনেক বেশি।
পরিবেশ ঝুঁকি মোকাবিলায় কার্বনের মাত্রা কমিয়ে আনার জন্য বিভিন্ন কার্যকর প্রযুক্তি ও পদ্ধতি প্রয়োগের আহ্বান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ২২০১ ঘণ্টা, জুলাই ০৩, ২০১৯
টিআর/এমএ