ঢাকা: বাংলাদেশের চলমান উন্নয়নধারা আরও শক্তিশালী ও বেগবান করতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রথমবারের মতো ব্রাজিলে বাংলাদেশ দূতাবাস ৫ দিনব্যাপী অর্থনৈতিক কূটনীতি সপ্তাহ পালন করেছে। বুধবার (১৫ জুন) এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে তারা।
এতে বলা হয়, এ উদ্দেশ্যে ব্রাসিলিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশর রাষ্ট্রদূত সাদিয়া ফয়জুননেসার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল রিওডি জেনিরোতে দেশটির ওষুধ ও তৈরি পোশাক খাতের ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন।
এ সময় ফার্মাসিউটিক্যালস খাতে বাংলাদেশের অর্জন ও সক্ষমতা বিশেষভাবে তুলে ধরা হয়। ব্রাজিলে ওষুধ খাতের পথিকৃৎ স্যার জর্জ রাইমুন্ড ফিলহো বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বাংলাদেশের ওষুধ ও তৈরি পোশাকের গুণগত মানের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে ব্রাজিলের অর্থনীতিতে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রদেশ পারানার রাজধানী কুরিচিবাতে অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশের প্রথম অনারারি কনস্যুলেট উদ্বোধন করা হয়েছে। এ সময় বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সংগীত বাজানো হয়। অনুষ্ঠানে পারানার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, কুরিচিবাতে বিভিন্ন দেশের মোট ৪১টি অনারারি কনস্যুলেট আছে। পারানা সমুদ্রবন্দর ব্রাজিলের দ্বিতীয় ব্যস্ততম বন্দর। বাংলাদেশের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বৃদ্ধি, বিশেষ করে সয়াবিন তেল আমদানিতে এই বন্দর বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। সে লক্ষ্যেই পারানার গভর্নর ডারসি পিয়ানার সঙ্গে রাষ্ট্রদূত বৈঠক করেন এবং বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক সক্ষমতার কথা তুলে ধরেন।
দুই দেশের বাণিজ্য ঘাটতি নিরসনে পারানার ব্যবসায়িক ফোরাম কমার্স ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্টের সঙ্গে পৃথক বৈঠকে রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য তাদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের পাশাপাশি বাংলাদেশ বিনিয়োগ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে ব্রাজিলের ব্যবসায়ীদের ইপিজেড পরিদর্শন এবং বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানান।
পারানার কো-অপারেটিভ অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিয়মিতভাবে বাংলাদেশে সরাসরি ভোজ্য সয়াবিন তেল রপ্তানির লক্ষ্যে রাষ্ট্রদূতের সভাপতিত্বে একটি প্রারম্ভিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য, ব্রাজিল থেকে গত বছর বাংলাদেশ ১ লাখ ৬৬ হাজার মেট্রিক টন সয়াবিন তেল আমদানি করেছে। প্রাথমিকভাবে ওসেপার কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে তাদের ইতিবাচক মনোভাব ব্যক্ত করেন। যদিও ব্রাজিল থেকে জিটুজি প্রক্রিয়ায় কোনো রপ্তানি হয় না, তথাপি এ বিষয়ে পরবর্তীতে কারিগরি পর্যায়ে আলোচনার বিষয়ে দুই পক্ষই একমত হয়।
রাষ্ট্রদূত কুরিচিবার মেয়রের সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন এবং দু’দেশের সংস্কৃতি আদান-প্রদানের মাধ্যমে অর্থনৈতিক কূটনীতি সচল রাখার বিষয়ে একমত হন। ইউনিভার্সিটি অব কুরিচিবার স্নাতক পর্যায়ের ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস, বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থান ও বৈশ্বিক ফোরামে জলবায়ু পরিবর্তনসহ বিভিন্ন ইস্যুতে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের পক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শক্তিশালী ভূমিকার কথা তুলে ধরেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশের ব্যাপারে তাদের আগ্রহ প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশ দূতাবাসের তৃতীয় সচিব ফুয়াদ হাসান পরাগ এবং পারানাতে সদ্যনিযুক্ত বাংলাদেশের অনারারি কনসাল মার্সেলো গ্রেন্ডেল এই অর্থনৈতিক কূটনীতি সপ্তাহের কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৫ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০২২
টিআর/এমএমজেড