ঢাকা: শহীদ শেখ রাসেলের নৃশংস হত্যাকাণ্ড আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের পাশাপাশি শিশু অধিকার সনদেরও লঙ্ঘন। লন্ডনের বাংলাদেশ হাইকমিশনে শেখ রাসেল দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক স্মারক আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথা বলেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের ৫৯তম জন্মদিন উপলক্ষে পূর্ব লন্ডনে আয়োজিত এ স্মরণসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশের সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। এ বছরের প্রতিপাদ্য ছিল ‘শেখ রাসেল নির্মলতার প্রতীক, দুরন্ত প্রাণবন্ত নির্ভীক’।
কে এম খালিদ বলেন, শেখ রাসেলের খুনিরা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মূল পরিকল্পনাকারী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উত্তরাধিকারকে মুছে ফেলতে চেয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার সরকারের প্রগতিশীল ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার বিরুদ্ধে দেশ-বিদেশে এখনও ষড়যন্ত্র চলছে। তিনি সবাইকে বিশেষ করে ব্রিটিশ-বাংলাদেশিদের এ ধরনের ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শহীদ শেখ রাসেলের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম স্বাগত বক্তব্যে বলেন, ১০ বছর বয়সী শেখ রাসেলের নৃশংস হত্যাকাণ্ড সমসাময়িক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ও শিশু অধিকার কনভেনশনের লঙ্ঘন, যা ভবিষ্যতে শিশুদের পূর্বপরিকল্পিত হত্যা প্রতিরোধে একটি ঐতিহাসিক রেফারেন্স হতে পারে।
হাইকমিশনার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে এখন একটি কার্যকর আইনি কাঠামো ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা রয়েছে, যা শিশুদের বাঁচার অধিকার সুনিশ্চিত করাসহ বর্বরতা, অপব্যবহার ও বৈষম্য থেকে তাদের সুরক্ষা করে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ হাইকমিশন, লন্ডন নতুন প্রজন্মের ব্রিটিশ-বাংলাদেশিদের সংস্কৃতি, শিক্ষা, ঐতিহ্য ও খেলাধুলায় ক্রমাগত সংযুক্ত, লালন ও উৎসাহিত করে বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের বন্ধন সুদৃঢ় করতে বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়মিত চালিয়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের সাবেক সদস্য ও বিশিষ্ট আইনজীবী নুরজাহান বেগম মুক্তা এবং যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সুলতান মাহমুদ শরীফ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন- বীর মুক্তিযোদ্ধা খলিল কাজী ও ব্রিটিশ বাংলাদেশি কমিউনিটি বিশিষ্ট সদস্য সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক।
অনুষ্ঠানের শুরুতে হাইকমিশনার প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি এবং হাইকমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ রাসেলের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে জাতির পিতা ও শেখ রাসেলের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর শেখ রাসেল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের সব সদস্যদের স্মরণে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
অনুষ্ঠানে শেখ রাসেলের জীবনের ওপর আইসিটি বিভাগ নির্মিত একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। শেখ রাসেলকে উৎসর্গ করে ব্রিটিশ-বাংলাদেশি শিশুরা ও বিশিষ্ট শিল্পী গৌরী চৌধুরী একটি বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৫০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০২২
টিআর/আরবি