ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সালতামামি

বগুড়ায় এক বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪২০

টি. এম. মামুন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০১৩
বগুড়ায় এক বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪২০

বগুড়া: ২০১৩ সালে বগুড়া অঞ্চলে ৫২০টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪২০ জন নিহত ও ৭১০ জন আহত হয়েছেন। যদিও হাইওয়ে পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৪৮৫ সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৯০ জন নিহত ও ৬৬২ জন আহত হয়েছেন।



এসব দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন ২৮০ জন। অপেক্ষাকৃত কম আহত হয়েছেন ৪৩০ জন। আর এসব দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত যানবাহনের সংখ্যা ৬৫১টি, মামলা হয়েছে ২০৫টি। তবে বগুড়া জেলায় জুন ও জুলাই মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটেছে।

রোববার বিকেল পর্যন্ত হাইওয়ে পুলিশ (পশ্চিমাঞ্চল) বগুড়া অফিস ও বগুড়ার ১২ থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সংশ্লিস্ট কার্যালয় থেকে বাংলানিউজকে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

সূত্রমতে, জানুয়ারিতে ৪২ দুর্ঘটনায় নিহত ৩৪ ও আহত ৮৩, ফেব্রুয়ারিতে ৪৬ দুর্ঘটনায় নিহত ৪৩ ও আহত ৬৫,  মার্চে ৪০ দুর্ঘটনায় নিহত ৩৯ ও আহত ৪৫, এপ্রিলে ৪২ দুর্ঘটনায় ৪১ জন নিহত ও ৭৭ জন আহত, জুন মাসে ৭২ দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে ৬১ জন ও আহত হয়েছে ১৪৮ জন, জুলাই মাসে ৫৫ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে ৫৬ জন ও আহত হয়েছে ৮৪ জন।

আগস্টে ৬০ দুর্ঘটনায় ২৪ জন নিহত ও ২৪ জন আহত, সেপ্টেম্বরে ৪৫ দুর্ঘটনায় ২৫ জন নিহত ও ৩৫ জন আহত, অক্টোবরে ২৫ দুর্ঘটনায় ২৩ নিহত ও ৪০ জন আহত, নভেম্বরে ২৩ দুর্ঘটনায় ২৬ জন নিহত ও ১২ জন আহত এবং ডিসেম্বরে ১৫ দুর্ঘটনায় ১০ জন নিহত ও ২৮ জন আহত হয়েছেন।

হাইওয়ে পুলিশের (পশ্চিমাঞ্চল) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এনামুল হক বাংলানিউজকে জানান, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর থেকে শুধু রাজশাহী ও রংপুর বিভাগকে নিয়ে হাইওয়ে পুলিশের বগুড়াঞ্চল গঠন করা হয়েছে। যে কারণে পরিসংখ্যানগুলো ৯ মাস ৪ বিভাগ কেন্দ্রিক এবং বাকি ৩ মাস রাজশাহী ও রংপুরসহ দুই বিভাগ কেন্দ্রিক।

দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি জানান, রকম ভেদে ক্রমান্বয়ে আগের চেয়ে সড়ক দুর্ঘটনা কিছুটা কমেছে। আর যেসব স্থানে দুর্ঘটনা বেড়েছে, তারা আইন না মেনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালিয়েছেন। সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে হলে চালককে যেমন শিক্ষত ও সচেতন হতে হবে, তেমনি জনগণের মধ্যেও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে হবে। তাছাড়া মোটরশ্রমিক ইউনিয়নের দৌরাত্ম কমিয়ে অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগে কঠোর হতে পারলে দুর্ঘটনা সহনীয় মাত্রায় চলে আসবে।    

ভুক্তভোগী ও সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, মোটর শ্রমিক ও সংশ্লিষ্ট সংগঠনের দৌরাত্ম কমিয়ে আনা ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের উদাসীনতাসহ দুর্নীতির কারণে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মামলা হলেও তা আপোস করা হয়, অথবা মামলা না করেই  উভয় পক্ষের মধ্যে জোর করে মীমাংসা করা হয়। যে কারণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বা যথাযথ কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত চালক ও ত্রুটিপূর্ণ অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারছে না। ফলে  কোনভাবেই দুর্ঘটনার আশঙ্কা কমছে না।  

প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে নারী, শিশু, চিকিৎসক, শিক্ষার্থী, পুলিশ ও ব্যবসায়ীসহ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছিল ১৩৪ এবং সরকারের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যসহ আহত হয়েছিলেন কমপক্ষে ১২১ জন। একইভাবে ২০১২ সালে বগুড়া ও বৃহত্তর ফরিদপুর জেলাসহ রাজশাহী, রংপুর, বরিশাল ও খুলনা বিভাগের ৩৬ জেলায় বিভিন্নভাবে ৬৮৪ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৫৬৩ জন এবং আহত হয়েছেন ১৩২৭ জন। এরমধ্যে গুরুতর আহত হয়েছেন ৪৪০ জন এবং অপেক্ষাকৃত কম আহত হয়েছেন ৮৮৭ জন। আর এসব দুর্ঘটনায় মামলা হয়েছিল মাত্র ২২১ টি।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০১৩  
সম্পাদনা: জাকারিয়া মন্ডল, আউটপুট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।