ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সালতামামি

সালতামামি-২০২১

ফরিদপুরে আলোচনায় ছিল সড়ক দুর্ঘটনা, সহিংসতা, পেটে কাঁচি রেখে সেলাই

হারুন-অর-রশীদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০২১
ফরিদপুরে আলোচনায় ছিল সড়ক দুর্ঘটনা, সহিংসতা, পেটে কাঁচি রেখে সেলাই

ফরিদপুর: ফরিদপুরের জন্য ২০২১ সাল ছিল একটা ঘটনাবহুল বছর। যে সালে রয়েছে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা, লকডাউন বাস্তবায়নকে কেন্দ্র করে সহিংস তাণ্ডব ও আলোচিত দুই ভাই বরকত-রুবেলসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে দুই হাজার কোটি টাকা পাচার মামলার চার্জশিটসহ এক তরুণীর পেটে কাঁচি রেখে সেলাইয়ের মতো আলোচিত ঘটনা।

 


৩ মার্চ ২০২১

সড়ক দুর্ঘটনায় নগরকান্দা পৌর মেয়রের স্ত্রী, ছেলেসহ নিহত হন ৩ জন
ফরিদপুরের নগরকান্দায় এক ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় নগরকান্দা পৌরসভার নব-নির্বাচিত মেয়র নিমাই চন্দ্র সরকারের স্ত্রী, ছেলেসহ তিনজন সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন ৩ মার্চ রাত সাড়ে ৯টার দিকে। ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের জেলার নগরকান্দা উপজেলার কাইচাইল ইউনিয়নের কালের মোড় নামক এলাকায় এ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে।


২১ মার্চ ২০২১

ফরিদপুরের মধুখালীতে ট্রাকের সঙ্গে মাইক্রোবাসের সংর্ঘষে নিহত ৯


ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার মাঝকান্দি এলাকায় মর্মান্তিক এক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন একই পরিবারের ৬ জনসহ মোট ৯ জন। ২১ মার্চ সকালে এ মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতদের সবার বাড়ি ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ও কাজিরবেড় ইউনিয়নে।

৫ এপ্রিল ২০২১
ফরিদপুরের সালথায় লকডাউনকে কেন্দ্র করে সহিংস তাণ্ডব: 


লকডাউনকে কেন্দ্র করে ফরিদপুরের সালথা উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের ফুকরা বাজারে লকডাউনের কার্যকারিতা পরিদর্শনে যান তৎকালীন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মারুফা সুলতানা খান হিরামণি। এ সময় সহকারী কমিশনারের গাড়ি থেকে নেমে কয়েক ব্যক্তি বাজারে উপস্থিত কয়েকজনকে লাঠিপেটা করে বলে অভিযোগ ওঠে।  

এতে পাশ্ববর্তী নটখোলা গ্রামের মো. জাকির হোসেন মোল্লাসহ কয়েকজন আহত হন। জাকির হোসেনকে আহত করার খবরে সেখানে উপস্থিত জনতা উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। কিছুক্ষণের মধ্যে সেখানে আরও গ্রামবাসী জড়ো হন। খবর পেয়ে সেখানে সালথা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ পৌঁছালে উত্তেজিত জনতা তাদের ওপর হামলা করেন। এতে মিজানুর রহমানের মাথা ফেটে যায়। এরপর বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশের গুলিতে কয়েক জনের মৃত্যু হয়েছে বলে গুজব ছড়িয়ে কয়েক হাজার মানুষ সালথা থানা অভিমুখে রওনা হয়ে থানা ঘেরাও করে। পরে সালথায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবন, উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) অফিস, উপজেলা চেয়ারম্যানের বাসভবন, উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন ও থানায় ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়ে তছনছ করে স্থানীয় উত্তেজিত বিক্ষুব্ধ জনতা। ইউএনও-এসিল্যান্ডের দুটি সরকারি গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এ সময় তিনটি মোটর সাইকেলও ভাঙচুর করা হয়।  

এ ঘটনায় জুবায়ের হোসেন (২০) নামে এক যুবক নিহত হন। পুলিশ-র‌্যাব সদস্যসহ আহত হন অন্তত ৩০ জন।


৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১

২ হাজার কোটি টাকা পাচার: ফরিদপুরের আলোচিত দুই ভাইসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দায়ের

অর্থপাচার মামলায় ফরিদপুরের আলোচিত দুই ভাই সাজ্জাদ হোসেন বরকত এবং ইমতিয়াজ হোসেন রুবেলসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গ্রহণ করে আদালত। (৩০ সেপ্টেম্বর) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কেএম ইমরুল কায়েশের আদালত তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন।

একই সাথে পলাতক থাকার কারণে ছয় আসামি খন্দকার মোহতেসাম হোসেন বাবর, এএইচএম ফুয়াদ, ফাহাদ বিন ওয়াজেদ ওরফে ফাহিম, কামরুল হাসান ডেভিড, মুহাম্মদ আলি মিনার ও তারিকুল ইসলাম ওরফে নাসিমের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।  

তবে, পরে এএইচএম ফুয়াদ, ফাহাদ বিন ওয়াজেদ ওরফে ফাহিমকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বাকিরা পলাতক রয়েছে।  

 এ অভিযোগপত্র দাখিল করেছিলেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সহকারী পুলিশ সুপার উত্তম কুমার বিশ্বাস।

বরকত-রুবেল ছাড়া চার্জশিটভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন- ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম খন্দকার লেভী, আসিফুর রহমান ফারহান, খন্দকার মোহতেসাম হোসেন বাবর, এএইচএম ফুয়াদ, ফাহাদ বিন ওয়াজেদ ওরফে ফাহিম, কামরুল হাসান ডেভিড, মুহাম্মদ আলি মিনার ও তারিকুল ইসলাম ওরফে নাসিম।

২ হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে গত বছরের ২৬ জুন বরকত ও রুবেলের বিরুদ্ধে রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা দায়ের করেন সিআইডির পরিদর্শক এস এম মিরাজ আল মাহমুদ। মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১০ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ফরিদপুরে এলজিইডি, বিআরটিএ, সড়ক বিভাগসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কাজের ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ করে বিপুল অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন বরকত ও রুবেল। এছাড়া মাদক ব্যবসা ও ভূমি দখল করে অবৈধ সম্পদ গড়েছেন তারা। ২৩টি বাস, ট্রাকসহ বিলাসবহুল গাড়ির মালিক হয়েছেন ওই দুই ভাই। উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাচার করেছেন তারা।


১১ ডিসেম্বর ২০২১ 

তরুণীর পেটে কাঁচি রেখেই সেলাই
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এক তরুণীর পেটে অস্ত্রোপচারের সময় কাঁচি রেখেই সেলাই করে ডাক্তার। পরে সেলাইয়ের প্রায় দুই বছর পর  চিকিৎসকের রেখে দেওয়া কাঁচিটি অস্ত্রোপচার করে বের করা হয়। (১১ ডিসেম্বর) বেলা ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত তার অস্ত্রোপচার করা হয়। এতে নেতৃত্ব দেন হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. রতন কুমার সাহা।

ভুক্তভোগী মনিরা খাতুন গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার ঝুটিগ্রামের বাসিন্দা খাইরুল মিয়ার মেয়ে।  

জানা যায়, ২০২০ সালের ৩ মার্চ ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পেটে টিউমার নিয়ে তিনি ভর্তি হন। সাতদিন পর তার অপারেশন করা হয়। এ সময় মনিরার পেটে কাঁচি রেখেই সেলাই করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. রতন কুমার সাহা বলেন, এ বিষয়টি বেশ জটিল ছিল। কারণ কাঁচিটি প্রায় দুই বছর ধরে পেটের ভেতরে থাকায় অপারেশন করারও ঝুঁকি ছিল। এরপরও প্রায় ৩ ঘণ্টা চেষ্টার করে কাঁচিটি বের করতে সক্ষম হই।


বাংলাদেশ সময়: ১০২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০২১
এসআইএস
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।