ঢাকা: দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৩০ জুন ২০১৪ সমাপ্ত অর্থবছরে লেনদেনের শীর্ষে রয়েছে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাত। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে এ খাতের লেনদেন হয়েছে ১৩.৭৫ শতাংশ।
তথ্য পর্যালোচনা করে জানা গেছে, ডিএসইতে ২০১৩-২০১৪ অর্থবছরে মোট লেনদেন হয়েছে ১ লাখ ১২ হাজার ৫৩২ কোটি ৮৯ লাখ ৮৬ হাজার ১৪৫ টাকার শেয়ার। যেখানে শুধুমাত্র বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ১৫০ কোটি ৯ লাখ ৩ হাজার ৭২৩ ভলিয়ম শেয়ার হাতবদল হয়েছে। যার বাজার মূল্য ১৫ হাজার ৪৭৮ কোটি ৪৩ লাখ ৭৫ হাজার ৬৩৭ টাকার শেয়ার। যা মোট লেনদেনের ১৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আবু আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, এক বছরের ব্যবধানে ডিএসই’র লেনদেন অনেক বেড়েছে। বিশেষ করে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের লেনদেন চোখে পড়ার মতো। কারণ, দেশে প্রতিনিয়তই জ্বালানির চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় এ খাতের কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম প্রতিনিয়তই বাড়ছে। তাছাড়া বছর শেষে ভালো লভ্যাংশ ঘোষণা করায় এ খাতের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে পুঁজিবাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে আশা করা যাচ্ছে।
অন্যদিকে, ডিএসইতে ২০১২-২০১৩ অর্থবছরে মোট লেনদেন হয়েছিল ৮৫ হাজার ৭০১ কোটি ২৩ লাখ ১৯ হাজার ৫৮৪ টাকার শেয়ার। যেখানে শুধুমাত্র বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ১৬৫ কোটি ১৯ লাখ ১ হাজার ৫১২ ভলিউম শেয়ার হাতবদল হয়েছিল। যার বাজার মূল্য ছিল ১৩ হাজার ৬১৯ কোটি ৫৮ লাখ ২৮ হাজার ২৯২ টাকার শেয়ার। যা ছিল ওই অর্থবছরের মোট লেনদেনের ১৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ।
ডিএসইতে ২০১৩-২০১৪ অর্থবছরে লেনদেনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্থানে রয়েছে বস্ত্র খাত। আলোচ্য সময়ে এ খাতের মোট ৪৩৩ কোটি ১০ লাখ ৭ হাজার ১৪৬ ভলিয়ম শেয়ার হাতবদল হয়েছে। যার বাজার মূল্য ১৫ হাজার ৪২৭ কোটি ৩৬ লাখ ৮৮ হাজার ৮১ টাকার শেয়ার। যা মোট লেনদেনের ১৩ দশমিক ৭১ শতাংশ।
২০১২-২০১৩ অর্থবছরে এ খাতের ৩৩৬ কোটি ৯৬ লাখ ৫ হাজার ৩৭৬ ভলিয়ম শেয়ার হাতবদল হয়েছিল। যার বাজার মূল্য ছিল ১১ হাজার ৪০৪ কোটি ৮৭ লাখ ৭ হাজার ৮৮০ টাকার শেয়ার। যা ছিল ওই অর্থবছরের মোট লেনদেনের ১৩ দশমিক ৩১ শতাংশ।
লেনদেনে তৃতীয় সর্বোচ্চ স্থানে রয়েছে প্রকৌশল খাত। আলোচ্য সময়ে এ খাতের মোট ১৮০ কোটি ১৬ লাখ ১০ হাজার ২ ভলিউম শেয়ার হাতবদল হয়েছে। যার বাজার মূল্য ১২ হাজার ৯৬৬ কোটি ৪ লাখ ৬০ হাজার ৫৯০ টাকার শেয়ার। যা মোট লেনদেনের ১১ দশমিক ৫২ শতাংশ।
২০১২-২০১৩ অর্থবছরে এ খাতের ৯০ কোটি ৮১ লাখ ৯১ হাজার ৮৪৫ ভলিউম শেয়ার হাতবদল হয়েছিল। যার বাজার মূল্য ছিল ৬ হাজার ৪২৬ কোটি ৪৫ লাখ ৮২ হাজার ৮৭৯ টাকার শেয়ার। যা ছিল ওই অর্থবছরের মোট লেনদেনের ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ।
চতুর্থ সর্বোচ্চ স্থানে রয়েছে ওষুধ খাত। আলোচ্য সময়ে এ খাতের মোট ১৬৩ কোটি ৪২ লাখ ৭ হাজার ২৬৬ ভলিউম শেয়ার হাতবদল হয়েছে। যার বাজার মূল্য ১২ হাজার ২৯১ কোটি ৮ লাখ ২৬ হাজার ৮৩৭ টাকার শেয়ার। যা মোট লেনদেনের ১০ দশমিক ৯২ শতাংশ।
২০১২-২০১৩ অর্থবছরে এ খাতের ১৩১ কোটি ৯৮ লাখ ৩৩ হাজার ৬৫৮ ভলিউম শেয়ার হাতবদল হয়েছিল। যার বাজার মূল্য ছিল ৭ হাজার ১০৩ কোটি ৫০ লাখ ৪৫ হাজার ৬২৪ টাকার শেয়ার। যা ছিল ওই অর্থবছরের মোট লেনদেনের ৮ দশমিক ২৯ শতাংশ।
ডিএসইতে আলোচ্য অর্থবছরে মোট ২০টি খাতের মধ্যে মোট লেনদেনের পর্যায়ক্রমে রয়েছে- ব্যাংক খাতে ৯.৩৫ শতাংশ, ভ্রমণ ও অবকাশ খাতে ৬.৬৬ শতাংশ, সিমেন্ট খাতে ৫.৯৪ শতাংশ, ইন্স্যুরেন্স খাতে ৫. ৭১ শতাংশ, আর্থিক খাতে ৪.৭০ শতাংশ, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে ৪.৪৩ শতাংশ, অন্যান্য খাতে ৩.২২ শতাংশ, মিউচ্যুয়াল ফান্ড ২.৭৭ শতাংশ, টেলিকমিউনিকেশন খাতে ২.৭৫ শতাংশ, ট্যানারি খাতে ১.৬৩ শতাংশ, আইটি খাতে ১.১৯ শতাংশ, সেবা ও আবাসন খাতে ০.৯৩ শতাংশ, সিরামিকস খাতে ০.৬৯ শতাংশ, জুট খাতে ০.০৮ শতাংশ, পেপার ও প্রিন্টিং খাতে ০.০২ শতাংশ এবং বন্ড ০.০২ শতাংশ।
তথ্য পর্যালোচনায় আরও দেখা গেছে, এক বছরের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেন বৃদ্ধি পেয়েছে ২৬ হাজার ৮৩১ কোটি ৬৬ লাখ ৬৬ হাজার ৫৬১ টাকা।
** পরিকল্পনা মন্ত্রীর সঙ্গে ডিএসই প্রতিনিধি দলের সাক্ষাৎ
বাংলাদেশ সময়: ০২০০ ঘণ্টা, জুলাই ০৮, ২০১৪