ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শেয়ারবাজার

শেয়ারবাজারে ওষুধ-প্রকৌশল খাতের আধিপত্য

সাঈদ শিপন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০১৫
শেয়ারবাজারে ওষুধ-প্রকৌশল খাতের আধিপত্য

ঢাকা: শেয়ারবাজারের লেনদেনে ওষুধ ও প্রকৌশল খাতের কোম্পানিগুলো আধিপত্য ধরে রেখেছে। সেপ্টেম্বর মাস শেষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসইএ) মোট লেনদেনে এই দুই খাতের অবদান দাঁড়িয়েছে ৩০ শতাংশের উপরে।


 
এদিকে মুনাফার খবরে আগস্টে ব্যাংক খাতের কোম্পানির শেয়ার লেনদেনে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। দুই গুণ বেড়ে যায় ব্যাংক কোম্পানির শেয়ার লেনদেন। তবে এক মাসের ব্যবধানে সেপ্টেম্বর মাসে আবারও কমেছে এই খাতের কোম্পানির শেয়ারের লেনদেন।
 
সেপ্টেম্বর মাস শেষে খাত ভিত্তিক কোম্পানির লেনদেন নিয়ে ডিএসইর তৈরি করা প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
 
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর মাসে লেনদেনের শীর্ষ স্থান দখল করেছে ওষুধ খাত। মাসটিতে এ খাতের কোম্পানির শেয়ারের লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৩৮৯ কোটি টাকা। যা ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৬ দশমিক ৬০ শতাংশ। আগের মাস আগস্টে এ খাতের অবদান ছিলো ১৫ দশমিক ১৬ শতাংশ।
 
দ্বিতীয় স্থানে থাকা প্রকৌশল খাতের কোম্পানিগুলোর শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ২৬৪ কোটি টাকা। যা মোট লেনদেনের ১৫ দশমিক ১১ শতাংশ। আগস্টে লেনদেনের শীর্ষ স্থানে ছিলো এই খাতটি। সে সময় ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৭ দশমিক ৪১ শতাংশই এ খাতের দখলে ছিলো।
 
এদিকে মুনাফার খবরে আগস্টে দ্বিগুণ বেড়ে যায় ব্যাংক খাতের লেনদেন। ৫১৪ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ব্যাংক খাতের শেয়ার লেনদেন ১ হাজার ২১১ কোটি ছাড়িয়ে যায়।
 
সেপ্টেম্বরে এসে আবার প্রায় অর্ধেকে চলে এসেছে ব্যাংকের শেয়ারের লেনদেন। মাসটিতে ব্যাংকের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৬৭১ কোটি টাকার। যা ডিএসইর মোট লেনদেনের আট দশমিক শূন্য তিন শতাংশ। খাত ভিত্তিক লেনদেনের হিসাবে এ খাতটির অবদান পঞ্চম স্থানে।
 
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক রিসার্চ কর্মকর্তা মো. বখতিয়ার হাসান বলেন, তথ্য পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, এক সময় ব্যাংক খাতের কোম্পানির শেয়ারের দামের ওপরেই শেয়ারবাজারের উত্থান-পতন নির্ভর করতো। লেনদেনে সর্বদায় শীর্ষ থাকতো এই খাতটি।
 
কিন্তু ২০১১ সালের পর থেকেই শেয়ারবাজারে ব্যাংক খাতের অবদান কমেছে। কারণ ২০১০ ও ২০১১ সালে ব্যাংক যে পরিমাণ মুনাফা করেছিলো ও বিনিয়োগকারীদের যে লভ্যাংশ দিয়ে ছিলো তা পরবর্তীতে ধরে রাখতে পারেনি। ফলে ব্যাংক খাতে শেয়ারে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
 
তার মতে, ব্যাংকের শেয়ারে ইতিবাচক প্রভাব দেখা দিলে শেয়ারবাজারেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। আর ব্যাংক খাতের কোম্পানিগুলো ভালো মুনাফা করলে কোম্পানির শেয়ারেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে এটাই স্বাভাবিক।
 
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাক্টাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, শেয়ারবাজারে যে খাতের কোম্পানি ভালো মুনাফা দিতে পারবে, সেই খাতের উপর বিনিয়োগকারীদের আস্থাও বাড়বে। তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো যদি ভালো মুনাফা করে শেয়ারবাজারেও তার ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
 
তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, সেপ্টেম্বরে লেনদেনের ভিত্তিতে তৃতীয় স্থানে রয়েছে জ্বালানি খাত। এই খাতের শেয়ারের মোট লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৮ কোটি টাকা। যা মোট লেনদেনের ১২ দশমিক শূন্য পাঁচ শতাংশ। আগস্টে মোট লেনদেনে এ খাতের অবদান ছিলো ১৬ দশমিক ৬৫ শতাংশ।
 
ডিএসইর ২০টি খাতের মধ্যে বাকি ১৭টি খাতের প্রতিটির এককভাবে অবদান ১০ শতাংশের নীচে। এর মধ্যে ৫ শতাংশের উপরে আছে ৪টি খাত।
 
সেপ্টেম্বরে মোট লেনদেনে নয় দশমিক ২৬ শতাংশ অবদান রেখে চতুর্থ স্থানে রয়েছে বস্ত্র খাত। এ খাতের শেয়ারের লেনদেন হয়েছে ৭৭৫ কোটি টাকার। আগস্টে মোট লেনদেনে এ খাতটির অবদান ছিলো ১১ দশমিক ১০ শতাংশ।
 
পাঁচ শতাংশের উপরে অবদান রাখা অন্য খাতগুলোর মধ্যে বিবিধ খাতের অবদান আট দশমিক ৫৬ শতাংশ। খাদ্য খাতের অবদান পাঁচ দশমিক শূন্য ছয় শতাংশ।
 
বাকি খাতগুলোর মধ্যে দুই শতাংশের উপরে অবদান আছে পাঁচটির। এরমধ্যে আর্থিক খাতের অবদান চার দশমিক ৭৮ শতাংশ। সিমেন্ট খাতের চার দশমিক ২৬ শতাংশ, সেবা ও আবাসন খাতের তিন দশমিক ৩৭ শতাংশ, টেলিযোগাযোগের দুই দশমিক ৫৫ ও ভ্রমণ খাতের দুই দশমিক ৪৪ শতাংশ অবদান রয়েছে।
 
বাকি সবকটি খাতের অবদান ১ শতাংশের ঘরে। এরমধ্যে মিউচ্যুয়াল ফান্ড এক দশমিক ৮৭ শতাংশ, চামড়া এক দশমিক ৭৭ শতাংশ, বিমা এক দশমিক ৫৯ শতাংশ, সিরামিক এক দশমিক ৫১ শতাংশ, কাগজ ও মুদ্রণ দশমিক ৪৮ শতাংশ, আইটি দশমিক ৫৬ শতাংশ ও পাটের দশমিক ১৫ শতাংশ।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৮৩২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০১৫
এএসএস/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।