ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শেয়ারবাজার

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের বিশেষ শিক্ষা পাচ্ছেন আট পেশার মানুষ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৩৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০১৭
পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের বিশেষ শিক্ষা পাচ্ছেন আট পেশার মানুষ

ঢাকা: পুঁজিবাজার ও বাজারে বিনিয়োগে ঝুঁকি জানানোর পাশাপাশি সচেতনতার মাধ্যমে কারসাজি চক্রের কবল থেকে বিনিয়োগকারীদের বাঁচাতে উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির বিশেষ এ উদ্যোগটি হলো ‘ফিন্যান্সিয়াল লিটারেসি কার্যক্রম’।

এ কার্যক্রমের মাধ্যমে চলতি বছর প্রাথমিকভাবে (স্বল্প মেয়াদে) পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ব্যক্তি, প্রশিক্ষক, বিচারক, পুলিশ এবং আইনজীবীসহ মোট আট পেশার মানুষকে ‘বিনিয়োগ শিক্ষা’ দেওয়া হবে।

আট শ্রেণীর বাকি পেশাগুলো হচ্ছে- সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা, সাংবাদিক ও শিক্ষক।

গত ৮ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশেষ এ উদ্যোগের উদ্বোধন করেন।

বিএসইসি’র তথ্যমতে, এখন বাজারে ৩০ লাখ বিনিয়োগকারী রয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই ক্ষুদ্র পুঁজির বিনিয়োগকারী ও অশিক্ষিত। তারা কোম্পানির আর্থিক বিবরণী ও অনান্য প্রাপ্ত তথ্যাদি সঠিকভাবে বিশ্লেষণ করতে পারেন না। ফলে গুজব, ধারণা ও আবেগের ভিত্তিতে বিনিয়োগ করেন।

বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বড় বিনিয়োগকারীদেরও অনুসরণ করেন তারা। এতে বাজারে তথ্যের অসামঞ্জস্যতা ও কারসাজি বাড়ে। বাজারে ভুল বিনিয়োগ হয়। চালাক বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করে লাভ নিয়ে বাজার ছাড়েন।

আর এ অবস্থায় ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা অতি লোভের আশায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন।

অন্যদিকে তাদের কার্যক্রমে পুঁজিবাজার তথা দেশের অর্থনীতি অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে। তাই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বিনিয়োগের আগে অবশ্যই কোম্পানির আর্থিক অবস্থা যাচাইয়ের আহবান জানান।

তিনি বিনিয়োগকারীদের ‘হুজুগে বিনিয়োগ করে পরবর্তীতে লোকসান গুণবেন আর সরকার ও অর্থমন্ত্রীকে দোষারোপ করবেন, এটা হবে না’ বলেও সাবধান করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘হুজুগে বিনিয়োগ না করে কোম্পানির ভিত দেখে বিনিয়োগ করুন। এজন্য ফিন্যান্সিয়াল লিটারেসির কার্যক্রম থেকে শিক্ষা নিয়ে সঠিকভাবে বিনিয়োগ করবেন। এতে বিনিয়োগকারীরা অনেক উপকৃত হবেন। পাশাপাশি বিনিয়োগের সঠিক জ্ঞান অর্জনের  মাধ্যমে পুঁজিবাজার আরো গতিশীল হবে’।
সূত্র জানায়, স্বল্পমেয়াদী পরিকল্পনা সম্পন্ন হওয়ার পর মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে। ১০ বছর মেয়াদী মহাপরিকল্পনা অনুসারে ২০১৮ ও ২০১৯ সালে স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবী, এনজিও কর্মকর্তা-কর্মচারী, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার এবং অন্যান্য পেশার মানুষসহ মধ্যম আয়ের জনগণকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

এরপর দীর্ঘমেয়াদের আওতায় ২০২০-২০২১ সালে দেশের সকল গৃহিণী, অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তি, ব্যবসায়ী, কৃষক-শ্রমিক এবং সাধারণ মানুষ প্রশিক্ষণ পাবেন।
বিএসইসি’র পাশাপাশি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই), ডিএসই ব্রেকার্স অ্যাসোসিয়েশন (ডিবিএ), মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ) এ উদ্যোগে অংশ নিচ্ছে।
এর মধ্যে স্টক এক্সচেঞ্জগুলো ডিপোজিটোরি, ক্লিয়ারিং কোম্পানি ও সংশ্লিষ্ট অন্য সকল প্রতিষ্ঠানকে কর্মসূচি পালন করতে উৎসাহিত করবে। আইসিএবি, আইসিএমএবি ও আইসিএসবি পেশাজীবী, বিআইসিএম ও বিআইবিএম বিজনেস স্কুলে র্কোসের মাধ্যমে যথাযথ বিনিয়োগ শিক্ষা দিতে সচেষ্ট ভূমিকা পালন করবে।

বিএসইসি’র নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সাইফুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ সম্পর্কে অবগত ও শিক্ষিত করতে আমাদের এ উদ্যোগ। যতোক্ষণ পর্যন্ত বিনিয়োগকারীরা আর্থিক বাজার ও বিভিন্ন পণ্যের চরিত্র ও গতিবিধি সম্পর্কে অবগত না হচ্ছেন এবং নিজেদেরকে আর্থিক ক্ষতি থেকে রক্ষা করার উপায় না বুঝতে পারছেন, ততোক্ষণ পর্যন্ত সমাজের সার্বিক উন্নয়ন আশা করা যায় না। তাই অর্থনীতির উন্নয়ন ও এর স্থিতিশীলতার লক্ষ্যে মানুষকে বিনিয়োগ শিক্ষায় শিক্ষিত করার এ উদ্যোগ’।
তিনি বলেন, ‘সঠিক বিনিয়োগ শিক্ষার ফলে প্রশিক্ষিতরা আর্থিক জালিয়াতি থেকে রক্ষা পাওয়া এবং সুরক্ষিত আর্থিক ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার দ্বৈত সুবিধা পাবেন। বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগের বিভিন্ন পণ্যের উপযুক্ততা সম্পর্কে প্রয়োজনীয় জ্ঞান অর্জন করতে পারবেন। যা তাদের সঠিক বিনিয়োগে সহায়তা করবে’।

বাংলাদেশ সময়: ১১১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০১৭
এমএফআই/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।