ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শেয়ারবাজার

ডিএসইর কৌশলগত অংশীদার বাছাইয়ে হস্তক্ষেপে টিআইবির উদ্বেগ

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৮
ডিএসইর কৌশলগত অংশীদার বাছাইয়ে হস্তক্ষেপে টিআইবির উদ্বেগ ডিএসই ও টিআইবির লোগো

ঢাকা: দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) কৌশলগত মালিকানার বিদেশি অংশীদার বাছাই প্রক্রিয়ায় একটি বিদেশি প্রতিষ্ঠানের প্রভাব প্রয়োগ ও এই প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ভূমিকার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুর্নীতিবিরোধী বেসরকারি সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এক বিবৃতিতে এ নিন্দা জানান।

বিবৃতিতে বলা হয়, ডিএসই’র কৌশলগত মালিকানার বিদেশি অংশীদার বাছাই প্রক্রিয়ায় ভারতীয় দরদাতা প্রতিষ্ঠানের অবৈধ প্রভাব প্রয়োগ ও তার প্রেক্ষিতে ডিএসই’র ওপর নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান বিএসইসি’র অনৈতিক হস্তক্ষেপ ও চাপ সৃষ্টি করার প্রচেষ্টার তীব্র নিন্দা করছে টিআইবি।

একইসঙ্গে বাছাই প্রক্রিয়ায় শীর্ষস্থানপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানকে বাছাই করা ও অবৈধ চাপ সৃষ্টিকারী দরদাতাকে কালো তালিকাভুক্ত করার আহ্বানও করা হচ্ছে। পাশাপাশি বিএসইসিতে এ ধরনের হীন প্রচেষ্টার সঙ্গে জড়িতদের জবাবদিহি নিশ্চিতের আহ্বান জানাচ্ছে টিআইবি।

ড. ইফতেখারুজ্জামান বিবৃতিতে বলেন, শেয়ারবাজারের উন্নয়নকল্পে গৃহীত পরিকল্পনা বাস্তবায়নে পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ডিএসই’র উন্নয়নকল্পে আধুনিক যন্ত্রপাতি, কারিগরী দক্ষতা ও উৎর্ষতা অর্জনে অভিজ্ঞ ও দক্ষ কৌশলগত বিদেশি অংশীদার বাছাই প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রণকারী হিসেবে বিএসইসি’র অনৈতিক প্রভাব সৃষ্টির প্রচেষ্টা দুঃখজনক ও অনাকাঙ্খিত। রক্ষক হয়ে বিএসইসি ভক্ষকের ভূমিকা পালন করতে পারে না; তাও দরদাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগসাজশে বা প্রভাবান্বিত হয়ে।
 
তিনি বলেন, দর প্রস্তাব মূল্যায়নে প্রায় অর্ধেক পিছিয়ে থাকা প্রতিষ্ঠানের পক্ষে নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানের এ ধরনের তদবির ও চাপ প্রয়োগ যেমন নজিরবিহীন ও আইনবিরুদ্ধ, বিএসইসি কর্তৃক তাতে প্রভাবিত হয়ে বাছাই প্রক্রিয়াকে কলুষিত করে অযোগ্য প্রতিষ্ঠান নির্বাচনে ইন্ধন যোগানো তেমনই বেআইনি ও অগ্রহণযোগ্য।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ২০১০ সালে শেয়ারবাজার ধসের পর গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে স্টক এক্সচেঞ্জের ডিমিউচুয়ালাইজেশনের উদ্যোগের ধারাবাহিকতায় কৌশলগত মালিকানার বিদেশি অংশীদার বাছাইকরণ প্রক্রিয়ায় দর প্রস্তাবের নিয়ম অনুযায়ী স্বচ্ছতা ও শুদ্ধতার ভিত্তিতে নির্বাচিত সর্বোচ্চ দরদাতা, সবচেয়ে যোগ্য ও সুখ্যাতিসম্পন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছেই শেয়ার বিক্রি করা হবে, যা স্বাভাবিক, প্রথাগত ও আইনসিদ্ধ।

‘সর্বোচ্চ দরদাতাকে বাছাই না করে উপযুক্ত কারণ ছাড়া দ্বিতীয় দরদাতাকে বাছাই করা হলে তা হবে আইনের ব্যত্যয়, যা পুরো প্রক্রিয়াকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করবে। আইন অনুযায়ী ডিএসই’র জন্য শুভ ও লাভজনক হবে এমন সর্বোচ্চ দরদাতা, যোগ্য ও সুখ্যাতিসম্পন্ন কৌশলগত মালিকানার বিদেশি অংশীদার নির্বাচনে ডিএসই’কে আইন অনুযায়ী চলতে দেওয়ার পরিবেশ সৃষ্টির দিকে সরকারেরও সচেষ্ট হওয়া উচিৎ। ’

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দর যাচাই শেষে আইন অনুযায়ী ডিএসই বোর্ড কর্তৃক বাছাইকৃত বিজয়ী পক্ষকে নির্বাচিত করে অনুমোদনের চিঠি বিএসইসি’কে না পাঠানোর মৌখিক নির্দেশনায় ডিএসই’র শেয়ারধারীসহ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মাঝে এক ধরনের অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে।

‘টিআইবি মনে করে, এ ধরনের ঘটনা সাম্প্রতিক অতীতে শেয়ারবাজারের অস্বাভাবিক আচরণ ও ধস এর ধারাবাহিকতা রোধে নেওয়া উদ্যোগ ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নে নেতিবাচক বার্তা পৌঁছাবে। বাজার কারসাজি, যোগসাজশ ও কৃত্রিম হস্তক্ষেপের মাধ্যমে যে গোষ্ঠী বারবার বিনিয়োগকারীদের সর্বস্বান্ত করেছে, সে চক্র এ ধরনের অশুভ পাঁয়তারায় লিপ্ত কি-না তা খতিয়ে দেখার আহ্বান জানাচ্ছে টিআইবি। ’

পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানসমূহকে যেন কোনো প্রকার চাপের কাছে নতি স্বীকার করতে না হয় ও ভয়-ভীতির ঊর্ধ্বে উঠে দায়িত্ব পালন করতে পারে, সে পরিবেশ নিশ্চিতে সরকারের রাজনৈতিক অঙ্গীকার ও সৎসাহস থাকার ওপর বিবৃতিতে গুরুত্বারোপ করে টিআইবি।  

বাংলাদেশ সময়: ২১১৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৮
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।