একই অবস্থায় লেনদেন হয়েছে দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। এর ফলে ঈদের পরবর্তী টানা তিন সপ্তাহে দেশের পুঁজিবাজারে লেনদেন বেড়েছে।
এদিকে টানা তিন সপ্তাহ লেনদেন ও সূচক বৃদ্ধির পর বিদায়ী সপ্তাহে সূচকের পাশাপাশি কমেছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। এ কারণে বিদায়ী সপ্তাহে উভয় বাজার মূলধন অর্থাৎ বিনিয়োগকারীদের পুঁজি কমেছে ৬ হাজার ২৫৫ কোটি টাকার বেশি।
এর মধ্যে ডিএসইতে মূলধন কমেছে ৩ হাজার ৩২৬ কোটি ৫৬ লাখ ৪৯ হাজার ৭৯২ টাকা। আর সিএসইতে কমেছে ২ হাজার ৯২৯ কোটি টাকা। তবে এর আগের সপ্তাহে মূলধন বেড়েছিলো ৪৯০ কোটি টাকা ও তার আগের সপ্তাহে বেড়েছিলো ৮ হাজার ২৩১ কোটি টাকার বেশি।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বিদায়ী মাসের শেষ সপ্তাহে ব্যাংক, বিমা, আর্থিক খাত, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, প্রকৌশল এবং ওষুধ ও রসায়ন খাতের শেয়ারের দাম কমেছে। এর ফলে বিনিয়োগকারীদের পুঁজি কমেছে।
তবে বিনিয়োগকারী ও বাজার সংশ্লিষ্টদের আশা ছিলো সূচকের উত্থানের মধ্যে দিয়ে গত সপ্তাহে লেনদেন হবে। কারণ বিদায়ী সপ্তাহে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী পুঁজিবাজার উন্নয়নের সাত দফা সুপারিশ ঘোষণা করেছেন।
পাশাপাশি অর্থমন্ত্রী চীনা কনসোর্টিয়ামের কাছে ডিএসইর কৌশলগত বিনিয়োগকারীর শেয়ার বিক্রির অর্থের ওপর ১০ শতাংশ কর ছাড়ের ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্তু এসব ঘোষণার দিন থেকে উল্টো দরপতন হয়েছে।
ডিএসই’র তথ্যমতে, বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৪ হাজার ৫০৬ কোটি ৩১ লাখ ৪৪ হাজার ৬৩৯ টাকা। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিলো ৩ হাজার ৫৩ কোটি ৮৭ লাখ ৬৯ হাজার ৫৬৬ টাকা। যা আগের সপ্তাহের তুলনায় ১ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা বেশি। শতাংশের হিসেবে ৪৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ বেশি। বিদায়ী সপ্তাহে মোট লেনদেনের মধ্যে ‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ারের লেনদেন হয়েছে ৯৩ শতাংশ।
তিন সূচকে পথচলা ডিএসই’র প্রধান সূচক ডিএসইএক্স গত সপ্তাহে ৭৩ দশমিক ৬৩ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৫০০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। প্রধান সূচকের পাশাপাশি ডিএসই-৩০ সূচক আগের সপ্তাহের চেয়ে ৩৮ দশমিক ৬৫ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৯১৯ পয়েন্ট এবং ডিএসইএস শরিয়াহ সূচক ৭ দশমিক ২৯ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২৭১ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ১০৭টির, কমেছে ২২৩টির আর অপরিবর্তিত ছিল ১০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছিল ১০৮টির, কমেছে ২১৬টির আর অপরিবর্তিত ছিল ১৫টি কোম্পানির শেয়ারের দর।
গত সপ্তাহে ডিএসইতে বিনিয়োগকারীদের বাজার মূলধন ৩ হাজার ৩২৬ কোটি ৫৬ লাখ ৪৯ হাজার ৭৯২ টাকা কমে দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৩০ কোটি ৭২ লাখ ৫৫ হাজার ৪২১ টাকায়। যা শতাংশের হিসেবে আগের সপ্তাহের চেয়ে দশমিক ৮৪ শতাংশ কম।
দেশের অপর পুঁজিবাজার সিএসইতে সার্বিক সূচক ১৬ পয়েন্ট কমে ১০ হাজার ৪২৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। গত সপ্তাহে এ বাজারে লেনদেন হয়েছে ২২৮ কোটি ৮২ লাখ ৩৩ হাজার টাকা। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিলো ১২৪ কোটি ৮৯ লাখ ৯৯ হাজার টাকা।
এ বাজারে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ৯৪টির, কমেছে ১৭৪টির আর অপরিবর্তিত ছিল ১৪টি কোম্পানির। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন বেড়েছিল ৯৭টির, কমেছে ১৭০টির আর অপরিবর্তিত ছিল ১৩টি শেয়ারের দাম।
বিদায়ী সপ্তাহে সিএসইতে বিনিয়োগকারীদের মূলধন ২ হাজার ৯২৯ কোটি ১৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা কমে দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ২৪ হাজার ৮৫৩ কোটি ৪৬ লাখ ১ হাজার টাকায়।
বাংলাদেশ সময়: ১১০৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০১৮
এমএফআই/জেডএস