ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শেয়ারবাজার

চীন থেকে ফল আমদানি নিরুৎসাহিত করছে সরকার

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৩৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২০
চীন থেকে ফল আমদানি নিরুৎসাহিত করছে সরকার

ঢাকা: চীনে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস ছড়ানোর পর দেশটি থেকে ফল আমদানি করতে ব্যবসায়ীদের নিরুৎসাহিত করেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক।

মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে ফল আমদানিকারকদের সঙ্গে আলোচনা সভায় ব্যবসায়ীদের নিরুৎসাহিত করেন তিনি।

চীনের করোনাভাইরাস পরিস্থিতি উন্নতি না হলে রোজার সময় ফল সরবরাহে প্রভাব পড়বে কি-না- প্রশ্নে কৃষিমন্ত্রী বলেন, রোজার সময় আমরা মূলত খেজুর খেয়ে থাকি।

এছাড়া সে সময় অনেক গরম থাকবে। গরম পড়লে করোনাভাইরাসের প্রার্দুভাব কমে যায় বলে বিজ্ঞানীরা বলছেন।

তিনি বলেন, আমদানিকারকদের অনুরোধ করব, চায়না থেকে এ মুহূর্তে ফল আমদানিতে ডিসকারেজ করব, আমরা এটা নিরুৎসাহিত করব; যদিও ফলের মাধ্যমে এ ভাইরাস আসে না।

নতুন করোনাভাইরাসে চীনে এ পর্যন্ত এক হাজার ৮৬৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া আক্রান্ত সংখ্যা ৭২ হাজার ৪৩৬ জন বলে জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য সংস্থা।

সভায় কৃষিসচিব মো. নাসিরুজ্জামান বলেন, এই ভাইরাসটা হিউম্যান হোস্ট ছাড়া অন্য মশলা বা ফলের মাধ্যমে ছড়ায়- এরকম কোনো নিউজ আন্তর্জাতিক বা দেশীয় গণমাধ্যমে আসেনি। চায়না নিউ ইয়ারের পর যে সমস্ত আমদানি শুরু হওয়ার কথা, তা আসেনি। আমরা মনে করি না, ফল বা মসলার মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে।

ফ্রেস ফ্রুট ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি সেলিমুল হক ইসা বলেন, চীনে নববর্ষের ছুটি চলছিল ২০ জানুয়ারি থেকে ১ ফেব্র্রয়ারি পর্যন্ত। এর আগে যেগুলো এলসি, সেগুলো আসছে, বাকিগুলো তারা বন্ধ করে রেখেছে। ওরাও লেবার পাচ্ছে না এক্সপোর্ট করার জন্য। এজন্য সে ফল আসবে না।

তিনি বলেন, রোজার মধ্যে সমস্যা হবে না। কারণ আমরা মালদ্বীপ, চিলি, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ফল আমদানি শুরু করেছি।

ফল আমদানিকারকদের সঙ্গে আলোচনায় কৃষিমন্ত্রী বলেন, ফল আমদানি কমিয়ে রপ্তানি কীভাবে বৃদ্ধি করা যায়, সেজন্য এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।

ফ্রেস ফ্রুট ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, দেশের মানুষের ফল খাওয়ার প্রবণতা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে এবং উৎপাদনও বৃদ্ধি পেয়েছে। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ফল দেশের মোট চাহিদার মাত্র ৩৫ ভাগ পূরণ করে। যা দুই বছর আগেও  ছিল ২৮ ভাগ। বাকিটা আমদানির মাধ্যমে পূরণ হয়। এজন্য আমদানি করা ফলের চাহিদা বেশি। দেশে সারাবছর বিদেশি ফলের চাহিদা রয়েছে।

তিনি বলেন, দেশে প্রচুর পরিমাণে ফল উৎপাদন হচ্ছে। আম, তরমুজ প্রচুর পরিমাণে উৎপাদন হলেও আমদানি হচ্ছে। এসব আমদানি বন্ধ করা উচিত।

কলা, আনারস, লিচুর বাজার ধরতে সরকারকে প্রোসেসিং ইন্ডাস্ট্রি এবং আন্তর্জাতিক বাজার ধরতে প্রক্রিয়াজাত কারখানা স্থাপনে করতে সহযোগিতা করা দরকার বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

আমদানিকারকদের এ দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ফল রপ্তানির জন্য প্রক্রিয়াজাত ও প্যাকেজিং কারখানা করার জন্য ব্যবসায়ীদের সহযোগিতার আশ্বাস দেন কৃষিমন্ত্রী।

ফল আমদানিতে ১০২ শতাংশ রেভিনিউ শেয়ার করা হয়ে থাকে, আমদানি বন্ধ রাখা হলে সরকারের রাজস্বে প্রভাব ফেলবে কি-না- এ বিষয়টি চিন্তা করার আহ্বান জানান আমদানিকারকরা।

কৃষিসচিব নাসিরুজ্জামান বলেন, আমরা আইপিও দেওয়াটা নিরুৎসাহিত করতে বলেছি। আইপিও নিয়েন না, আমরা দেব না, তা বলছি না।

নাসিরুজ্জামান বলেন, বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয় কলা। এজন্য আমাদের রপ্তানি উপযোগী জাত উদ্ভাবন করে এর উৎপাদন বৃদ্ধি ও রপ্তানি করতে হবে। টিস্যূ কালচারের মাধ্যমে উন্নত কলার জাত উদ্ভাবন করতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২০
এমআইএইচ/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।