ঢাকা: বিদায়ী সপ্তাহে (০৪-০৮এপ্রিল) পুঁজিবাজারে সূচক কমলেও বেড়েছে লেনদেন। বিদায়ী সপ্তাহে পুঁজিবাজারে ৪৬২ কোটি টাকার লেনদেন বেড়েছে।
ডিএসই ও সিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এদিকে পুঁজিবাজারে প্রধান প্রধান সূচক কমলেও লকডাউনে বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
তাদের মতে, সর্বাত্মক লকডাউনে ব্যাংক খোলা থাকলে পুঁজিবাজারও খোলা থাকবে। তাই আতঙ্কিত না হয়ে বুঝেশুনে বিনিয়োগ করলে লাভবান হবেন বিনিয়োগকারীরা।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক বাংলানিউজকে বলেন, সর্বাত্মক লকডাউনে ব্যাংক খোলা থাকলে পুঁজিবাজারও খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। কমিশনের এমন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। তাই আতঙ্কিত না হয়ে বাজার যেহেতু খোলা থাকছে এবং ৬৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমাটাও কমিশন ঠিক করে দিয়েছেন। এছাড়া বাজারে তারল্য সংকট নেই। সুতরাং বুঝেশুনে বিনিয়োগ করতে বিনিয়োগকারীরা লাভ করবেন বলে তিনি জানান।
ব্যাংক খোলা থাকলে পুঁজিবাজার খোলা থাকবে। এজন্য বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, লকডাউনে ব্যাংক খোলা থাকলে পুঁজিবাজার খোলা থাকবে। সূচক বাড়া বা কমা এটি স্বাভাবিক ঘটনা। সূচক কমে গেছে বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ জানান তিনি।
অপরদিকে বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ২ হাজার ৩২৪ কোটি ৬৩ লাখ ৫৩ হাজার ২৯ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের সপ্তাহ থেকে ২৯৫ কোটি ৮১ লাখ ৬২ হাজার ৬৮৫ টাকা বা ১৪.৫৮ শতাংশ বেশি হয়েছে। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ২৮ কোটি ৮১ লাখ ৯০ হাজার ৩৪৪ টাকার।
ডিএসইতে বিদায়ী সপ্তাহে গড় লেনদেন হয়েছে ৪৬৪ কোটি ৯২ লাখ ৭০ হাজার ৬০৬ টাকার। আগের সপ্তাহে গড় লেনদেন হয়েছিল ৫০৭ কোটি ২০ লাখ ৪৭ হাজার ৫৮৬ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে গড় লেনদেন ৪২ কোটি ২৭ লাখ ৭৬ হাজার ৯৮০ টাকা কম হয়েছে।
সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ দশমিক ৭৬ পয়েন্ট বা ০ দশমিক ৩০ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ২৫৪ দশমিক ৭৮ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ৪ দশমিক ৮৮ পয়েন্ট বা ০ দশমিক ৪১ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৯৭ দশমিক ৬৬ পয়েন্টে। আর ডিএসই-৩০ সূচক ৭ দশমিক ৯ পয়েন্ট বা ০ দশমিক ৩৬ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়ে ১৯৯০ দশমিক ৩৯ পয়েন্টে।
গত সপ্তাহে লেনদেন শুরুর আগে ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৪ লাখ ৫৮ হাজার ৬৮০ কোটি ৫০ লাখ ২৮ হাজার টাকা। আর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস লেনদেন শেষে বাজার মূলধন দাঁড়ায় ৪ লাখ ৫৯ হাজার ২৩৯ কোটি ৯৮ লাখ ৫৯ হাজার টাকায়। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বিনিয়োগকারীরা ৫৫৯ কোটি ৪৮ লাখ ৩১ হাজার টাকা বাজার মূলধন ফিরে পেয়েছে।
বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৬৭টি প্রতিষ্ঠান শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ১০৮টির, কমেছে ২০৫টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৫৪টির শেয়ার ও ইউনিট দর।
গত সপ্তাহে ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া ১০ কোম্পানির মধ্যে রয়েছে- বেক্সিমকো, রবি, এশিয়া প্যাসিফিক জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, প্রভাতী ইন্স্যুরেন্স, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, লাফার্জহোলসিম, সামিট পাওয়ার, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো এবং দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে ২৯৭ কোটি ৫৫ লাখ ৬১ হাজার ৯২ টাকার। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ১৩১ কোটি ৩৬ লাখ ৯৪ হাজার ৫১১ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহ ব্যবধানে সিএসইতে লেনদেন ১৬৬ কোটি ১৮ লাখ ৬৬ হাজার ৫৮১ টাকা বা ১২৬ শতাংশ বেড়েছে।
সপ্তাহটিতে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২৫ দশমিক ৩৬ পয়েন্ট বা ০ দশমিক ১৬ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ২৩১ দশমিক ৫ পয়েন্টে।
সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে ২৮৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৯১টির দর বেড়েছে, ১৪৭টির কমেছে এবং ৪৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০২১
এসএমএকে/এএটি