ঢাকা: বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরায় ইতিবাচক রয়েছে দেশের পুঁজিবাজার। বিদায়ী সপ্তাহে (২৬-৩০ সেপ্টেম্বর) দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচক বেড়েছে।
এর আগের দুই সপ্তাহে (১২-২৩ সেপ্টেম্বর) লেনদেন কমে আসায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা অস্বস্তি দেখা দেয়। কিন্তু বিদায়ী সপ্তাহে লেনদেন বাড়ায় বিনিয়োগকারীরা স্বস্তিতে রয়েছেন বলে মনে করছেন বাজারসংশ্লিষ্টরা। তবে লেনদেন বাড়ার বিষয়টি স্বাভাবিক হিসেবেই দেখছেন তারা। ডিএসই ও সিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এদিকে পুঁজিবাজারে সূচক ও লেনদেন বেড়ে যাওয়ায় সেটি সংশোধনের প্রয়োজন ছিল। সে অনুযায়ী বাজারে সূচক ও লেনদেন কমেছে। ফলে এখানে শেয়ার বিক্রির চাপ বা বড় ধরনের সংশোধনের পর লেনদেন বেড়েছে, তা নয়। বরং এ অবস্থা থেকেও আরও ভালো অবস্থায় যাওয়ার সুযোগ রয়েছে বলে মনে করছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক বাংলানিউজকে বলেন, টানা কয়েক সপ্তাহ উত্থানের পর গত দুই সপ্তাহ মূল্য সংশোধন হয়েছে। এরপর বিদায়ী সপ্তাহে আবার উত্থান স্বাভাবিক ঘটনা। এতে করে বিনিয়োগকারীরা স্বস্তিতে রয়েছেন।
অপরদিকে বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে ১১ হাজার ১৪৫ কোটি ৬৭ লাখ ৪৭ হাজার ৩৩৪ টাকার লেনদেন হয়েছে। আর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৯ হাজার ৭০৯ কোটি ৪৯ লাখ ২৮ হাজার ৮১১ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেন এক হাজার ৪৩৬ কোটি ১৮ লাখ ১৮ হাজার ৫২৩ টাকা বা ১৫ শতাংশ বেড়েছে।
সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৭৮.৪৪ পয়েন্ট বা ১.০৮ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে সাত হাজার ৩২৯.০৪ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ১১.০৪ পয়েন্ট বা ০.৯০ শতাংশ এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৩৬.৯৭ পয়েন্ট বা ১.৩৮ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে এক হাজার ৫৯২.১০ পয়েন্টে এবং দুই হাজার ৭১০.৫৩ পয়েন্টে।
সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে লেনদেন শুরুর আগে ডিএসইতে বাজার মূলধন ছিল পাঁচ লাখ ৭৭ হাজার ৩৬ কোটি ৫৮ লাখ ২৮ হাজার টাকা। আর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে লেনদেন শেষে বাজার মূলধন দাঁড়ায় পাঁচ লাখ ৮১ হাজার ৫৪৩ কোটি ১২ লাখ ২৯ হাজার টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বিনিয়োগকারীদের চার হাজার ৫০৬ কোটি ৫৪ লাখ ১ হাজার টাকা বা শূন্য দশমিক ৭৮ শতাংশ বাজার মূলধন বেড়েছে।
বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৭৮টি প্রতিষ্ঠান শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ১৪৬টির, কমেছে ২২১টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১১টির শেয়ার ও ইউনিট দর।
গত সপ্তাহের শুরুতে ডিএসইর পিই ছিল ২০.৭১ পয়েন্টে। যা সপ্তাহ শেষে ২০.১১ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে পিই অনুপাত শূন্য দশমিক ৬০ পয়েন্ট বা দুই দশমিক ৯০ শতাংশ কমেছে।
বিদায়ী সপ্তাহে লেনদেনের শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- লাফার্জহোলসিম, অরিয়ন ফার্মা, বেক্সিমকো লিমিটেড, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, শাহাজিবাজার পাওয়ার, সাইফ পাওয়ার টেক, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, জিপিএইচ ইস্পাত, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স এবং বিবিএস কেবলস।
অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে ৪৫৫ কোটি ৯৭ লাখ ৫০ হাজার ৯৩৭ টাকা। আর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৩২৫ কোটি ৮০ লাখ ৪০৭ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে লেনদেন ১৩০ কোটি ১৭ লাখ ৫০ হাজার ৫৩০ টাকা বা ৪০ শতাংশ বেড়েছে।
সপ্তাহটিতে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২৩১.০১ পয়েন্ট বা ১.০৯ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১ হাজার ৩৭৭.০৭ পয়েন্টে।
সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে ৩৪৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১৪৭টির দর বেড়েছে, ১৮৬টির কমেছে এবং ১২টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ০২, ২০২১
এসএমএকে/এনএসআর