ঢাকা: আগের সপ্তাহের মতো বিদায়ী সপ্তাহেও (২২-২৭ মে) সূচকের পতন হয়েছে পুঁজিবাজারে। সূচকের সঙ্গে বিদায়ী সপ্তাহে লেনদেনও কমেছে ২১৪ কোটি টাকা।
এদিকে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নানা পদক্ষেপে বড় পতন থেকে রক্ষা পেয়েছে দেশের পুঁজিবাজার। একই সঙ্গে বাজার ঘুরে দাঁড়াবার প্রত্যাশাও করছেন সংশ্লিষ্টরা।
তাদের মতে, নানা কারণে টানা ৮ কার্যদিবস পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়। এতে অনেকটাই দিশেহারা হয়ে পড়েন বিনিয়োগকারীরা। তাদের মধ্যে কিছুটা আস্থা সংকটও দেখা দেয়। এরই মধ্যে টানা দরপতনের অস্থিরতা রোধে মার্জিন ঋণের সুবিধা বাড়ানো, প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিও) কোটা সুবিধা নিতে যোগ্য বিনিয়োগকারীদেরকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজে ৩ কোটি টাকার বিনিয়োগ থাকা, ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য গঠিত সহায়তা তহবিলের মেয়াদ ও আকার বাড়ানো এবং তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর সিকিউরিটিজ দর কমার সর্বোচ্চ সীমা ২% করার ঘোষণা দেয় বিএসইসি।
নিয়ন্ত্রক সংস্থার এমন নির্দেশনায় দুই কার্যদিবস সূচকের উত্থান হয়। আর এ কারণে বিদায়ী সপ্তাহে বড় পতন থেকে রক্ষা পায় দেশের পুঁজিবাজার।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক বাংলানিউজকে বলেন, টানা পতনের কারণে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা সংকট দেখা দিয়েছিল। অনেক বিনিয়োগকারী পুঁজি হারিয়ে পথে বসেছেন। তবে বিএসইসি নানামুখী পদক্ষেপে বাজারে পতন রোধ করেছে। আমরা সবসময় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছিলাম। বর্তমান কমিশন বাজারের উন্নয়নে এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন। আশা করা যায় অচিরেই তারল্য বাড়বে এবং বাজার ঘুরে দাঁড়াবে।
অপরদিকে বৃহস্পতিবার (২৬ মে) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দীর্ঘ ১ ঘণ্টার আলাপ শেষে বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বলেন, আগামী সপ্তাহে পুঁজিবাজারে ভালো কিছু হবে। সবাই আমাদেরকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবেন। শেয়ারবাজার নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার মতো কিছু নেই।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বিগত সপ্তাহে ডিএসইতে মোট তিন হাজার ৫৪ কোটি ২৩ লাখ ৫৯ হাজার ১২০ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। তার আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল তিন হাজার ২৩৫ কোটি ৭৩ লাখ ৫৭ হাজার ৭২৫ টাকার শেয়ার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেন ১৮১ কোটি ৪৯ লাখ ৯৮ হাজার ৬০৫ টাকা বা ৬ শতাংশ কমেছে।
সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২০.২৭ পয়েন্ট বা ০.৩২ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২৩৭ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ৯ পয়েন্ট বা ০.৬৭ শতাংশ এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৯ পয়েন্ট বা ০.৪০ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে এক হাজার ৩৭৩ পয়েন্টে এবং দুই হাজার ৩০৭ পয়েন্টে।
অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ৮৮ কোটি ৫১ লাখ ৭২ হাজার ৭৫৫ টাকার শেয়ার। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ১২১ কোটি ৩৪ লাখ ৭৫ হাজার ৯৩৫ টাকার শেয়ার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে লেনদেন ৩২ কোটি ৮৩ লাখ ০৩ হাজার ১৮০ টাকা বা ২৭ শতাংশ কমেছে।
সপ্তাহটিতে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৫৮ পয়েন্ট বা ০.৮৬ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ২৮০ পয়েন্টে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৩ ঘণ্টা, মে ২৭,২০২২
এসএমএকে/এমএমজেড