সিঙ্গাপুর: পরিচ্ছন্ন ও নিয়ন্ত্রিত দেশ হিসেবে সিঙ্গাপুর সুপরিচিত। জান-মালের নিরাপত্তা প্রদান, দুর্নীতি দমন ও জনগণের সুস্বাস্থ্য রক্ষাসহ পুরো জাতির মৌলিক চাহিদাগুলি নিশ্চিত করতে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা আর কঠোর আইন কানুন প্রণয়নের পাশাপাশি তা বাস্তবায়নে সরকার এখানে কোন প্রকার ছাড় দেয় না ।
রাস্তাঘাটে বা জনসম্মুখে যত্রতত্র আবর্জনা ফেলার কারণে এখানে একশত থেকে সর্বোচ্চ দুই হাজার ডলার পর্যন্ত জরিমানা করা হয়।
কিন্তু সম্প্রতি একটি জরিমানার ঘটনা অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। নিজ বাড়ির জানালার পাশে দাঁড়িয়ে ধূমপান করার পর সিগারেটের অবশিষ্ট অংশ নিচে ফেলার কারণে এক ব্যক্তিকে ১৯ হাজার ৮’শ ডলার (প্রায় ১২ লাখ টাকা) জরিমানা করেছে দেশটির পরিবেশ অধিদপ্তর।
পরিবেশ অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানা যায়, সেং কাং এলাকার ২২৪সি ব্লক থেকে পাশের রাস্তায় নিয়মিত ময়লা আবর্জনা, ছেঁড়া কাগজ আর সিগারেটের অবশিষ্ট অংশ ফেলা হত। এই ব্লকে প্রায় ৭০ টি ফ্ল্যাট থাকায় ঠিক কোন ফ্ল্যাট থেকে আবর্জনাগুলো ফেলা হয়, তা কেউ বুঝে উঠতে পারছিল না।
এক পর্যায়ে স্থানীয় টাউন কাউন্সিলের কর্মকর্তারা ওই ব্লকের আশেপাশে এই বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে প্রচারণা চালিয়ে এই ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার জন্য সকলকে অনুরোধ করেন। কিন্তু তারপরেও বন্ধ হয়নি আবর্জনা ফেলা।
শেষ পর্যন্ত পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মীরা গোপনে ঐ ব্লকের চারদিকে বেশ কয়েকটি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করে পর্যবেক্ষণ করতে থাকলে বেরিয়ে আসে মূল ঘটনা।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, এক ব্যক্তি তাঁর জানালার পাশে দাঁড়িয়ে ধূমপান করার পর সিগারেটের অবশিষ্ট অংশ নীচে ছুঁড়ে ফেলছেন। প্রায় এক মাস যাবত নিয়মিত ভিডিও রেকর্ডিং করে ঐ ব্যক্তিকে মোট ৩৪ বার সিগারেটের অবশিষ্ট অংশ বা বিভিন্ন আবর্জনা নিচে ফেলতে দেখা যায়।
অবশেষে সমস্ত তথ্য প্রমাণ নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হলে আদালত প্রতিবার আবর্জনা ফেলার অপরাধে আলাদাভাবে তাঁকে সর্বমোট ১৯ হাজার ৮০০ ডলার জরিমানা করার পাশাপাশি তাঁকে ৫ঘণ্টা উক্ত এলাকায় পরিচ্ছন্নতার কাজ করার আদেশ দেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০১৫