ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

খেলা

‘এদেশ আমার দ্বিতীয় বাড়ি, মনের টানেই আসি ’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৫৪ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০১৭
‘এদেশ আমার দ্বিতীয় বাড়ি, মনের টানেই আসি ’ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

তাহির জামান। ১৯৯৪ সালে বিশ্বকাপ হকির পাকিস্তান দলের সদস্য ছিলেন। এখন ঢাকায় অবস্থান করছেন। এএফএইচের আওতায় প্রথম সারির কোচদের প্রশিক্ষণ দিতে চারদিনের সফরে এসেছেন এই লিজেন্ড।

বাংলাদেশের হকির সঙ্গে তার বহুদিনের সখ্য। অখ্যাত ঊষাকে চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন কোচ হিসেবে।

এখানকার হকিকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন, পর্যবেক্ষণ করেছেন। তাই বাংলাদেশের হকির সম্ভাবনা ও সমস্যা নিয়ে কথা বলেছেন এই সাবেক হকি তারকা।

বাংলানিউজের প্রতিবেদকের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে বাংলাদেশের হকির বর্তমান সমস্যা ও সম্ভাবনা, দিয়েছেন পরামর্শও।

বাংলানিউজ: এএফএইচ-র পক্ষ থেকে বাংলাদেশের প্রথম সারির কোচদের প্রশিক্ষণ দিতে এসেছেন। কেমন লাগছে?
তাহির জামান: অবশ্যই এটা বড় একটা দায়িত্ব। এএফএইচের আওতায় বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের আওতাধীন প্রথম সারির কোচদের প্রশিক্ষণের দায়িত্ব পড়েছে। আমার বিশ্বাস, এই দেশের কোচরা আমার কাছ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা পাবে।

বাংলানিউজ: দেশের কোচদের কি কি বিষয় নিয়ে কাজ করছেন?
তাহির: এই কোচরা বেশিরভাগই প্রথম শ্রেণির হকি খেলেছেন। তারা মোটামুটি প্রশিক্ষিত। আমি চেষ্টা করবো ট্রাডিশনাল হকির বাইরে কিছু শেখাতে, আধুনিক হকি সম্পর্কে আমার জ্ঞান বিতরণ করতে। যেটা দেশের তরুণ খেলোয়াড়দের কাজে লাগবে।  
 
বাংলানিউজ: চারদিনের জন্য কোচরা আপনাকে পেয়েছে। আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
তাহির: চার-পাঁচদিনে তাদের দুর্বলতা ও দক্ষতার বিষয়টি নিশ্চিত করবো এবং আমার পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ দেয়ার চেষ্টা করবো। আশা করছি তারা কোচিং দক্ষতা বাড়াতে সক্ষম হবেন। পরবর্তীদের দেশের তৃণমূল খেলোয়াড় তৈরিতে সাহায্য করবেন।

বাংলানিউজ: বহুদিন থেকেই বাংলাদেশের হকি সম্পর্কে আপনি জানেন। এদেশের হকির বর্তমান পরিস্থিতি ও অবকাঠামো সম্পর্কে আপনার অভিমত...
তাহির: যদি গত বিশ্ব হকি লিগের দ্বিতীয় রাউন্ডের কথা বলি তাহলে বাংলাদেশ আরও ভালো করতে পারতো। এটার কারণ হয়তো খেলোয়াড়দের নিয়ে ম্যাচের মধ্যে কোচদের সস্তা এক্সপেরিমেন্ট কাজ করেছে। এর ফলে খেলোয়াড়দের গতি কমে গেছে। তাছাড়া খেলোয়াড়দের ট্রেনিং সেশনের ধারাবাহিকতার অভাব ছিল বলে আমার মনে হয়েছে।

বাংলানিউজ: এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের হকি ফেডারেশনের কি করার আছে?
তাহির: আমি মনে করি, বাংলাদেশের খেলোয়াড়সহ কোচদের প্রতি চার-পাঁচ মাস অন্তর অন্তর কোচিং প্রশিক্ষণ নেয়া দরকার। তাতে করে বহির্বিশ্বে কীভাবে হকি খেলছে সে বিষয়ে অবগত হতে পারবে। খেলোয়াড়রাও উন্নতি করবে। হকি ফেডারেশনের অবকাঠামো দিন দিন ভালো করছে। এই প্রশিক্ষণ যুক্ত করে হকির ভালো করতে পারবে তারা।

বাংলানিউজ: আপনি দেশের পরামর্শক কোচ হিসেবেও কাজ করেছেন... 
তাহির: এশিয়ান জোনে আমি বাংলাদেশের পরামর্শক কোচ হিসেবেও কাজ করেছি। সৌভাগ্যক্রমে সেবার স্বর্ণ জিতেছিল বাংলাদেশ। ২০০৯ সালেও একবার এসেছিলাম। এরপর ২০১৩ সালে এসে কোচিং শুরু করি এবং ঊষা চ্যাম্পিয়ন হয়।

বাংলানিউজ: অক্টোবরে এশিয়া কাপ হচ্ছে বাংলাদেশে। এ বিষয়ে...
তাহির: ৩২ বছর পর মনে হয় এই আয়োজন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। উচ্চ পর্যায়ের একটা টুর্নামেন্ট আয়োজন করছে দেশটি। এখান থেকে অনেক কিছু পেতে পারে বাংলাদেশ। স্পন্সররা এখান থেকে ভালো কিছু পাবে। কারণ এই টুর্নামেন্ট অনেক মর্যাদার ও পুরো বিশ্ব এটা দেখবে। বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনও এখান থেকে বড় অঙ্কের অর্থ পাওয়ার সুযোগ রাখে। এই অর্থ পরে খেলোয়াড়দের উন্নতির জন্য যোগান দিতে পারবে।

বাংলানিউজ: অনেকবারই তো এদেশে আসা হয়েছে আপনার। কেমন লাগছে?
তাহির: বাংলাদেশ আমার দ্বিতীয় বাড়ি। অনেকদিন থেকেই এদেশের সঙ্গে আমার সম্পর্ক। মনের টানেই এখানে বারবার আসি। ভালো লাগে আসতে।

কোচদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি দেশের তরুণ খেলোয়াড় যারা প্রশিক্ষণের চূড়ান্ত পর্বে মওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়ামে অবস্থান করছেন, তাদেরকেও হাতে-কলমে শিক্ষা দিচ্ছেন সাবেক এই হকি তারকা।   

বাংলাদেশ সময়: ০৯৫২ ঘণ্টা, ৩১ মার্চ ২০১৭
জেএইচ/এমআরপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।