ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

খেলা

অবসরের পর ম্যারাডোনার যত সম্মাননা

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১০৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০২০
অবসরের পর ম্যারাডোনার যত সম্মাননা দিয়েগো ম্যারাডোনা

কোটি কোটি সমর্থকদের কাঁদিয়ে চলে গেলেন দিয়েগো ম্যারাডোনা। হার্ট অ্যাটাকে বুধবার (২৫ নভেম্বর) শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন এই আর্জেন্টাইন ফুটবল ঈশ্বর।

ফুটবল ক্যারিয়ারে ১৯৮৬’র বিশ্বকাপ জয় ছাড়াও অসংখ্য অর্জন এসে ধরা পড়েছে ম্যারাডোনার পায়ের কাছে। তবে অবসরের পরেও সম্মাননার কমতি হয়নি এই কিংবদন্তির।

১৯৮০’র দশকে আর্জেন্টিনার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব হওয়ার কারণে ১৯৯৯ সালে দেশটির কনেক্স ফাউন্ডেশন তাকে হীরক কনেক্স পুরস্কার প্রদান করে, যা আর্জেন্টিনার অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ সাংস্কৃতিক পুরস্কার।

পরের বছরই ২০০০ সালে ম্যারাডোনা তার আত্মজীবনী ‘Yo Soy El Diego’ (আমি দিয়েগো) প্রকাশ করেন যা তার নিজ দেশে তাৎক্ষণিক জনপ্রিয়তা পায়।

ফিফা ২০০০ সালে ম্যারাডোনাকে শতাব্দীর সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত করে। এটি নির্বাচিত হয় তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ও অফিসিয়াল ম্যাগাজিনে ভোট এবং বিচারকের মাধ্যমে। অনলাইন ভোটে বিপুল ব্যবধানে জয়ী হন তিনি। ম্যারাডোনা পান ৫৩.৬% ভোট, যেখানে ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি পেলে পেয়েছিলেন ১৮.৫৩% ভোট। যদিও অনুষ্ঠানের কিছুদিন আগে, ফিফা অপ্রত্যাশিতভাবে সাংবাদিকদের নিয়ে “ফুটবল ফ্যামিলি” নামে একটি কমিটি গঠন করে, যা শতাব্দীর সেরা খেলোয়াড় হিসেবে পেলেকে নির্বাচিত করে। পরবর্তীতে ফিফা দুই জনকেই পুরস্কার প্রদান করে। এছাড়া ম্যারাডোনা আইএফএফএইচএস-এর ভোটেও পঞ্চম স্থান অর্জন করেন।

এদিকে ২০০১ সালে আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন ফিফা কর্তৃপক্ষের কাছে ১০ নম্বর জার্সিটি চিরকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়ার আবেদন জানায়। অবশ্য ফিফা এই আবেদন গ্রহণ করেনি, তবুও আর্জেন্টিনার কর্মকর্তারা নিশ্চয়তা দেন যে ফিফা তাদেরকে এমনটি করার ইঙ্গিত দিয়েছে।

২০০২ সালে সমর্থকদের ভোটে ১৯৮৬ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ম্যারাডোনার করা দ্বিতীয় গোলটি ফিফা বিশ্বকাপের ইতিহাসে সেরা গোল নির্বাচিত হয়। এছাড়া তিনি বিশ্বকাপের সর্বকালের সেরা দলেও জায়গা পান। ২০১০ সালের ২২ মার্চ যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদপত্র দ্য টাইমস তাকে বিশ্বকাপের সেরা দশ জন খেলোয়াড়ের তালিকায় প্রথম স্থানে রাখেন। ২০০৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর, আর্জেন্টিনোস জুনিয়র্স ম্যারাডোনার প্রতি সম্মান জানিয়ে তার নামে তাদের স্টেডিয়ামের নামকরণ করে।

ম্যারাডোনা ২০০৩ সালে লিবিয়ান ফুটবলার আল-সাদি গাদ্দাফির “কৌশলগত উপদেষ্টা” হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন, যিনি দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট কর্নেল মুয়াম্মার গাদ্দাফির তৃতীয় সন্তান এবং সে সময় ইতালীয় ক্লাব পেরুজা ক্ল্যাসিওর হয়ে খেলতেন।

২০০৫ সালের ২২ জুন ঘোষণা করা হয় যে ম্যারাডোনা খেলাধুলা বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে বোকা জুনিয়র্সে ফিরে আসছেন। ২০০৫ সালের ১ আগস্ট থেকে তার চুক্তির মেয়াদ শুরু হয়। ] কাজে যোগদানের পর তার পরামর্শগুলোর অন্যতম ছিল আল্ফিও বাসিলকে দলের কোচ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া, যা খুব কার্যকর হিসেবে ধরা দেয়। ম্যারাডোনা দলের খেলোয়াড়দের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলেন। বোকা জুনিয়র্স ২০০৫ আপের্তুরা, ২০০৬ ক্লাউসুরা, ২০০৫ কোপা সাউদামেরিকানা, ২০০৫ রিকোপা সাউদামেরিকানা জিতে।

২০০৫ সালের ১৫ আগস্ট, আর্জেন্টিনার টেলিভিশনের টকশো লা নাচো দেল ১০ এর উপস্থাপক হিসেবে ম্যারাডোনার অভিষেক হয়। উদ্বোধনী রাতে তার প্রধান অতিথি ছিলেন পেলে। অনুষ্ঠানে তারা বন্ধুত্বপূর্ণ আলাপ করেন। এই অনুষ্ঠানের অধিকাংশ অতিথি ছিলেন ফুটবল জগতের। যাদের মধ্যে জিনেদিন জিদান, রোনালদো এবং হার্নান ক্রেসপো উল্লেখযোগ্য। এছাড়া কিউবার সাবেক প্রেসিডেন্ট ফিদেল কাস্ত্রো এবং মাইক টাইসনের মত ব্যক্তিও এই অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

২০০৬ সালের ২৬ আগস্ট ঘোষণা করা হয় যে ম্যারাডোনা বোকা জুনিয়র্সে তার পদ ছেড়ে দিচ্ছেন। তার সাথে এএফএ-এর মতানৈক্য সৃষ্টি হয়, কারণ এএফএ বাসিলকে আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের কোচ হিসেবে নির্বাচিত করে।

ম্যারাডোনার জীবনের ওপর ভিত্তি করে পুরস্কারবিজয়ী সার্বিয়ান চলচ্চিত্র নির্মাতা এমির কুস্তুরিকা একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। তিতি চলচ্চিত্রটির নামকরণ করেন ম্যারাডোনার নামে।

২০০৬ সালের মে মাসে ম্যারাডোনা যুক্তরাজ্যের সকার এইডে অংশগ্রহণ করেন। ২০০৬ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি তার বিখ্যাত নীল-সাদা ১০ নম্বর জার্সিতে আর্জেন্টিনা দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। এটি ছিল তিন দিনের ইনডোর বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতা।

বাংলাদেশ সময়: ০১০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০২০
এমএমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।