পাতায়া (থাইল্যান্ড) থেকে: চেহারাটা বাংলাদেশি। পরনে পুলিশের পোশাক।
আর এ কারণেই সবার কাছে ভিন্ন পরিচিতি তার। স্বেচ্ছাসেবক হয়েই পুলিশ বিভাগের সঙ্গে কাজ করেন তিনি। সপ্তাহের নির্দিষ্ট একটি দিনে গায়ে এ পোশাক জড়িয়ে সেবা দেন নিজ দেশের পর্যটক ছাড়াও ভিনদেশিদের।
তিনি জহির উদ্দিন খান বাবর (৫৫)। পাতায়া পুলিশ স্টেশনের ফরেন পুলিশ ভলান্টিয়ার। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দক্ষিণ পৈরতলা গ্রামের মঈন উদ্দিন আহমেদ খানের ছেলে। ছয় ভাই দুই বোনের মধ্যে বাবর দ্বিতীয়, দেশে ছিলেন আইনের শিক্ষার্থী।
গ্রাজুয়েশন শেষ করে ১৯৮৪ সালে থাইল্যান্ডে বেড়াতে আসেন জসিম উদ্দিন খানের কাছে। তারপর চাচার ব্যবসা দেখভাল করতে করতে নিজেই ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠা পান। করতেন কাপড়ের ব্যবসা। ছোট বেলা থেকেই সমাজ সেবায় ঝোঁক ছিলো তার। ভাষাগত সমস্যার কারণে এখানে আসা ভিনদেশি পর্যটকরা বেকায়দায় পড়তেন। অনেকেই বুঝতেন না ইংরেজি। অন্য ভাষাভাষি হলে তো কথাই নেই।
যে কারণে আইনগত প্রতিকার প্রত্যাশী ভিনদেশি পর্যটকদের নিজেদের সমস্যা তুলে ধরাটাও ছিলো এক সময়ে কষ্টসাধ্য বিষয়।
সমস্যা যখন জটিল, তখনই এগিয়ে আসেন বাবররা। তিনিই পাতায়ায় থাকা ২৬টি ভাষাভাষি দেশের মানুষদের সঙ্গে বসে গড়ে তোলেন ফরেন পুলিশ ভলান্টিয়ার্স।
মূলত স্বেচ্ছাসেবী এ সংস্থাটি গড়ে তোলার বিষয়ে বাংলাদেশি হিসেবে অগ্রগামী ভূমিকাও পালন করেন তিনি।
প্রাদেশিক পুলিশ প্রধানের অনুমতি সাপেক্ষে সংস্থাটি গঠন করায় পর্যটকদের সঙ্গে থানা পুলিশের নিবিড় যোগসূত্র স্থাপন করা সম্ভব হয়। যে কারণে পর্যটকদের অভিযোগ, সমস্যাসহ বিভিন্ন বিষয় জানার সঙ্গে সঙ্গেই ব্যবস্থা নেওয়ায় কমে আসে অভিযোগের মাত্রা। বেড়ে যায় অভিবাসী আর পর্যটকদের সেবার পরিধি।
আমরা প্রতি রোববার মিটিং করি। অভিবাসীদের নিয়ে এখানে যে এক্সপার্ট ক্লাব রয়েছে। আমি তার বোর্ড মেম্বার ও মিটিং মেম্বার। এভাবেই আমরা অভিবাসী ও পর্যটকদের সেবায় কাজ করি।
বেশ কয়েকটি ভাষা জানার কারণে আমাকে এখানে সবাই চেনেন। নিজের ব্যক্তিগত কাজের বাইরে একজন বাংলাদেশি হিসেবে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছি। বাংলাদেশের পতাকা তুলে ধরছি। এটাই আমার গর্ব।
পাতায়া পুলিশ স্টেশনে বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে এ কথাই বলছিলেন তিনি। এভাবে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে পাতায়ায় বাংলাদেশকে অনন্য এক উচ্চতায় তুলে ধরছেন বাবর।
বাংলাদেশ সময়: ১১০০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০১৬
জেডএস