কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমোডর মোহাম্মদ নুরুল আবছার বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কক্সবাজারের জন্য প্রায় ৩ লাখ কোটি টাকা ব্যয়ে অনেক মেগা প্রকল্পের বাস্তবায়ন করছেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- সোনাদিয়া স্পেশাল ট্যুরিজম অঞ্চল, মাতারবাড়ী ডিপ সি পোর্ট, স্পেশাল ইকোনমিক জোন অ্যান্ড ট্যুরিজম অঞ্চল, নাফ ইকোনমিক জোন, আইকনিক রেলওয়ে স্টেশন, এলএনজি টার্মিনালসহ আরও অনেক প্রকল্পের কাজ চলছে।
কিছুদিনের মধ্যে কক্সবাজারের বিমানবন্দর চালু হবে। রেলওয়ের কারণে ট্যুরিস্ট অনেক বেড়ে যাবে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সাধারণ ট্যুরিস্ট কক্সবাজারে চলে আসবে। আর বিমান চালু হলে দেশের বাইরে থেকে ট্যুরিস্টরা এখানে আসবে। অন্তত চীন, মালেশিয়া, থাইল্যান্ড এসব দেশ থেকে ট্যুরিস্টরা আসবে। বিদেশি ট্যুরিস্টকে আকর্ষণ করতে হলে আমাদের বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, সকালে বিদেশি পর্যটকরা বিচে আসে, দুপুর-বিকালে তাদের কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। আমরা যদি দেশি-বিদেশি পর্যটককে সি-বিচের বাইরে অন্যান্য সুবিধা না দিতে পারি, তাহলে আমাদের ট্যুরিজম প্রমোশন করা যাবে না। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক মূল মেরুদন্ড হলো গার্মেন্ট আর প্রবাসী আয়। কোনো কারণে এই দুই সেক্টরে বিপর্যয় হলে বড় ধরনের অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে পড়তে হবে। তাই আমাদের বিকল্প সেক্টরের দিকে তাকাতে হবে। কমোডর মোহাম্মদ নুরুল আবছার বলেন, কক্সবাজারকে ইকোনমিক রেজিন্সি তৈরি করার জন্য দুটি বিষয় দেখতে হবে। তার মধ্যে অন্যতম হলো ট্যুরিজম সেক্টর। অন্যটা হলো ব্লু ইকোনমি সেক্টর। ট্যুরিজমের প্রসার বাড়ানোর জন্য আমাদের আরও অনেক কাজ করতে হবে। কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আগামীর জন্য ৩৩টি প্রজেক্ট হাতে নিয়েছে। এ মাসে ১০টি ডিপিপি আমরা গৃহায়ন মন্ত্রণালয়ে সাবমিট করেছি। আগামী মাসে আমরা ২০টার মতো ডিপিপি সরকারকে দিতে পারব। মার্চ মাসের মধ্যে ৩৩টি ডিপিপি জমা দিতে পারব।
তিনি বলেন, আমরা ক্যাবল কার চালু করতে চাই। আন্ডার ওয়াটার ওশেন পার্ক চালু হবে। সি প্লেন চালুতে একটু সময় লাগবে। এ ছাড়া এখানে থাকছে আবাসন প্রকল্প, সিনেপ্লেক্স, লাইভ বাজার, শপিং মল, সার্কুলার বাস সার্ভিস চালু হবে। বাকখালী নদীর পাশ দিয়ে এয়ারপোর্ট থেকে শুরু করে রাবার ডাম পর্যন্ত রোড হবে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রোড সংযুক্ত হবে। প্রধানমন্ত্রী কুতুবদিয়া থেকে সেন্টমার্টিন পর্যন্ত ৭০০ বর্গকিলোমিটার মাস্টারপ্ল্যান তৈরির প্রজেক্ট অনুমোদন দিয়েছেন। আরেকটি বিষয় হলো ব্লু ইকোনমি সেক্টর নিয়ে আমাদের মাস্টারপ্ল্যান আছে। কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বলেন, কোনো দেশেই সরকার সবকিছু করে দেয় না। বাংলাদেশে যখন গার্মেন্ট ইন্ডাস্ট্রি চালু হয়েছে তখন সরকার সব তৈরি করে দেয়নি। সরকার একটি ফ্যাসিলিটি প্ল্যাটফরম হিসেবে কাজ করেছে। সরকার নীতি সহায়তা দিয়ে থাকে। ব্লু ইকোনমি সেক্টর এবং পর্যটন সেক্টর এগিয়ে যাওয়ার জন্য বেসরকারি সেক্টরকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। তাদের সুবিধা দিতে হবে। বেসরকারি সেক্টরকেও এগিয়ে আসতে হবে। আমি আহ্বান করব, বেসরকারি সেক্টর যেন এগিয়ে আসে। আমি বিভিন্ন চেম্বারের সঙ্গে কথা বলব। তারা যেন এগিয়ে আসে। তিন-চারটি কোম্পানি মিলে যদি বড় প্রজেক্ট করে তাহলে দেশের টাকা দেশেই থাকবে। বেসরকারি সেক্টরের এগোনো ছাড়া বড় পরিবর্তন সম্ভব নয়। উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হলে কক্সবাজার যোগাযোগের হাব হয়ে উঠবে। কক্সবাজারের মাধ্যমে আমাদের কানেকটিভিটি তৈরি করতে হবে। ট্রান্স এশিয়ানের সঙ্গে যুক্ত হব। সাউথ এশিয়ান এভিয়েশন ইন্ডাস্ট্রির হাব হবে কক্সবাজার। কক্সবাজারে কাজ করার জন্য অনেক সেক্টর তৈরি হবে।
সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন
বাংলাদেশ সময়: ১১৫৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০২৩
এসআইএস