ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

পর্যটন

ফরিদপুরে নতুন বিনোদন কেন্দ্র টেপাখোলার স্লুইস গেট

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৭ ঘণ্টা, জুলাই ৬, ২০২৪
ফরিদপুরে নতুন বিনোদন কেন্দ্র টেপাখোলার স্লুইস গেট

ফরিদপুর: ফরিদপুর শহরতলীর টেপাখোলার কুমার নদের স্লুইস গেট এলাকা এখন নতুন বিনোদন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। কুমার নদের উৎস মুখ স্লুইস গেট এলাকায় পানি প্রবাহ দেখতে প্রতিনিয়ত ভিড় করেন হাজারো মানুষ।

প্রতিদিন সেখানে দূর-দুরান্তের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নানা বয়সী অসংখ্য মানুষের ভিড় বাড়ছে।

ফরিদপুরে উন্মুক্ত জায়গায় বিনোদনের সু-ব্যবস্থা না থাকায় স্লুইস গেট এলাকায় পরিবার পরিজন নিয়ে ছুটে যান বলে জানান বিনোদনপ্রেমীরা। তবে প্রতিদিনের তুলনায় বন্ধের দিনে অসংখ্য মানুষের ঢল নামে। এ বিনোদন কেন্দ্র ঘিরে অনেকের আয়ের পথ সৃষ্টি হয়েছে। নানান দোকানপাট ছাড়াও নৌকা চালিয়ে অনেকেই সংসার চালাচ্ছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, মদনখালী স্লুইস গেটটি খুলে দেওয়ায় পদ্মা নদী থেকে বিপুল গর্জনে পানি ঢুকছে কুমার নদে। এসব দৃশ্য উপভোগ করতে প্রতিদিন দুপুর থেকে রাত অবধি ভিড় করছে বিভিন্ন পেশার নানা বয়সী হাজারো মানুষ। কেউ বসে আড্ডা দিচ্ছে, কেউ পানি প্রবাহ দেখছে, আবার কেউ মোবাইলে ছবি-ভিডিও, সেলফি তুলছে। তাছাড়া ঘুরার মতো তেমন কোনো জায়গা না থাকায় স্লুইস গেট ঘিরেই হয়ে উঠেছে নতুন অবকাশ কেন্দ্র। বাহারি খাবারের দোকান, খেলনাসহ বিভিন্ন দোকানের পসরা সাজিয়ে বসেছে দোকানীরা।

বান্ধবি নিয়ে ঘুরতে আসা শহরের বাসিন্দা সুমাইয়া আফরিন বলেন, এখানে আগেও আসছি, ইদানীং মানুষের প্রচুর ভিড় বেড়েছে। কাছের-দুরের অসংখ্য মানুষ এখানে আসে। জায়গাটা খুবই মনোরম। নৌকাতে ঘুরা যায়। এখানে আরও যদি উন্নত করা যায়, সরকার যদি মানুষের বিনোদনের জন্য আরও ভালো উদ্যোগ নেয় হয়।

কুষ্টিয়া থেকে কুলফি মালাই বিক্রি করতে আসা মো. সিরাজ বলেন, খাঁটি গাভীর দুধ দিয়ে নিজেই কুলফি মালাই তৈরি করে এখানে বিক্রি করি। বেচা বিক্রিও ভালো। প্রতিদিন গড়ে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা আয় হয়।

ঘুরতে আসা আলালপুরের তাওহিদুর রহমান বলেন, বিশেষ করে বিকেলের সময় কাটানোর মতো খুবই ভালো একটা জায়গা। এখানে আসলে খুবই ভালো লাগে। এখানে বাতাস, পানি খুবই ভালো লাগে তাই পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসেছি।

ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী শ্রেয়া বলেন, এখানে এখন অসংখ্য মানুষ ঘুরতে আসে। আসলে ঘুরার মতোও একটা জায়গা। বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত এখানে অসংখ্য মানুষ ঘুরতে আসে। আড্ডা দেয়। এখানে আসলে অনেক ভালো লাগে।  

পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসা আরিফ হোসেন নামে এক ব্যাংকার বলেন, অসাধারণ একটা জায়গা। বন্ধের দিনে মন খারাপ থাকলে এখানে এসে সময় কাটাই। মন ভালো হয়ে যায়। বর্তমানে এখানে মানুষের ভিড় বেড়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও নৌকার মাঝি পবিত্র মালো জানান, আমার নিজের একটি নৌকা আছে। দর্শনার্থীরা অনেকেই নৌকায় ঘুরতে পছন্দ করেন। নৌকায় ঘুরতে জনপ্রতি এক ঘণ্টায় ৫০ টাকা নেওয়া হয়। ইদানীং ভালোই আয় হচ্ছে, যা দিয়ে সংসার চলে যায়।

এ বিষয়ে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. কামরুল আহসান তালুকদার বাংলানিউজকে বলেন, শহরতলীর ধলার মোড় ও মদনখালী স্লুইস গেট এলাকা উন্নত সুযোগ-সুবিধার মাধ্যমে যাতে পর্যটক এবং আমাদের ফরিদপুরের মানুষ যাতে একটি ভালো পর্যটকের সুবিধা পায় সে লক্ষ্যে পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের জন্য জোর চেষ্টা চলছে। এছাড়া ওই এলাকায় নিরাপত্তা জোরদারসহ পর্যটনের বিষয়টি যাচাইয়ের জন্য কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর বিষয়টি বিবেচনা করে দেখা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৭ ঘণ্টা, জুলাই ০৬, ২০২৪
আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।