ভেনিস (ইতালি) থেকে: প্রবাসে কেবল নিজেই প্রতিষ্ঠিত হননি। প্রতিষ্ঠা করেছেন নিজের মাতৃভূমিকে।
বরিশাল মুলাদী উপজেলার আলিমাবাদ গ্রামের মৃত হাজী জয়নুল আবেদীনের ছেলে সৈয়দ কামরুল সারোয়ার ভেনিসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন বহুদিন ধরেই। বাংলাদেশিদের অধিকার আদায়ে দর কষাকষি করেছেন স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সাথে। ইতালীয় নাগরিককে বিপুল ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন সে দেশের কমিউনিটির প্রতিনিধির নেতৃত্বে।
নিজের ভাগ্য গড়তে এই মানুষটি পশ্চিম ইউরোপের দেশ ইতালি পাড়ি দেন ১৯৮৯ সালে। জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, ইতালির রোম, বোলোজোনা হয়ে ভেনিস আসেন ২০০১ সালে। ওয়েটার হিসেবে কাজ নেন একটি রেস্টুরেন্টে। চাকরিও করেন অভিবাসীদের আইগত সহায়তা নিয়ে কাজ করা একটি প্রতিষ্ঠানে। পরে ভিয়া পিয়াভের মেস্ট্রে এলাকায় ট্রাভেল এজেন্সি,ইন্টারনেট,মানি ট্রান্সফার ও হস্তশিল্পে নিজের ব্যবসা সম্প্রসারণ করেন।
২০০৬ নভেম্বরে উদ্যোগ নেন স্কুল প্রতিষ্ঠার। নাম ভেনিস -বাংলা স্কুল।
সৈয়দ কামরুল সারোয়ার বাংলানিউজকে জানান, এখানকার প্রবাসীদের সন্তানরা চর্চা আর জানার অভাবে বঞ্চিত ছিলো বাংলাদেশের ভাষা, কৃষ্টি, ঐতিহ্য আর ইতিহাস নিয়ে।
নতুন প্রজন্মের অনেক শিশুই বাংলা পড়তে বা লিখতে পারতো না।
এভাবে শেকড় থেকে ক্রমাগত ভাবেই বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছিলো তারা।
আমরা লক্ষ্য করলাম, একটি নির্দিষ্ট সময় দেশটি থেকে স্বদেশে ফিরে যাবার পর মারাত্মক জটিলতার মুখে পড়তেন প্রবাসীদের সন্তানরা।
নিজের মায়ের ভাষা আর সংস্কৃতির সাথে খাপ খাইয়ে চলাটা বেশ কঠিন হতো। কেবল মাত্র চর্চার অভাবে। এসব চিন্তা থেকেই সিনেমা দান্তের হল রুম ভাড়া নিয়ে চালু করি স্কুল। বর্তমানে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান করা হচ্ছে স্কুলটিতে। শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতন মাত্র ৫ ইউরো। বর্তমানে ৫০ জন শিক্ষার্থীর স্কুলটি সামাল দিচ্ছেন মাত্র ৫ জন শিক্ষক।
দেশে যারা এক সময় শিক্ষকতা করেছেন,তারাই স্কুলটি পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত বলে জানান সৈয়দ কামরুল সারোয়ার।
এখন নানা দিবসে এই প্রবাসেই নানা আয়োজন সাংস্কৃতিক চর্চার মাধ্যমে উৎসব মুখর করে রাখেন স্কুলের শিক্ষার্থীরা। আর এভাবেই সৈয়দ কামরুল সারোয়ারের উদ্যাগে এই প্রবাসেই যেন গড়ে উঠছে আরেকটি মিনি বাংলাদেশের। যার নাম ভেনিস-বাংলা স্কুল।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩৭ ঘন্টা, মে ০৩, ২০১৬
আরআই