২৯৩ কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০১৪ সালের জুলাইয়ে শুরু হওয়া ‘বাংলাদেশ বিমানবন্দরগুলোর সেফটি ও সিকিউরিটি ব্যবস্থার উন্নয়ন’ প্রকল্পটির কাজ গত জুন মাসে সম্পূর্ণ হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু মেয়াদ শেষেও প্রকল্পের কিছু কাজ বাকি রয়েছে।
প্রকল্পটির আওতায় ঢাকার হযরত শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, চট্টগ্রামের আমানত শাহ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, যশোর ও সৈয়দপুর বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়ন করছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জাপানি কোম্পানির মাধ্যমে প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি রাডার কেনা ও স্থাপনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এ বিমানবন্দরের রাডারের ভিডিও ডিসপ্লে ঢাকা এরিয়া কন্ট্রোল সেন্টারের সঙ্গে সংযুক্ত করা প্রয়োজন। এ কাজে সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নে একই কোম্পানি থেকে সফটওয়্যার লাইসেন্সসহ দু’টি রাডার ডিসপ্লে ওয়ার্ক স্টেশন কেনার প্রস্তাব করা হয়েছে।
সফটওয়্যারসহ দু’টি রাডার ডিসপ্লে ওয়ার্ক স্টেশন সরবরাহ ও স্থাপনে আরও ৫ থেকে ৬ মাস সময়ের প্রয়োজন বলেও জানায় মন্ত্রণালয়।
প্রকল্পের রাডার ও ডিজিটাল ভিডিও রেকর্ডারের (ডিভিআর) ফ্লাইট ক্যালিবারেশনের কাজ ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। ফ্রেমওয়ার্ক অ্যাগ্রিমেন্টের আওতায় গাইডলাইন অনুসারে সকল বিদ্যমান নেভিগেশনাল ও ভিজ্যুয়াল যন্ত্রপাতির জন্য বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) বছরে একবার এটি করে থাকে। শুধু এ প্রকল্পের যন্ত্রপাতির ফ্লাইট ক্যালিবারেশনে পৃথক উড়োজাহাজ ভাড়া করা ব্যয়সাপেক্ষ। এজন্য এটি বাদ দেওয়ার কারণেও প্রকল্পটি সংশোধন করা হচ্ছে।
প্রকল্পের যন্ত্রপাতির সরবরাহ ও স্থাপনে জাপানের সুমিটোমো কর্পোরেশনের সঙ্গে বেবিচকের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। চুক্তি অনুসারে প্রকল্পের মোট ব্যয় না বাড়লেও কিছু আইটেম ভিত্তিক ব্যয়ের পরিবর্তন করা হয়েছে। প্রকল্পে প্রস্তাবিত সিঙ্গেল ভিউ এক্স-রে স্ক্যানিং মেশিনের পরিবর্তে ডুয়েল ভিউ এক্স-রে স্ক্যানিং মেশিন স্থাপন করা হবে। এ কারণেও বাড়তি সময়ের প্রয়োজন বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিমান ও সিএ) আবুল হাসনাত মো. জিয়াউল হক বাংলানিউজকে বলেন, ‘প্রকল্পটির কাজ শেষের পথে। এর আওতায় দুই সেট এয়ারপোর্ট রেসকিউ ও ফায়ার ফাইটিং যানবাহন কেনা হয়েছে। বাকি আছে শুধু রাডারের কাজ। প্রকল্পটি শুরুর সময় জাপানি অর্থায়নে চারটি রাডার কেনার সিদ্ধান্ত হয়েছিলো। এ সিদ্ধান্ত বদলে সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে রাডার চারটি কেনা হচ্ছে। এ রাডারগুলো স্থাপন ও চারটি বিমানবন্দরের সমন্বয়ের প্রয়োজনে প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ করতে আমাদের আরও ছয় মাস সময় লাগবে’।
প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য হলো- কমিউনিকেশন ও নেভিগেশন সার্ভেইল্যান্স (সিএনএস) ও সিকিউরিটি ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে কার্যকরী এয়ার ট্রাফিক সেবা দেওয়া, বাংলাদেশে নিরাপদ বিমান পরিবহন সুবিধাদির বাস্তবায়ন এবং সিভিল এভিয়েশন ট্রেনিং সেন্টারে (সিএটিসি) এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারদের (এটিসি) জন্য প্রশিক্ষণ সুবিধাদির উন্নতকরণ।
এছাড়া হযরত শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উদ্ধারকাজ ও অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং দেশের বিমান পরিবহন খাতের সার্বিক সুরক্ষা ও নিরাপত্তা বৃদ্ধির লক্ষ্যেও প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ০২০২ ঘণ্টা, আগস্ট ০২, ২০১৭
এমআইএস/এএসআর