আমচাষিদের জন্য এমন আহ্বান রাজশাহীর জেলা প্রশাসক এসএম আব্দুল কাদেরের। বৃহস্পতিবার (৩১ মে) বাংলানিউজকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এ আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
এসএম আব্দুল কাদের বলেন, এখন আর রাজশাহীর আমে কোনো রকম কেমিক্যাল বা ফরমালিন মেশানো হয় না। নিবিড় তদারকির মাধ্যমে মান নিশ্চিত করা হয়েছে।
আমচাষিরা সচেতন হয়ে গেছে জানিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, আমার চাষিদের বোঝাতে সক্ষম হয়েছি। তারাও এখন অনেক সচেতন। ইউনিয়ন পর্যায় থেকে মনিটরিং কমিটি করা হয়েছে। জোরদার করা হয়েছে মোবাইল কোর্ট। এবার নিশ্চিন্তে রাজশাহীর আম খেতে পারবেন। তিনি বলেন, এই অঞ্চলে বলতে গেলে কোনো শিল্প নেই। মানুষ আমের ওপর নির্ভরশীল। ছেলে-মেয়েদের বিয়ে-শাদী হয় আম বেচে। দয়া করে এই আম নিয়ে অপপ্রচার করবেন না। ওদের পেটে লাথি মারবেন না।
‘আমরা অনেক স্বপ্ন দেখি, রাজশাহীর আম একসময় সারাবিশ্ব মজাবে। চাষিরা আমের ন্যায্যমূল্য পাবে। ’
মাস তিনেক হয় রাজশাহীতে জেলা প্রশাসক হিসেবে যোগদান করেছেন আব্দুল কাদের। তার এ অল্প সময়ের কর্মকাণ্ড এরই মধ্যে বিভিন্ন মহলে দারুণভাবে প্রশংসিত হয়েছে। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত তার দরজা সবার জন্য উন্মুক্ত। আবার মোবাইল ফোনেও সাড়া দেন সবার। ফোন ধরতে না পারলে পরে ফোন দিয়ে সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা করেন।
আর রাজশাহীর লোকজনের ভালোবাসায় মুগ্ধ আব্দুল কাদের নিজেও। তিনি বলেন, এখানকার লোকজনের চাহিদা সামান্য। তারা অল্পতেই তুষ্ট, এটা আমার কাছে চমৎকার লেগেছে।
‘আমার অফিস বিশেষ কারও জন্য নয়, সবার জন্য উন্মুক্ত। ভিক্ষুক থেকে ধনী, নেতা থেকে জনসাধারণ সবার জন্য সমান। ’
জেলা প্রশাসক বলেন, আমি যখন চলে যাবো, তখন দেখে যেতে চাই, রাজশাহীর সব অফিস জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত। এটা করে যেতে পারলে সেটাই হবে আমার পাওয়া।
জেলা প্রশাসনের তথ্য বাতায়নেও (ওয়েবসাইটে) প্রকাশ পায় জনসেবা ও রাজশাহী গঠনে এসএম আব্দুল কাদেরের উচ্চাকাঙ্ক্ষার কথা। সেখানে তার বার্তায় বলা হয়েছে, ‘...যে কোনো অভিযোগ বা পরামর্শের জন্য সরাসরি এ তথ্য বাতায়ন (ওয়েবসাইট) ব্যবহার করা যাবে, যার মাধ্যমে মেইল-বক্সের সহায়তায় তা কর্তৃপক্ষের নজরে আনা যাবে। প্রয়োজনে সরাসরি যে কোনো কর্মকর্তাকে ই-মেইল করে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করা যাবে। ...’
আব্দুল কাদের ১৯৭৬ সালে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। বীর মুক্তিযোদ্ধার এ সন্তান বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পুরকৌশলে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে সরকার ও রাজনীতিসহ আরও দু’টি বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি সম্পন্ন করেন।
বিসিএস প্রশাসন ২০ ব্যাচ এর কর্মকর্তা আব্দুল কাদের চট্টগ্রাম মহানগর ও সিলেট সদরের এসিল্যান্ড, চট্টগ্রামের এনডিসি ও প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে কক্সবাজারে নিয়োজিত ছিলেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) হিসেবে তিনি চারটি উপজেলায় কাজ করেছেন। তিন বছর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে চট্টগ্রামে দায়িত্ব পালনের পর এক বছর উপ-সচিব হিসেবে ভূমি মন্ত্রণালয়ে এবং দুই বছর ক্যান্টনমেন্ট এক্সিকিউটিভ অফিসার হিসেবে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডে দায়িত্ব পালন করেন।
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি তিনি রাজশাহী জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব পান। আয়েশা বিনতে হোসেনের সঙ্গে তার সংসারে দুই সন্তান এসএম ইমাম হোসেন ও ফাতেমাতুজ্জোহরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০১৮
এসআই/এইচএ/