ইতোমধ্যে বারি আম-৪, বারি আম-১১, ব্যানানা ম্যাংগো, রাঙা সিঁদুর, পালমার, বিশ্বনাথ চ্যাটার্জী নামের উন্নত প্রজাতির আমের জাত তৈরী করা হয়েছে। এক বিঘা জমিতে এসব উন্নত জাতের ২০০টি আম গাছ লাগানো যাবে।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালকের কার্যালয়ের জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মো. মঞ্জুরুল হক বাংলানিউজের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাতকারে এসব তথ্য জানান।
তিনি জানান, রাজশাহীতে ১৭ হাজার ২৬৩ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের আম বাগান রয়েছে। এসব বাগানে প্রায় সাড়ে ২৪ লাখ গাছ রয়েছে। গত বছর এসব গাছ থেকে প্রায় ২ লাখ মেট্রিক টন আম উৎপাদন হয়েছিলো। এ বছর সোয়া ২ লাখ মেট্রিক টন আম উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে। গড়ে ১ হাজার ৫০০ টাকা মণ হিসেবে যার বাজার মূল্য দাঁড়াবে প্রায় ৮৪৩ কোটি টাকার মত।
এবারে আম দেরিতে পাকার কারণ সম্পর্কে মো. মঞ্জুরুল হক বাংলানিউজকে জানান, অন্যবারের চেয়ে এবার খরা কম। এতে তামপাত্রা কম। বৃষ্টি বেশি হচ্ছে। প্রাকৃতিক সমস্যা থাকলে মুকুল ও আম বেশি ধরেছে। সবমিলে আবহাওয়া ঠাণ্ডা থাকায় আম পাকতে গেলোবারের তুলনায় কমপক্ষে ১৫দিন বেশি সময় লাগছে।
তিনি জানান, জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে অনেক জাতের আমে তুলনামূলক ফলন কম হচ্ছে। আমের আকার ছোট হয়ে আসছে। আমে মাছি পোকার আক্রমণ হচ্ছে। এছাড়া নতুন সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে মিলিবাগ পোকার আক্রমণ।
এসব দূরীকরণে চাষিদের কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও দিক নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। সেক্স ফেরোমন ফাঁদ, আমে ফুড ব্যাগিংসহ প্রয়োজনীয় কীটনাশক মাত্রা অনুযায়ী প্রয়োগ করতে বলা হচ্ছে। এছাড়া এ বছর ফুড এগ্রিকালচার প্রাক্টিস অনুসারে প্রায় পাঁচ হাজার চাষিকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
সর্বোপরি সুপার মার্কেট ও স্থানীয় বাজার প্রতিনিয়িত সম্প্রসারিত হওয়ায় সুস্বাদু ও উন্নতমানের এসব আমের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।
রপ্তানিকরণ প্রসঙ্গে এই কর্মকর্তা জানান, গত বছর ৩০ মেট্রিক টন বিভিন্ন জাতের আম দেশের বাইরে রপ্তানি করা হয়েছিলো। এ বছর ১০০ মেট্রিক টন আম রপ্তানির আশা করা হচ্ছে। তবে দেরিতে আম পাকার কারণে একটু সমস্যা দেখা দিতে পারে। কেননা বাইরের দেশগুলো জুন মাসের মধ্যে চাহিদামত আম কিনে থাকেন। সেদিক থেকে একটু পিছিয়ে রয়েছি।
পরে তিনি অধিদফতর এলাকায় লাগানো উন্নত জাতের রাঙা সিদুঁর, পালমার, ব্যানানো ম্যাংগোসহ লক্ষণভোগ, গোপালভোগ, ল্যাংড়া, ফজলি আম ঘুরে ঘুরে দেখান। পাশাপাশি ফুড ব্যাগিং পদ্ধতিও দেখান।
বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০১৮
এমবিএইচ/এনটি