কিন্তু রাজার মধ্যেও তো মহারাজা থাকতে হয়। তাই ফলের রাজা আম হলেও আমের রাজা কী- এ প্রশ্ন সামনে আসাটাই স্বাভাবিক।
আমের রাজা খুঁজতে গিয়ে দেখা গেছে, বাজারে বেশ কিছু প্রজাতির আমের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। এগুলোর মধ্যে একেবারে দেশি জাতের সংখ্যাই বেশি। তবে হাইব্রিডও আম চাহিদার শীর্ষে রয়েছে।
দেশি জাতের মধ্যে চাহিদার শীর্ষে রয়েছে ফজলি, হিমসাগর আর ল্যাংড়া প্রজাতি। আর এদের চেয়ে কোনো অংশেই কম নয় আম্রপালি। তবে এ আমটি সম্পূর্ণ বিদেশি জাতের।
চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আম্রপালি চাষে ব্যয় কম। ফলন ভালো। খেতে সুস্বাদু, রং ভাল। তাই বাজারে নামলে বেশ চলে। জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই এটি বাজারে আসে। একটি প্রমাণ সাইজ গাছ থেকে ১০ হাজার টাকার মতো আয় হয়।
তবে ল্যাংড়া আম সবচেয়ে সুস্বাদু, হিমসাগর মিষ্টি বেশি আর ফজলি আমের কদর আদালা। এগুলোর মধ্যে ল্যাংড়ার স্বাদ পরিমিত। এটা সবার পছন্দ। হিমসাগর অনেকেই পছন্দ করেন না। আর ফজলি আমের দাম বেশি আর নষ্ট হয় বেশি।
একটা প্রমাণ সাইজের গাছের ল্যাংড়া আম থেকে আয় হয় ১৫ থেকে ১৮ হাজার টাকা। হিমসাগার ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা। আর ফজলি থেকে ১৮ থেকে ২০হাজার টাকা আয় হয়। তবে বড় বড় গাছ থেকে এক লাখ টাকাও আয় হয়, যেটা খুব কম।
অতএব, ক্রেতার পছন্দ ও গুণাগুণ এবং চাষিদের লাভের ক্ষেত্রে এগিয়ে ল্যাংড়া। এ আমের তুলনা হয় না।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ইকরিমপুর আমবাগানের চাষি মো. মতিন মিয়া বলেন, ফলের রাজা আম। আর আমের রাজা ল্যাংড়া। এ আম উৎপাদন, বিক্রি, ক্রেতারচাহিদা আর স্বাদ সবদিক মিলিয়ে অন্য কারো সঙ্গে তুলনা করা যায় না।
এগুলো ছাড়াও বাজারে খিসরাপাত, গোপালভোগসহ আরো কিছু আম ভাল। তবে সবদিক থেকে এগুলো এগিয়ে নয়।
রাজশাহীর আঞ্চলিক উদ্যানতত্ব গবেষণা কেন্দ্রের মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. হামিম রেজা বাংলানিউজকে বলেন, ল্যাংড়া আমটা একটা আলাদা। এটির ঘ্রাণ সুন্দর। খেতে ভাল। চাষিরা আয়ও করে ভাল। সবদিক থেকে এই আম সেরা। আসলে খিসরাপাত বা হিমসাগর, ফজলি, আম্রপালি কোনোটিই কোনোটির চেয়ে আপাতদৃষ্টিতে কম নয়। তবে কিছুটা তারতম্য আছে বলেই একেকটার একের নাম। সেদিক থেকে ল্যাংড়ার কদরটা সবার কাছেই। এ আম জুনের শেষে দিকে বাজারে আসে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৯ ঘণ্টা, জুন ০১, ২০১৮
ইইউডি/এসএইচ