পরিসংখ্যান ব্যুরো বলছে, দেশের ৭০ হাজার হেক্টর জমিতে প্রায় ১০ লাখ মেট্রিকটন আম উৎপাদন হয়। আর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানিয়েছে, ১ লাখ ৭৪ হাজার ২০৮ হেক্টর জমিতে ২১ লাখ ৪৩ হাজার ৪০৩ মেট্রিকটন আম উৎপাদন হয়।
মাঠ পর্যায়ের চাষি এবং সংশ্লিষ্ট গবেষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিকেজি আমের গড়মূল্য ৬০ টাকা। সে হিসেবে ১ লাখ মেট্রিকটন আমের দাম বাজার দাঁড়ায় ৬’শ কোটি টাকা। আর ২১ লাখ ৪৩ হাজার মেট্রিকটন আমের বাজার দাঁড়ায় প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকা। এটা সারাদেশে উৎপাদিত আমের বাজারমূল্য।
সারাদেশের মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জে আম সবচেয়ে প্রসিদ্ধ ফল এবং সবচেয়ে বেশি পরিমাণে উৎপাদন হয়। এ জেলায় আড়াই লাখ মেট্রিকটন আম উৎপাদন হয়। যার বাজার মূল্য দাঁড়ায় ১ হাজার ৫শ কোটি টাকা।
আমচাষি এবং রফতানিকারক ইসমাইল খান শামীম বাংলানিউজকে বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও অন্যান্য জায়গায় যে আম উৎপাদন হয় তার গড় দাম প্রতিকেজি ৬০ টাকার মতো। সে হিসেবে প্রতি মেট্রিকটন আমের বাজার দাঁড়ায় ৬০ হাজার টাকা।
কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. হামিম রেজা বলেন, কিছু আম আছে যেগুলো ১০ টাকা কেজি দরেও বিক্রি হয়। তবে এটার সংখ্যা খুব কম। মূলত ৩০ টাকা থেকে ১২০ কিংবা ১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয় আম। সবমিলিয়ে আমরা হিসেব করে দেখেছি গড় দাম দাড়ায় ৬০ টাকা। সেহিসেবে প্রায় ১২ থেকে ১৪ হাজার কোটি টাকার আমের বাজার রয়েছে দেশে। তবে ভোক্তা পর্যায় পর্যন্ত হিসেব করলে এ অংক আরও বড়।
দেশের উত্তর পশ্চিম, দক্ষিণ পশ্চিম এলাকা এবং কিছুকিছু পাহাড়ি এলাকায় বাণিজ্যিভাবে আম উৎপাদন হয়। মৌসুমের সময় বাজারে আম ছাড়া অন্য কোনোফলে চাহিদাই থাকে না।
গবেষকরা বলছেন, দেশে যে পরিমাণ জমিতে আম চাষ করা হয়, তা সঠিকভাবে করলে বাজার দাঁড়াবে বর্তমানের চেয়ে দেড়গুণ বেশি। এছাড়া সঠিক উপায়ে আম চাষ করলে পাওয়া যাবে স্বাস্থ্যসম্মত ফল। একই সঙ্গে বাড়বে আম অর্থনীতির আকারও।
কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. শরফ উদ্দিন বলেন, আমরা বর্তমান উৎপাদিত আমের ১০ শতাংশ আম স্বাস্থ্যসম্মতভাবে উৎপাদনের কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। এটা পুরোটা করতে পারলে এক আম দিয়েই দেশের অর্থনীতি পাল্টে দেওয়া যাবে। কেননা, বিদেশে আমাদের আমের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৬২০ ঘণ্টা, জুন ০২, ২০১৮
ইইউডি/এইচএ/