ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পর্যটন

কমলদহের ট্রেইল ধরে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১৮
কমলদহের ট্রেইল ধরে কমলদহ ঝরনা | ছবি: বাংলানিউজ

খুব ভোর থাকতেই পৌঁছে গেলাম সীতাকুণ্ডের বড় দারোগারহাটে। আমাদের দলের অন্যতম সদস্য তন্ময়ের এখানকার রাস্তাঘাঁট চেনা। তাই গাইড ছাড়াই রওনা দিলাম কমলদহের উদ্দেশ্যে।

বড় দারোগার হাট থেকে ঢাকার দিকে কিছুক্ষণ হাঁটার পর হাতের ডান দিকে একটা ইট ভাটা। ভাটা পার হয়ে মাটির রাস্তা ধরে হাঁটা শুরু করলাম।

কিচ্ছুক্ষণ হাঁটার পর পেয়ে গেলাম একটা ঝিরিপথ। আরও কিছুক্ষণ হাঁটার পরে একটা খালের মতো জায়গা, পানি প্রায় বুক সমান। ব্যাগ মাথায় করে নেমে পড়লাম সবাই।  

ওপাড়ে গিয়ে আবার হাঁটা শুরু করলাম। কিচ্ছুক্ষণ হাঁটার পরে পেয়ে গেলাম কমলদহ ঝরনা। তেমন কোনো পর্যটক ছিল না। ঝরনায় পানিও কম। কিছুক্ষণ পানিতে গা ভিজিয়ে নিলাম। এই ঝরনা পার হয়েই যেতে হয় পরের ঝরনাগুলোতে। ওঠার পথ খুবই পিচ্ছিল। পাথরের ওপর শ্যাওলা পড়ে আছে। খুব সাবধানে উঠলাম আমরা। একজন আরেকজনকে উঠার জন্য সাহায্য করেছিলাম।
​ক্যাপশন: কমলদহের ট্রেইল।  ছবি: বাংলানিউজআবার ট্রেইল ধরে হাঁটা শুরু করলাম। হাঁটার সময় ঝোপের মধ্যে একটা সাপ দেখলাম। সাপটাকে বিরক্ত না করে আমাদের গন্তব্যে হাঁটা শুরু করলাম আমরা।  

কিছুক্ষণ হাঁটার পরে পৌঁছে গেলাম ছাগলকান্দা ঝরনায়। আশেপাশে ঘন বন এবং জায়গাটা খুবই শীতল ছিল। পানি ছিল প্রায় বরফ শীতল। রংধনু দেখা যাচ্ছিল। ঝরনার নিচে দাঁড়িয়ে সবাই গা ভিজিয়ে নিলাম। শীতল পানিতে গায়ের লোম দাঁড়িয়ে যাচ্ছিল।
ক্যাপশন: কমলদহের ট্রেইল।  ছবি: বাংলানিউজকিচ্ছুক্ষণ পরে আমরা রওনা দিলাম এই ট্রেইলের আরও কিছু ঝরনার খোঁজে। পথে একপাল বানরের সাথে দেখা হল। একসময় পৌঁছে গেলাম থুতুলি ঝরনায়। গ্রীষ্মকাল হবার কারণে কোনো ঝরনাতেই তেমন পানি ছিল না। তাই সেদিনের মত ভ্রমণের ইতি টেনে বাসে করে রওনা দিলাম ঢাকার পথে।
ক্যাপশন: কমলদহের ট্রেইল।  ছবি: বাংলানিউজইফতারের সময় হয়ে এলে গাড়ি থামানো হল রাস্তার পাশের হোটেলে। দেখলাম এক হোটেল মালিক পরম যত্নে ইফতার তুলে দিচ্ছেন মানুষদের। রিকশাচালক থেকে শুরু করে সব ধরনের মানুষই সেখানে ইফতারের জন্য বসেছেন।  

সেই হোটেলে গিয়ে বসে পড়লাম। অর্ডার করলাম ইফতার। সবার সাথে বসে অপেক্ষা করতে লাগলাম আযানের জন্য। আযান দিলে ইফতার করা শুরু করলাম। হোটেল মালিক লক্ষ্য করছিলেন কার প্লেট খালি। খালি হলেই বিতরণের জন্য বানিয়ে রাখা ইফতার পৌঁছে যাচ্ছে ওই প্লেটে। হোটেলে আমরা প্রায় ৫০/৬০ জন ছিলাম। মালিক কাউকেই আলাদা ভাবে দেখেননি। সবাইকে সমান ভাবে ইফতার খাওয়াচ্ছিলেন তিনি। নিজের খরচে অচেনা মানুষকে খাওয়ানো মালিকের তৃপ্ত মুখটা আমার সারা জীবন মনে থাকবে।

বাংলাদেশ সময়: ১০২০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১৮
এনএইচটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।