তাই ঈদের ছুটিতে চলে আসতে পারেন বরিশাল, ঝালকাঠি ও পিরোজপুর জেলায় জলের স্বর্গরাজ্যে। যেখানে দেখা মিলবে নৌকায় ভাসমান বাজারের।
বরিশাল বিভাগের ঝালকাঠি সদর উপজেলার ভিমরুলিতে, পিরোজপুরের আটঘর-কড়িয়ানা, নাজিরপুরের বৈঠাকাঠা ও বরিশালের বানারীপাড়ার সদর উপজেলা, উজিরপুর উপজেলার হারতা এলাকায় ঘুরলে দেখা যাবে শান্ত জলে মানুষের জীবন-জীবিকায় বৈঠার নৌকার ভূমিকা কতটা প্রবল। আর এসব এলাকায়ই ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটে জলে বসে। তাই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বরিশাল, পিরোজপুর আর ঝালকাঠিতে গড়ে উঠেছে অনেক ভাসমান হাট-বাজার।
ঝালকাঠি জেলার ভিমরুলি হাট মূলত খালের একটি মোহনায় বসে। সারাবছর ধরে চলা এ হাট জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত বেশি জমজমাট থাকে। প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চলা এ হাটে ক্রেতা (পাইকার), বিক্রেতা (চাষি) সবাই খালের মধ্যে নৌকা নিয়ে চলাচল করে।
একইভাবে পিরোজপুর জেলার নেছারাবাদ উপজেলার আটঘর, কুড়িয়ানা, জিন্দাকাঠি খালে স্বাভাবিক সময়ে সপ্তাহের নির্ধারিত সময়ে হাট বসলেও বর্ষা মৌসুমে প্রতিদিনই হাট বসে। তবে এ হাট ভোর হওয়ার আগে শুরু হয়ে সকাল ৯টার মধ্যেই শেষ হয়ে যায়। ভিমরুলি আর আটঘর, কুড়িয়ানা ও জিন্দাকাঠি খালে পেয়ারার মৌসুম ছাড়াও বছরের অন্যান্য সময়ে উৎপাদিত ফসল, যেমন-শাকসবজি, লেবু, মরিচ, কচু, ডাব, মিষ্টিকুমড়া, কলা, আমড়া, করলাসহ বিভিন্ন ফসল বিক্রি হয়ে থাকে। যেসব পণ্য পাইকাররা কিনে সড়ক নয়তো নৌ-পথে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যান।
এদিকে শনিবার ও মঙ্গলবার বরিশালের বানারীপাড়ার সন্ধ্যা নদী ঘিরে বসে ধান-চালের ভাসমান হাট। যেখানে দেশীয় মোটা চালসহ নানান প্রজাতির চাল ও ধান পাওয়া যায়। তবে সকাল ৮টার পরে জমজমাট হয় এসব হাট।
অপরদিকে নাজিরপুরের বৈঠাকাঠা, উজিরপুরের হারতা, মাহমুদকাঠিসহ বেশ কয়েকটি জায়গায় বসে সবজির ভাসমান বাজার। যেগুলোর বেশিরভাগই নির্ধারিত দিনে বসে।
এসব হাটে যেতে হলে ঢাকা থেকে বরিশাল-ঝালকাঠি কিংবা বানারীপাড়া-স্বরূপকাঠীতে লঞ্চে করে আসতে হবে। তবে বাসে করেও আসা যাবে। ঝালকাঠি থেকে সড়কপথে ভীমরুলি, আটঘর, কুড়িয়ানাতে এখন বাস ও ভাড়ায়-চালিতে থ্রি-হুইলারসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করে। আবার ইঞ্জিনচালিত নৌকাও রয়েছে। একইভাবে বানারীপাড়া ও স্বরূপকাঠী থেকে সড়ক ও নৌ-পথে ভীমরুলি, আটঘর কুড়িয়ানা যাওয়া যায়। তবে বরিশাল থেকে সড়কপথেই যেতে হবে। অপরদিকে বানারীপাড়ায় কিংবা উজিরপুরের হারতার ভাসমান হাট দেখতে হলে বরিশাল থেকে সরাসরি সড়কপথে বাসযোগে যাওয়া যাবে।
আর ভাসমান বাজারে ঘুরে দেখতে কিংবা পেয়ারাসহ বিভিন্ন সবজির বাগানে যেতে হলে হাটগুলো থেকে নৌকা কিংবা ইঞ্জিনচালিত ট্রলার নিয়ে নিতে হবে। দাম-দর করে নিলে অল্প ভাড়ায় মিলবে নৌযানের দেখা। তবে স্বাচ্ছন্দ্য পেতে চাইলে ইঞ্জিনের চাইতে এ অঞ্চলে বৈঠা নৌকায় ঘোরা অনেক ভালো। সাঁতার না জানলে লাইফ জ্যাকেট সঙ্গে নেওয়া ভালো। আর ভ্রমণ খরচ কমাতে চাইলে দলবেঁধে আসা যায়।
বাংলাদেশ সময়: ০৮১১ ঘণ্টা, জুন ০৪, ২০১৯
এমএস/জেডএস