এদেশের বেশিরভাগ শহর-গ্রামই নদীকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা। বাঙালি এতটাই নদীপ্রিয় যে, যেখানে নদী নেই সেখানে কৃত্রিম হ্রদ বানিয়ে নদীর আবেশ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়।
মাদারীপুরের পদ্মার তীরে বিনোদনপিপাসুদের পছন্দের জায়গা শাসনবাঁধ। নবনির্মিত বাঁধটিকে কেন্দ্র করে জমজমাট নগরীর এই এলাকা। লোকালয়ের কাছে হওয়ায় স্বল্পখরচে মনের ক্লান্তি দূর করতে শাসনবাঁধে ছুটে আসেন অনেকেই। সব বয়সের মানুষের পদচারণায় মুখর বাঁধ এলাকাটি। কাওড়াকান্দি ঘাটের (পুরাতন ঘাট) পদ্মার তীরে প্রায় অর্ধ কিলোমিটার দীর্ঘ শাসনবাঁধটি অবসর কাটানোর জনপ্রিয় স্থানে পরিণত হয়েছে। বাঁধের ওপর নানা বয়সীদের বিকেলে ও সন্ধ্যায় সময় কাটাতে দেখা যাচ্ছে। প্রতিদিন অন্তত রাত ১০টা পর্যন্ত মানুষের পদভারে জমজমাট থাকে জায়গাটি।
অনেক দূর থেকেও মানুষ প্রতিদিন ঘুরতে আসে পদ্মার পাড়ে। এ সময় তীরে বসে গল্প করা, বাদাম চিবুনো, ছবি তোলা ছাড়াও ডিঙি নৌকায় নদীতে ভেসে বেড়ায় বিনোদনপিপাসুরা।
স্থানীয়রা জানান, কাওড়াকান্দি ঘাটটি সরিয়ে কাঁঠালবাড়ীতে নেওয়ার পর নদীর তীরে মানুষের আনাগোনা কমে গিয়েছিল। এখন শাসনবাঁধের কারণে এলাকাটি প্রাণ ফিরে পেয়েছে। পদ্মার তীরে প্রচুর মানুষ আসতে শুরু করায় স্থানীয় বাজারটিও বেশ জমজমাট হয়ে ওঠেছে। নতুন করে অর্থ উপার্জনের পথ খুঁজে পেয়েছেন অনেক ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ী।
ঘুরতে আসা শিবচরের এক পর্যটক বাংলানিউজকে বলেন, দূরে কোথাও যাওয়ার সুযোগ হয় না। তাই বাড়ির পাশেই পদ্মানদী থাকায় প্রায়ই ঘুরতে আসি।
স্থানীয় বাসিন্দা সোহাগ বাংলানিউজকে বলেন, এখানে শুধু অবসর কাটানোর জন্যই না অনেকে হাঁটতেও আসেন। স্বাস্থ্য সচেনতন ও ডায়াবেটিস রোগীদের অনেকেই ভোর ও বিকেলে শাসনবাঁধে হাঁটেন নিয়মিত। কলেজছাত্র জাহিদ বলেন, বাঁধে এলে নদীর ঢেউয়ের শব্দ আর নির্মল বাতাসে ক্লান্তি দূর হয়ে যায় মুহূর্তেই।
জানা গেছে, ঈদ, পূজা ও বিভিন্ন উৎসবে শাসনবাঁধ লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে। অনেকে নদীতে গোসল করে শরীর জুড়ান। কেউ কেউ নৌকা নিয়ে চলে যান নদীর অনেক গভীরে। দূর থেকে শিক্ষার্থীরা পিকনিকও করতে আসেন এখানে।
কোলাহল থেকে কিছুটা দূরে একান্ত কিছু সময় কাটানোর জন্য পরিবার-পরিজন নিয়ে অনেকেই আসেন বাঁধ এলাকায়। আবার প্রিয়জন নিয়েও নদীর তীর ধরে ঘুরতে দেখা যায় তরুণ-তরুণীদের। কেউ আবার অবসাদ কাটাতে একাই ঘুরে বেড়ান।
কাঁঠালবাড়ী ও পদ্মাসেতু সংলগ্ন শাসনবাঁধ এলাকা বিনোদনের জন্য মাদারীপুরে আদর্শ স্থানে পরিণত হবে বলে মনে করেন স্থানীয়রা।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ০২, ২০১৯
কেএসডি/এএটি