পর্যটন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রকৃতির বহুরূপী সৌন্দর্যের দেশ বাংলাদেশ। পর্যটনে অপার সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও কাজে লাগাতে পারছে না দেশটি।
তথ্য বলছে, দেশের পর্যটন কেন্দ্রে প্রতি বছর ভ্রমণ করছে প্রায় ৯০-৯৫ লাখ পর্যটক। এর মধ্যে বিদেশি পর্যটক মাত্র দুই শতাংশ।
মার্কিন উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডির কম্প্রিহেনসিভ প্রাইভেট সেক্টর অ্যাসেসমেন্ট (সিপিএসএ) শীর্ষক এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, বাংলাদেশে পর্যটন কেন্দ্র ভ্রমণের উদ্দেশ্য নিয়ে আসে বিদেশিদের মাত্র পাঁচ শতাংশ।
প্রতিবেদন বলছে, বাংলাদেশ ভ্রমণে আসা বিদেশি নাগরিকদের সবচেয়ে বড় অংশই আসে তৈরি পোশাক খাতের ব্যবসায়িক প্রতিনিধি হিসেবে। যা মোট বিদেশির ৪০ শতাংশ। এরপরই রয়েছে উন্নয়ন খাতের বিভিন্ন কাজে
আসা বিদেশিরা। মোট বিদেশির মধ্যে এদের হার ২৫ শতাংশ।
এছাড়া বেসরকারি খাতে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ সংশ্লিষ্ট ও বিভিন্ন দূতাবাস সংশ্লিষ্টরা রয়েছে ১৫ শতাংশ করে। বিদেশিদের মধ্যে বাকি পাঁচ শতাংশ বাংলাদেশে আসছে প্রকৃত পর্যটক হিসেবে।
পর্যটন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালে এক লাখ ৫৮ হাজার ৯৪৮ জন, ২০১৫ সালে এক লাখ ৪১ হাজার ৯১৭ জন, ২০১৬ সালে দুই লাখ ৯৯৫ জন, ২০১৭ সালে দুই লাখ ৬৫ হাজার ৪৯১ জন, ২০১৮ সালে দুই লাখ ৬৭ হাজার ৭০৭ জন, ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত এক লাখ ৮৯ হাজার ৮৮৭ জন বিদেশি পর্যটন ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে আসেন।
এর মধ্যে কত সংখ্যক প্রকৃত পর্যটক তার কোনো সঠিক পরিসংখ্যান নেই। এদের অধিকাংশই ব্যবসায়িক ও উন্নয়ন সংস্থার কাজে বাংলাদেশে আসেন বলে ইউএসএআইডির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
সংশ্লিষ্টদের মতে, জিডিপিতে পর্যটন খাতের অবদান দুই শতাংশ ছাড়িয়েছে। তবে ভালো হোটেল, দক্ষ ও মানসম্মত সেবা, বিদেশি পর্যটকদের জন্য বিনোদন, নিরাপত্তা ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন বাড়ালে পর্যটনে অনেক এগিয়ে যাবে দেশ।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, পর্যটন খাতের অবকাঠামো উন্নয়নের অংশ হিসেবে কক্সবাজারে ২৫টি প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এগুলোতে প্রত্যক্ষভাবে বিনিয়োগ হবে ৩৭ হাজার কোটি টাকা। পরোক্ষভাবে বিনিয়োগ হবে এক লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা।
প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে কক্সবাজার বিমানবন্দর উন্নয়ন, আধুনিক হোটেল-মোটেল নির্মাণ, মহেশখালীতে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ, সোনাদিয়াকে বিশেষ পর্যটন এলাকা হিসেবে গড়ে তোলা, ইনানী সৈকতের উন্নয়ন, টেকনাফের সাবরাংয়ে ইকো ট্যুরিজম পার্ক নির্মাণ, শ্যামলাপুর সৈকতের উন্নয়ন, ঝিলংঝা সৈকতের উন্নয়ন, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণ, চকোরিয়ায় মিনি সুন্দরবনে পর্যটক যাতায়াতের জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও ডুলাহাজরা সাফারি পার্কের আধুনিকায়ন।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বাংলানিউজকে বলেন, খুব দ্রুত পর্যটনে দৃশ্যমান কিছু করতে চাই। আগামী ১০ বছরে পর্যটন খাত বদলে যাবে। জিডিপিতে বড় অবদান রাখবে পর্যটন খাত।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৫২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১৯
টিএম/এসএ