ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পর্যটন

ঈদেও সিলেটের পর্যটনে নিষেধাজ্ঞা, ব্যবসায় ধস

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট   | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৩ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০২০
ঈদেও সিলেটের পর্যটনে নিষেধাজ্ঞা, ব্যবসায় ধস প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য ঘেরা পর্যটন নগরী সিলেট

সিলেট: পর্যটন নগরী খ্যাত সিলেট। প্রতি ঈদে সিলেটকে ঘিরেই ভ্রমণের পরিকল্পনা থাকে পর্যটকদের।

সবুজে ঘেরা এ অঞ্চলের শীতল পাটির চা-বাগান মাড়িয়ে চলা, জাফলং, সোয়াম্প ফরেস্ট রাতারগুল অপরূপ সৌন্দর্য অবলোকন। প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য মাটিতে লুটায় সেই বিছানাকান্দি অথবা স্বচ্ছ জলরাশির লালাখাল, সাদা পাথরে গা ভাসিয়ে দেওয়া কিংবা মিনি কক্সবাজার হাকালুকির উত্তাল তরঙ্গে প্রমোদতরীতে ভেসে চলা।
 
এসবের পাশাপাশি অলিকূল শিরোমণি শাহজালাল (র.) ও শাহপরাণ (র.) মাজার জিয়ারতে আসেন ভক্ত আশেকান ও ভ্রমণপিপাসোরাও। সিলেটের এসব দর্শনীয় স্থান এবারো ঘুরে দেখা হচ্ছেনা পর্যটকদের।
 
বছরজুড়েই পর্যটকদের আনাগোনা লেগে থাকা এসব স্থানে ঈদেও থাকবে পিনপতন নীরবতা! করোনাকালে গত ঈদুল ফিতরের ন্যায় এবারো সিলেটের সব পর্যটন কেন্দ্রে যাতাযাতে জেলা প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকছে। কেবল করোনার কারণেই পর্যটন কেন্দ্রে জনসমাগমে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে রেখেছে জেলা প্রশাসন।
চ্ছ জলরাশির লালাখাল 
এ বিষয়ে সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজি এমদাদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, পর্যটন কেন্দ্রে পর্যটকদের সমগমে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়নি। জেলা কোভিড-১৯ বিষয়ক কমিটির সভায় এমন সিদ্ধান্তই নেওয়া হয়েছে।
 
সিলেট জেলা পুলিশের তরফ থেকে বলা হয়, করোনা ভাইরাস থেকে সুরক্ষায় পর্যটন এলাকায় লোক সমাগম বন্ধে তথা যাতায়াত না করতে জেলা প্রশাসনের নির্দেশনা ফলো করবে পুলিশ।
 
এদিকে, সিলেটে পর্যটন কেন্দ্রগুলোকে কেন্দ্র করে গত এক দশকে বেসরকারি উদ্যোক্তারা বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ করেছেন হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট, রেস্টুরেন্টসহ সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়। দুই ঈদে পর্যটকদের আগমনে এসব প্রতিষ্ঠানে ব্যবসা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। কিন্তু মহামারি করোনায় থমকে গেছে সিলেটের পর্যটন শিল্প।

এ বছরের ২৬ মার্চ সাধারণ ছুটি শুরুর দিন থেকেই এইখাতে স্থবিরতা নেমে এসেছে। এক এক করে বন্ধ হয়ে যায় হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট, রেস্তোরা। পর্যটক আগমনে নিষেধাজ্ঞা থাকায় ফাঁকা রয়েছে পর্যটন কেন্দ্রগুলো। এ কারণে ছাঁটাই হয়েছেন প্রায় ৯০ শতাংশ কর্মী। অনেকে ব্যবসা ছেড়ে বিকল্প আয়ের পথ খোঁজছেন। এমন একজন সিলেটের জাফলং ক্ষুধা রেস্টুরেন্টের স্বত্বাধিকারী শফিকুল ইসলাম বিক্রমপুরী। রেস্টুরেন্ট বন্ধ করে তিনি বিকল্প আয়ের সন্ধানে রয়েছেন।  
প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য ঘেরা পর্যটন নগরী সিলেট
সিলেটের হোটেল-মোটেল মালিকরা বলছেন, অনেক উদ্যোক্তারা ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছেন। প্রাত্যহিক সিলেটের হোটেল-মোটেল খাতে প্রায় ৩ কোটি টাকা ক্ষতি হচ্ছে। পবিত্র ঈদুল আজহায় কিছুটা ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার আশায় বুক বাধলেও তা আর সহসাই হচ্ছে না।
 
ব্যবসায়ীরা বলছেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনেই যদি পর্যটন কেন্দ্রগুলো উন্মুক্ত করে দেওয়া হতো, তবে ক্ষতি কিছুটা হলেও পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হতো।
 
সিলেট চেম্বার অব কমার্সের সহ সভাপতি ও নির্ভানা ইন কমপ্লেক্সের স্বত্বাধিকারী তাহমিন আহমদ বাংলানিউজকে বলেন, করোনা মহামারির কারণে গত ৪ মাস ধরে হোটেল বন্ধ রেখেছি। একই অবস্থা সবার বেলায়। প্রায় সব হোটেল মোটেল বন্ধ রয়েছে। এমন অবস্থায় কর্মচারীদের বেতন, ইউটিলিটি বিল এসব চালিয়ে নিয়ে যেতে হয়েছে। বাধ্য হয়েই অনেক কর্মী ছাঁটাই করতে হয়েছে আমাদের। এখনো অনেক কর্মচারীকে বহাল রেখেছি হোটেলের দেখাভাল করতে।
 
তিনি বলেন, এই ঈদে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যটন খুলে দেওয়া হলে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করা যেতো। এ ঈদেও পর্যটক না আসলে ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া উপায় দেখছি না।
 
বাংলাদেশ সময়: ১০১০ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০২০
এনইউ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।