ভ্রমণ করতে কে না ভালোবাসে! আমরা সবাই ঘুরতে পছন্দ করি। সুন্দর স্থানের সৌন্দর্য উপভোগ করতে সবাই চায়! এ কারণেই পর্যটকরা সবসময় নতুন নতুন স্থানে বেড়াতে যাওয়ার অপেক্ষায় থাকেন।
পর্যটকদের মধ্যে অনেকেই থাকেন যাদের রহস্যময় ও ভয়ঙ্কর স্থানে যাওয়ার একটু বাড়তি আগ্রহ থাকে।
প্রথম শুনে থাকলে হয়তো অবাক হবেন যে- বিশ্বের বেশ কিছু নিষিদ্ধ স্থান রয়েছে, যেখানে পর্যটকদের যাওয়ার অনুমতি নেই। অনেকেই সেসব স্থানকে ভৌতিক বা রহস্যময় হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।
আসলে কী আছে সেসব স্থানে? ভূত বা অদৃশ্য আত্মা নেই তো?
প্লোভেগ্লিয়া, ইতালি
ভেনিস এবং লিডোর মাঝে অবস্থিত উত্তর ইতালির ছোট্টো এবং সুন্দর একটি দ্বীপ হলো পোভেগ্লিয়া। তবে এটি পরিত্যক্ত দ্বীপ। কথিত আছে, দ্বীপটিতে বসবাস করে অশরীরী প্রেতাত্মারা। এই দ্বীপে প্রবেশের সুযোগ থাকলেও সেখানে কেউ যাওয়ার সাহস দেখান না। সেখানে রয়েছে একটি মানসিক হাসপাতাল। হাসপাতালটি ১৯২২ সালে চালু হয়ে ১৯৬৮ সালে বন্ধ হয়ে যায়। আরও আগে সেখানে প্লেগ রোগীদের কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হত। দ্বীপটিতে ভয়ংকর সব অপ্রাকৃতিক ঘটনা ঘটার ইতিহাস রয়েছে। যে কারণে এটি ধীরে ধীরে পরিত্যক্ত হয়ে যায়। সেখানে একবার প্রবেশ করলে বেঁচে ফেরা নাকি কঠিন!
শ্যাটু ডি ব্রিস্যাক, ফ্রান্স
ফ্রান্সের সবচেয়ে দীর্ঘ এবং সবচেয়ে সুন্দর দুর্গগুলো একটি হলো শ্যাটু ডি ব্রিস্যাক। এটি সাত তলা। এই দুর্গকে বলা হয় গ্রিন লেডি বা শার্লট ভূতের বাড়ি। কথিত আছে, রাজা সপ্তম চার্লসের অবৈধ কন্যা ছিলেন শার্লট। স্ত্রীর বিবাহ বহির্ভুত সম্পর্কের কথা জানতে পেরে শার্লটকে নৃশংসভাবে হত্যা করেন তার স্বামী। হত্যার সময় তাঁর পরনে ছিল সবুজ রঙের পোশাক। এরপর তার আত্মাকে নাকি টাওয়ার রুমে ঘুরতে দেখেছেন অনেকে! সবুজ পোশাক পরে শার্লটের অতৃপ্ত আত্মা এই প্রাসাদে ঘুরে বেড়ায় বলে দাবি অনেকের।
হাইগেট গোরস্থান, ইংল্যান্ড
কবরস্থানটি অবস্থিত উত্তর লন্ডনে। এটি আবিষ্কৃত হয় ১৮৩৯ সালে। এই জায়গাকে পৃথিবীর সবথেকে ভৌতিক স্থানগুলোর মধ্যে একটি বলে বিবেচনা করা হয়। এই গোরস্থানে প্রায় ১,৭০,০০০ জনকে কবর দেওয়া হয়েছিল। এই স্থানে কিছু অতিপ্রাকৃত ঘটনার খবর পাওয়া যায়। এর মধ্যে প্রচলিত অন্যতম ভয়ঙ্কর বিষয় হলো ৭ ফুট লম্বা ভ্যাম্পায়ারের গল্প। সেই ভ্যাম্পায়ারের সম্মোহনী লাল চোখ সম্পর্কেও গল্প প্রচলিত আছে। সেখানকার তাপমাত্রা আশ্চর্যজনকভাবে কম। ভ্যাম্পায়ারের বাসস্থান বলেই নাকি তাপমাত্রার এই হেরফের। এমনটাই বিশ্বাস অনেকের।
ভানগড় দুর্গ, রাজস্থান
এই দুর্গের ভেতর সন্ধ্যা ছয়টার পর প্রবেশ নিষেধ। ভারতের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ভৌতিক স্থান ভানগড়ের দুর্গ। অনেকেই বিশ্বাস করেন দুর্গের ভেতর অশরীরীরা বাস করে। সন্ধ্যা নামলেই তাদের নাকি শক্তি বাড়তে থাকে। যে কারণে দিনের আলো নিভে এলেই তাদের এলাকা ফাঁকা করে দিতে হয়! দুর্গের দেয়াল এবং দুর্গ মধ্যস্থ কুয়োর মধ্যবর্তী জায়গাজুড়ে রয়েছে বেশ কয়েকটি প্রাচীন গাছ। সেই গাছের ডালের ছায়া কুয়োর অদূরে এসে পৌঁছোলেও কুয়ো অবধি যায় না। জনশ্রুতি, শাসকরা যাদের পছন্দ করতেন না বা শাস্তি দিতে চাইতেন তাদেরকে ভানগড়ের দুর্গের এই কুয়োতে ফেলে দিতেন। দুর্গের ভেতর নাকি কালাজাদুর ওস্তাদরা বাস করতেন। কালাজাদুর নানা নিদর্শন এখনও রয়েছে সেখানে।
দ্য কুইন মেরি, ক্যালিফোর্নিয়া
এটি ছিল একটি যাত্রীবাহী জাহাজ। এ জাহাজ প্রায় ত্রিশ বছর ধরে সমুদ্রে ঘুরে বেড়ানোর পরে এটি ক্যালিফোর্নিয়ার লং বিচে স্থায়ীভাবে নোঙর ফেলে। সমুদ্রে ভেসে থাকার সময় এই জাহাজের ভেতরে ৫০ জনেরও বেশি লোক প্রাণ হারিয়েছিলেন। এরপর থেকে এই জাহাজকে ভৌতিক ঘোষণা করা হয়। জাহাজের ভেতরে অতৃপ্ত আত্মারা বিরাজ করে, এমনটাই বিশ্বাস অনেকের।
বাংলাদেশ সময়: ০৮১৫ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০২২
এনএইচআর