ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পর্যটন

সাজেকে মেলেনি রুম, তাঁবুতেই রাত কাটিয়েছেন অনেকে

মঈন উদ্দীন বাপ্পী, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ৬, ২০২২
সাজেকে মেলেনি রুম, তাঁবুতেই রাত কাটিয়েছেন অনেকে সাজেকের ছবি

রাঙামাটি: দুর্গাপূজার ছুটি বুধবার (৫ অক্টোবর), শুক্র-শনি (৭-৮ অক্টোবর) সাপ্তাহিক ছুটি আর রোববার (৯ অক্টোবর) পবিত্র ঈদুল মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে ছুটি। এজন্য মাঝখানের বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) ছুটি নিয়ে অনেকেই পেয়ে গেছেন টানা পাঁচদিনের ছুটি।

লম্বা এ ছুটিতে পর্যটকদের ঢল নেমেছে রাঙামাটিতে। সেই সঙ্গে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দের্যের লীলাভূমি দুর্গম সাজেকেও এখন পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়।

শহরের পর্যটন এলাকার ঝুলন্ত সেতু, পলওয়েল পার্ক, ডিসি বাংলো পার্ক এবং কাপ্তাই হ্রদ, সুবলং ঝরণাসহ জেলা গুরুত্বপূর্ণ স্পটগুলোতে পর্যটকদের অভয়রাণ্যে ভরে গেছে।

রাঙামাটির পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলছেন- রাঙামাটিতে এইবার বেশি পর্যটক এসেছে। হোটেল-মোটেলগুলো ৯০ভাগ বুকিং আছে। ব্যবসায়ী এবং পর্যটন সংশ্লিষ্ট কর্মচারীরা পুরোদমে ব্যস্ত সময় পার করছে।

এদিকে সারাদেশের জন্য আলোচিত পর্যটন স্পট সাজেকের রুইলুই, হেলিপ্যাড, কংলাক পাহাড় ও ঐতিহ্যবাহী লুসাই গ্রামে পর্যটকদের ভিড় লেগে আছে। তবে পর্যটকের বাড়তি চাপের কারণে অনেকে রিসোর্ট বা কটেজে জায়গা না পেয়ে রাত কাটাচ্ছেন খোলা আকাশের নিচে তাঁবু টাঙিয়ে।

সাজেকের পর্যটন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পুরো এলাকায় বর্তমানে প্রায় পাঁচ হাজার পর্যটক অবস্থান করছেন। আগামী আট তারিখ পর্যন্ত পুরো সাজেক ব্যস্ত সময় পার করবে।

রাজধানী ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক ব্যবসায়ী মো. শাহ এমরান বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) বলেন, গতকাল বিকেলে পরিবার-পরিজন নিয়ে সাজেকে এসেছি। কোনো রুম না পেয়ে হোটেল প্রাঙ্গণে তাঁবু টাঙিয়ে রাত কাটাচ্ছি।

বরিশাল থেকে বেড়াতে আসা আহসান হাবিব বলেন, সাজেকের গল্প শুনেছি। এবার বন্ধু-বান্ধব নিয়ে বাস্তবে এসেছি। আগে রুম বুকিং দেওয়ায় আমাদের কষ্ট করতে হয়নি। তবে এখানে পর্যটকের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় মনের মতো সময় কাটাতে পারছি না।

সাজেট ট্রাভেল গাইডের স্বত্বাধিকারী  মো. ইউনুস আরেফিন বলেন, সাজেকে অসংখ্য ট্যুরিস্ট এসেছেন। হোটেল-মোটেলগুলো চলতি মাসের আট তারিখ পর্যটন্ত বুকিং রয়েছে। পর্যটকরা রুম না পেয়ে হোটেল প্রাঙ্গণে তাঁবু টাঙিয়ে রাত কাটাচ্ছেন। এজন্য আবার তাদের হোটেল কর্তৃপক্ষকে টাকা দিতে হচ্ছে।

সাজেক রিসোর্ট ও কটেজ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মিংথাংজাওয়া লুসাই জেরি বলেন, গত তিনদিনে সাজেকে অসংখ্য পর্যটক এসেছেন। কোনো রিসোর্ট ও কটেজ খালি নেই। ফলে অনেককে খোলা আকাশের নিচে তাঁবু টাঙিয়ে থাকতে হচ্ছে।

সাজেক হোটল মালিক সমিতির এ নেতা আরও বলেন, এ মাসের আট তারিখ পর্যন্ত সাজেকের সব রুম বুকড (আগাম ভাড়া নেওয়া)। যে কারণে আমরা আট তারিখ পর্যন্ত নতুন কোনো বুকিং নিচ্ছি না।

রাঙামাটি ট্যুরিস্ট বোট মালিক সমিতির সহ-সভাপতি রমজান আলী বলেন, টানা ছুটিতে রাঙামাটি শহরে পর্যটক বেড়েছে। আমাদের সমিতির বোটগুলো ভালো আয় করছে। আশা করছি, এবার আমাদের আয়ের পরিমাণটা অনেক বেড়ে যাবে।

রাঙামাটি পর্যটন করপোরেশনের ম্যানেজার সৃজন বিকাশ বড়ুয়া বলেন, রাঙামাটিতে অনেক পর্যটক আসছেন। আমাদের ৯০ ভাগ বুকিং রয়েছে। আর কয়েকদিন এমন চললে আমাদের আয় বেড়ে যাবে, সরকার পাবে ব্যাপক রাজস্ব।

মঙ্গলবার রাতে প্রবল বৃষ্টিপাতে পাহাড় ধস হওয়ায় বুধবার সাজেগগামী এবং সাজেক থেকে খাগড়াছড়িগামী হাজার-হাজার পর্যটক আটকা পড়েন। এরপর সেনাবাহিনী টানা ১০ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে সড়ক থেকে মাটি সরিয়ে নিলে গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৬, ২০২২
এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।