মেলার প্রবেশদ্বার থেকে শুরু হয়েছে অভ্যন্তরীণ সড়ক নির্মাণ কাজ। চারদিকে হাজারও শ্রমিকের কর্মযজ্ঞ।
যদিও মেলাটি শুরু হওয়ার কথা ছিল ১ জানুয়ারি থেকে। কিন্তু একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে এবার ৯ জানুয়ারি মেলাটির উদ্বোধন করা হবে।
মেলার ঠিক মধ্যখানে নির্মিত হচ্ছে তিন তলা বিশিষ্ট প্যাভিলিয়ন। লোহা দিয়ে দাঁড় করানো হয়েছে এটি। এখন এর ইন্টেরিয়র নকশার কাজ চলছে। একটি ফার্মের মাধ্যমে এটা নির্মিত হচ্ছে। প্যাভিলিয়নটি নির্মাণের প্রধান ডিজাইনার তরিকুল ইসলাম জুয়েল বাংলানিউজকে বলেন, লোহার অবকাঠামোগত কাজ অন্যারা করেছেন। আমরা এখন ভেতরের নকশার কাজ করছি। আশা করছি চার তারিখের মধ্যে সব কাজ শেষ হবে। ইতোমধ্যেই ৬০ শতাংশ কাজ হয়ে গেছে।
এদিকে, শেষ সময়ে এসে মাত্র শুরু হয়েছে মেলার দুই প্রান্তে সুন্দরবন ইকোপার্ক নির্মাণ কাজ। মেলায় এবার মা ও শিশু কেন্দ্র, শিশুপার্ক, ই-পার্ক, এটিএম বুথ থাকবে। তবে সময় এগিয়ে আসলেও এসব কাজ চোখে পড়েনি এখনও।
এবারের মেলায় স্থান পাবে সংরক্ষিত নারী স্টল ২০টি, প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন ৬০টি, প্রিমিয়ার মিনি প্যাভিলিয়ন ৩৮টি, সাধারণ প্যাভিলিয়ন ১৮, সাধারণ মিনি প্যাভিলিয়িন ২৯টি, প্রিমিয়ার স্টল ৬৭টি, রেস্টুরেন্ট তিনটি, সংরক্ষিত প্যাভিলিয়ন নয়টি, সংরক্ষিত মিনি প্যাভিলিয়ন ছয়টি ও বিদেশি প্যাভিলিয়ন ২৬টি। আর এসবের কাজ অনেকাংশে এগিয়ে গেছে।
তবে সবেমাত্র শুরু হয়েছে ২০১টি সাধারণ স্টল ও ২২টি ফুড স্টলের কাজ। শুধুমাত্র নির্দিষ্ট সীমানায় বাঁশ গেড়ে রাখা হয়েছে। এখানে রেডিমেড গার্মেন্টস, হোমটেক্স, ফেব্রিকস পণ্য, হস্তশিল্পজাত, পাটজাত, গৃহস্থালি ও উপহারসামগ্রী, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, তৈজসপত্র, সিরামিক, প্লাস্টিক, পলিমার পণ্য, কসমেটিকস হারবাল ও প্রসাধনী সামগ্রী, খাদ্য ও খাদ্যজাত পণ্য, ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিকস সামগ্রী, ইমিটেশন ও জুয়েলারি এবং নির্মাণসামগ্রী ও ফার্নিচার এসব স্টলে থাকবে।
ছোট স্টলের কাজ শুরু করেছেন ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম। তিনি স্বল্প পরিসরে থ্রি-পিস ও লেডিস আইটেম বিক্রি করবেন। মেলা এলাকায় তার সঙ্গে কথা হয় বাংলানিউজের। তখন তিনি বলেন, আমরা স্টলের কাজ দেরিতে শুরু করেছি। ছোট স্টল বানাতে সময় লাগবে না তাই। এর জন্য হাতে এখনও সময় আছে।
মেলায় এবার এ পর্যন্ত ৪৩টি বিদেশি প্রতিষ্ঠান আবেদন করেছে। গতবারের থেকে এবার বিদেশিদের আগ্রহ অনেক বেশি। তাছাড়া মেলাকে আরও দৃষ্টিনন্দন করতেই এর প্রধান গেট করা হবে মেট্রোরেলের আদলে। পাশাপাশি সরকারের উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের থিমও থাকবে মেলাজুড়ে।
দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানের স্টল ও প্যাভিলিয়ন মিলিয়ে প্রায় সাড়ে ৫০০ প্রতিষ্ঠান অংশ নেবে বাণিজ্য মেলায়। এবার নতুন করে চার থেকে পাঁচটি প্রতিষ্ঠান আবেদন করেছে। তবে আমাদের দেশিয় প্যাভিলিয়ন মাত্র ২৬টি। তাই এবার একক দেশগুলোকে প্রাধান্য দেওয়া হবে। দেশগুলো হলো- ভারত, পাকিস্তান, চীন, ব্রিটেন, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া, ইরান, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, ভুটান, নেপাল, মরিশাস, ভিয়েতনাম, মালদ্বীপ, রাশিয়া, আমেরিকা, জার্মানি, সোয়াজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, হংকংসহ বিভিন্ন দেশ।
মেলা প্রসঙ্গে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মফিজুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, দ্রত গতিতে মেলার প্রস্তুতির কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া আমাদের হাতে বেশ কিছু দিন সময় আছে এখনও।
তিনি বলেন, আশা করছি নির্দিষ্ট সময়ের আগে কাজ শেষ হবে। বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের নির্দেশনায় আমরা কাজ করছি।
বিদেশিদের সাড়া প্রসঙ্গে সচিব বলেন, এবার বিদেশিদের আগ্রহ অনেক বেশি। আশা করছি দেশি-বিদেশিদের অংশগ্রহণে ব্যাপক সাড়া মিলবে এবারের মেলায়। এক মাসব্যাসী এ আন্তর্জাতিক মেলা চলবে ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৮
এমআইএস/টিএ