ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বাণিজ্যমেলা

জনবল সংকটে পেছালো বাণিজ্য মেলার স্থায়ী কেন্দ্র হস্তান্তর

গৌতম ঘোষ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৪৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৯
জনবল সংকটে পেছালো বাণিজ্য মেলার স্থায়ী কেন্দ্র হস্তান্তর

ঢাকা: রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) জনবল সংকট ও নির্মাণ কাজ শতভাগ না হওয়ায় বাণিজ্য মেলার স্থায়ী প্রদর্শনী কেন্দ্র হস্তান্তর প্রক্রিয়া চার মাস পিছিয়ে যাচ্ছে।

টেলিসংযোগ ও বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় এক্সিবিশন সেন্টারের কাজ শতভাগ সম্পন্ন করতে পারেনি নির্মাণাকারী প্রতিষ্ঠান।  

চলতি ডিসেম্বর মাসেই ‘বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার’ নামে স্থায়ী বাণিজ্যমেলা কেন্দ্রটি হস্তান্তরের কথা ছিল।

 

ইপিবি সূত্রে জানা গেছে, জনবল নিয়োগের জন্য ১০০ জনের একটি চাহিদা পত্র বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠাচ্ছে ইপিবি। এক্সিবিশন সেন্টারের জন্য নিজস্ব জনবল নিয়োগসহ এপ্রিল মাসের মধ্যে টেলিসংযোগ ও বিদ্যুতের কাজ সম্পন্ন হলে চীনা প্রতিষ্ঠানটি মে মাসে এক্সিবিশন সেন্টারটি হস্তান্তর করতে পারবে।  

এ বিষয়ে ইপিবির মহাপরিচালক অভিজিৎ চৌধুরী বাংলানিউজকে জানান, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের পূর্বাচল উপশহর এলাকায় ২০ একর জমির ওপর বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারের কাজ এখনও শতভাগ শেষ করতে পারেনি চীনা প্রতিষ্ঠান। যদিও চলতি ডিসেম্বরেই তা বুঝিয়ে দেয়ার কথা ছিল। তারা মে মাস পর্যন্ত সময় চেয়েছে।  

এতো বড় একটি সেন্টার পরিচালনার জন্য যথেষ্ট জনবলও ইপিবির নেই জানিয়ে তিনি বলেন, নতুন করে ১০০ জনবল সৃষ্টির প্রস্তাব বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হচ্ছে।

মহাপরিচালক বলেন, ‘পূর্বাচলে স্থায়ীভাবে বাণিজ্য মেলা করার জন্য আমরা সরকারের কাছে ৩৮ একর জমি চেয়েছিলাম। পাওয়া গেছে ২৬ একর। ২০ একর জমির ওপর এক্সিবিশন সেন্টার নির্মাণ কাজ শেষ। ৬ একর জমিতে এখনও কিছু স্থাপনা নির্মাণ বাকি। ’

তিনি জানান, রাজউকের কাছে আরো ১২ একর জমির প্রস্তাব দেয়া আছে। ওই জমি পেলে কাজ শুরু করা হবে। আশা করা যাচ্ছে আগামী বাণিজ্য মেলা সেখানেই হবে।  

প্রতিবছর পহেলা জানিুয়ারি থেকে শুরু হয় ঢাকা আর্ন্তজাতিক বাণিজ্য মেলা। চলে মাসব্যাপী। দেশ এবং দেশের বাইরে থেকে ক্রেতারা সমবেত হন এই পণ্য মেলায়। আগের মতো এবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে।  

ইপিবি সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীতে বাণিজ্য মেলার স্থায়ী কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল বর্তমান সরকারের প্রথম মেযাদের পরপরই। শুরুতে ২৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়। সে সময় রাজধানীর তেজগাঁওয়ে স্থান নির্বাচন করা হলেও জমি স্বল্পতার কারণে সেখানে তা বাস্তবায়িত হয়নি। এরপর পূর্বাচলে ৭৯৬ কোটি টাকা ব্যয়ে এ কেন্দ্র নির্মাণের কাজ হাতে নেওয়া হয়। কিন্তু প্রকল্পের জন্য নির্ধারিত ৩ বছর মেয়াদ পার হয়ে যায়, অর্ধেক কাজ শেষ না হওয়ায়। নতুন করে প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় বাড়ানো হয়। পরে ব্যয়ও বাড়ানো হয় ১৭০ কোটি টাকা। ২০০৯ সালে নেওয়া এ উদ্যোগটি বাস্তবায়নে সময় গিয়ে দাঁড়াল ১১ বছর।

সূত্র আরও জানায়, চীনের অনুদান ৬২৫ কোটি ৭০ লাখ এবং সরকারি তহবিলের ১৭০ কোটি ৩১ লাখ টাকা নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়। পরে অতিরিক্ত ১৫ একর ভূমি অধিগ্রহণ, নতুন স্থাপনা নির্মাণ, সেন্টারের পরিসর বৃদ্ধি, রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাকরণসহ বিভিন্ন কারণে ১৭০ কোটি ৬৭ লাখ টাকা বাড়িয়ে মোট ব্যয় ধরা হচ্ছে ১ হাজার ৩০৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা। সেইসঙ্গে মেয়াদ ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দেশে বিশেষায়িত বাণিজ্য মেলা আয়োজন করার জন্য একটি স্থায়ী কেন্দ্র স্থাপন করায় দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে। এই সেন্টার নির্মাণের মাধ্যমে স্থানীয় পণ্যের প্রতিযোগিতা বাড়বে এবং বাণিজ্যিক ও প্রাতিষ্ঠানিক পরিবেশের উন্নয়ন ঘটবে। এতে দেশের বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নত হওয়ার পাশাপাশি অর্থনৈতিক উন্নয়ন জোরদার হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৯ 
জিসিজি/এজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।