বুধবার (৮ জানুয়ারি) রাজধানীর শেরে বেংলা নগর এলাকায় চলমান বাণিজ্যমেলা ঘুরে দেখা গেছে এ চিত্র। মূলত বিকেল বেলায় মেলা প্রাঙ্গণে বাড়তে শুরু করেছে দর্শনার্থীদের ভিড়।
ওদিকে ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাণিজ্যমেলায় প্রথম দিকে ছাড় থাকলেও দাম বেশি থাকে। পরে এই দাম কমে যায়। তাছাড়া তখন কালেকশনও বাড়ে। সবমিলিয়ে শেষের দিকে কেনাটাই ভালো বলে মনে করেন আগত দর্শনার্থীরা। তবে বাণিজ্য ঢাকা ছাড়া ঢাকার বাইরের দর্শনার্থীরা এখনও আসা শুরু করেনি। তারা সাধারণত সরকারি ছুটির দিনে এবং মেলার মাঝামাঝি সময়ের পর থেকে আসা শুরু করবে বলেও জানা গেছে। রাজধানীর মিরপুর থেকে আগত বেসরকারি কোম্পানিতে কর্মরত ইফাদ রহমান বাংলানিউজকে বলেন, অফিস শেষে মেলায় ঘুরতে এসেছি। কিনছি না কিছুই কিন্তু দেখছি আগে। পরে কিনবো। সাধারণত মেলার মাঝামাঝি সময় পার হওয়ার পর দেখা যায় নতুন নতুন পণ্য আসে। সাধারণত মাসব্যাপী এ মেলায় এ ধরনেরই হয়। আর কিছু পণ্য সবসময় একই থাকে যেমন আসবাবপত্র। এগুলো আবার পরে দাম কমিয়ে দেয় তখন কিনবো।
রাজধানীর শ্যামলী এলাকার বাসিন্দা ঝুমা আক্তার জানান, মেলার এবারের আসর কেমন সেজেছে তাই এখন দেখতে এসেছি। তেমন কিছু কেনাকাটা করার ইচ্ছা নেই কেননা আত্মীয়-স্বজনরাও আসবেন এই মেলায় গাজীপুর সাভার থেকে। তখন সবাই একসঙ্গে কেনাকাটা করবো। এখন রান্নাঘরের প্রয়োজনীয় কিছু জিনিসপত্র কম দামে পাচ্ছি বলে কিনছি।
এদিকে দেশের একমাত্র আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় কোনো নতুন পণ্যের আকর্ষণ থাকেনা এবং সচরাচর বাইরের সব পণ্য পাওয়া যায় সেগুলো এখানে প্রদর্শিত হয় বলে অভিযোগ উঠেছে দর্শনার্থীদের পক্ষ থেকে।
শফিকুল মিরাজ নামে তেমনি একজন দর্শনার্থী বাংলানিউজকে বলেন, গতবার মেলায় দেখেছিলাম এবারও ঠিক সে সব পণ্যই আছে। তারচেয়ে বড় কথা এখানে কর্তৃপক্ষ পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কোনো কাজ করে না। ফুটপাতে যেসব জিনিস সস্তা দামে কিনতে পাওয়া যায় সেগুলো এখানে বেশি দামের দেখা যায়। বিশ্বাস করে ঘর সাজানোর জিনিসপত্র ও রান্নাঘরের জিনিসপত্র। এখানে আসলে পণ্যের ভিন্নতা ও ভালো মানের পণ্য উপস্থাপনার জরুরি না হলে এ মেলার জনপ্রিয়তা হারাবে। তাছাড়া বিদেশি পণ্য বলতে যেগুলো পাওয়া যাচ্ছে সেগুলো সারাদেশেই বিভিন্নভাবে বিভিন্ন সময় পাওয়া যায়। এসব দিকে নজর দেওয়া জরুরি।
এদিকে মেলায় ঢুকেই প্রথমেই রয়েছে গৃহস্থালীতে ব্যবহার্য রান্নাঘরে ব্যবহার্য জিনিসপত্রের সম্ভার। সেখানে মূলত রয়েছে দর্শনার্থীদের ভিড়।
সেখানকার শিপন চৌধুরী নামে একজন বিক্রেতা বাংলানিউজকে বলেন, আগের কয়দিনে আসছে আজকে বিক্রি ভালো। আশা করছি, আরও ভালো হবে। যেসব পণ্য রয়েছে এগুলো সবই সারাদেশে সময় পাওয়া যায়। দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়তে তখন আমরা আমাদের এক্সক্লুসিভ পণ্যগুলো নিয়ে আসবো।
ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইতালি, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি, চীন, দক্ষিণ আফ্রিকা, তুরস্ক, দুবাই, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, ভারত, পাকিস্তান ও ব্রুনাইসহ ২১টি দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করেছে। তারা তাদের নিজস্ব ও জাতীয় পণ্যগুলো মূলত প্রদর্শন করছে। এছাড়া মেলা কমিটি সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে, এবারের মেলায় মোট ৪৯৬টি স্টল ও প্যাভিলিয়ন রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর ব্যাটেলিয়ান যার আয়তন ৬ হাজার স্কয়ার ফিট। যেখানে জাতির জনকের স্মৃতিস্তম্ভ সম্বলিত একটি ছবিও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হচ্ছে। ৫৫টি রয়েছে বিদেশি পণ্যের স্টল ও প্যাভিলিয়ন। সর্বমোট ১৪টি ক্যাটাগরির এবার মেলায় প্রদর্শিত হচ্ছে। মেলা প্রাঙ্গণে খালি অংশে রয়েছে মোট আয়তনের ১৫ শতাংশ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৮, ২০২০
এমএএম/এএটি