ঢাকা: ঘুরতে কে না ভালোবাসে! নাগরিক জীবনে নানামুখী কর্মের চাপে অনেকেই ওষ্ঠাগত হয়ে ওঠে! অনেকেই এই চাপ থেকে মুক্তি পেতে খুঁজে ফেরেন প্রশান্তির ছোঁয়া।
কেউ সুযোগ পেলেই নিজেকে মেলে ধরেন দেশে বিদেশের মোহনীয় আকর্ষণীয় ও দর্শণীয় স্থানের সৌন্দর্যে।
এর মধ্যে জাতিসংঘের বিশেষ সংস্থা ওয়ার্ল্ড ট্যুরিজম অর্গানাইজেশনের (ডব্লিউটিও) র্যাংকিংয়ে সেরা দশে থাকা কয়েকটি স্পটে ঘুরে আসতে পারেন আপনিও।
২০১৩ সালে এসব স্থানে পর্যটকদের আগমনের পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করে একটি জরিপ চালায় বিশ্ব পর্যটন সংস্থা (ডব্লিউটিও)।
শীর্ষ ১০ পর্যটন স্পটের মধ্যে প্রথম স্থানে আছে ফ্রান্স। আর দশে স্থান করে নিয়েছে এশিয়ায় অবস্থিত প্যাগোডার দেশখ্যাত থাইল্যান্ড।
বাংলানিউজের ভ্রমণ প্রিয় পাঠকের জন্য বিশ্বের বিখ্যাত এ পর্যটন স্পটগুলোর সংক্ষিপ্ত পরিচিতির দ্বিতীয় কিস্তি তুলে ধরা হলো আজ।
তুরস্ক
পূর্ব ইউরোপের রাষ্ট্র হলেও তুরস্কের প্রায় পুরোটাই পড়েছে এশীয় অংশে। দুই মহাদেশ জুড়ে বিস্তৃত দেশ!
দেশটির পর্বতময় এলাকা আনাতোলিয়া বা এশিয়া মাইনর উপদ্বীপে পড়েছে। এখানে অবস্থিত তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারা।
বাকি অংশের নাম পূর্ব বা তুর্কীয় থ্রাস। এটি ইউরোপের দক্ষিণ-পূর্ব কোনায় অবস্থিত। এ অঞ্চলে রয়েছে বৃহত্তম শহর ইস্তানবুল।
মোটামুটি চতুর্ভুজাকৃতির দেশ তুরস্কের আছে বিস্তৃত উপকূল, যা দেশটির সীমান্তের তিন-চতুর্থাংশ গঠন করেছে।
তুরস্কের ভূমিরূপ বিচিত্র। দক্ষিণ-পূর্ব ও উত্তর-পশ্চিমে আছে উর্বর সমভূমি। পশ্চিমে আছে উঁচু, অনুর্বর মালভূমি। পূর্বে আছে সুউচ্চ পর্বতমালা। দেশের অভ্যন্তরের জলবায়ু চরমভাবাপন্ন হলেও ভূমধ্যসাগরের উপকূলীয় অঞ্চলের জলবায়ু মৃদু।
বিখ্যাত ঐতিহাসিক এলাকার মধ্যে হারুন অ্যানাটোলিয়ান উপদ্বীপ। যা প্রাচীন বিশ্বের অবিরত অধ্যুষিত এলাকাগুলোর একটি। এছাড়াও আছে হাজারো প্রাচীন দর্শনীয় স্থান।
গত বছর এসব দর্শনীয় এলাকা পরিদর্শনে ৩৭ দশমিক ৮ মিলিয়ন লোক সেখানে যান। ডব্লিউটিও-এর র্যাংকিংয়ে ষষ্টস্থানে অবস্থান করছে তুরস্ক।
পর্যটক বেড়েছে ৫ দশমিক ৯ শতাংশ।
জার্মানি
জার্মানিকে জার্মান ভাষায় প্রায়ই বলা হয়ে থাকে ‘ডাস লাণ্ড ড্যার ডিখটার উন্ড ডেনকার’ অর্থাৎ ‘কবি ও চিন্তাবিদদের দেশ’।
একটি জাতির দেশ হিসেবে জার্মানির উত্থানের অনেক আগে থেকেই জার্মান সংস্কৃতির আবির্ভাব, এবং এর বিস্তৃতি ছিল গোটা জার্মান ভাষী এলাকা জুড়ে।
গোড়া থেকেই জার্মান সংস্কৃতি ইউরোপের তৎকালীন সব হালচালে প্রভাবিত হয়ে এসেছে। এই প্রভাবে ধর্ম ও ধর্ম নিরপেক্ষতা দুটোই ছিল।
ইতিহাসের কিছু জাঁদরেল মনিষী (ভোল্ফগাংক আমাডেয়ুস মোৎসার্ট, ফ্রানৎস কাফকা, কার্ল মার্ক্স, ফ্রেডরিখ এঙ্গেলস এবং পাউল কেলান) যদিও বা আধুনিক অর্থে তারা জার্মান নাগরিক ছিলেন না, কিন্তু তাদের ঐতিহাসিক অবস্থান, কাজ ও সামাজিক গুরুত্ব বুঝতে হলে অবশ্যই এই মনীষীদের দেখতে হবে জার্মান সংস্কৃতির দৃষ্টিকোণ থেকে।
প্রতিবছরই জার্মান সংস্কৃতির মেলবন্ধন খুঁজতে লাখো পযর্টক ভিড় করেন দেশটিতে।
গত বছর ৩১ দশমিক ৫ মিলিয়ন পর্যটক যান জার্মানিতে। র্যাংকিংয়ে ৭ম অবস্থানে জায়গা করে নেয় দেশটি। ২০১২ সালের তুলনায় ২০১৩-তে পর্যটক বৃদ্ধির হার ছিল ৩ দশমিক ৭ শতাংশ।
যুক্তরাজ্য
ইউরোপীয় মূল ভূখণ্ডের উত্তর-পশ্চিম উপকূলের সন্নিকটে অবস্থিত একটি স্বাধীন দ্বীপরাষ্ট্র। চারটি সাংবিধানিক রাষ্ট্র নিয়ে (ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, ওয়েলস এবং উত্তর আয়ারল্যান্ড) যুক্তরাজ্য গঠিত।
দেশটির রয়েছে ঐতিহাসিক ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব। যুক্তরাজ্যে প্রতিবছরই কোটি কোটি পর্যটক যান। ২০১৩ সালে সেখানে ৩১ দশমিক ২ মিলিয়ন মানুষ যান। যা আগের বছরের তুলনায় ৬ দশমিক ৪ শতাংশ বেশি।
বিশ্ব পর্যটন সংস্থার র্যাংকিংয়ে ৮ম এ স্থানে আছে যুক্তরাজ্য।
রাশিয়া
সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়েন ও বিশ্বের বৃহত্তম দেশ রাশিয়ায় গত বছর ২৮ দশমিক ৪ মিলিয়ন পর্যটকের আগমন ঘটে। যা আগের বছরের তুলনায় ১০ দশমিক ২ শতাংশ বেশি।
ডব্লিউটিও-এর র্যাংকিংয়ে নবম স্থানে অবস্থানে আছে দেশটি।
থাইল্যান্ড
২০১৩ সালে শ্বেতহস্তীর দেশ খ্যাত থাইল্যান্ডে ২৬ দশমিক ৫ মিলিয়ন পর্যটক গিয়েছেন। যা আগের বছরের তুলনায় ১৮ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে।
দেশটিতে মোহনীয় সমুদ্র সৈকতসহ বিভিন্ন ধরনের প্রাচীন প্যাগোডাসহ দর্শনীয় স্থান রয়েছে।
প্রিয় পাঠক, ভ্রমণ যাদের নেশা, বেড়ানোর সুযোগ এলে যারা উড়িয়ে দেন সব বাধা, কাজের অংশ হিসেবে যারা ভ্রমণ করেন কিংবা যাদের কালেভদ্রে সুযোগ হয় ভ্রমণের তারা সবাই হতে পারেন ট্রাভেলার্স নোটবুক’র লেখক। আপনার ভ্রমণের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে পারেন বাংলানিউজের পাঠকদের সঙ্গে।
আর একটা কথা লেখার সঙ্গে ছবি পাঠাতে ভুলবেনই না, সেই সঙ্গে বাতলে দিন সেখানে যাওয়ার পথঘাটের বিবরণও।
প্রিয় পাঠক, আপনার ভ্রমণ আনন্দ বিশ্বজুড়ে বাঙালির কাছে ছড়িয়ে দিতে আমাদের ই-মেইল করুন-bntravellers.notebook@gmail.com এই ঠিকানায়।
** পর্যটনের সেরা দেশ-১
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০১৪