ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ট্রাভেলার্স নোটবুক

সমুদ্রস্নানে দুর্ঘটনা এড়াতে পারেন যেভাবে

বাংলানিউজ ট্রাভেল টিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৬, ২০১৪
সমুদ্রস্নানে দুর্ঘটনা এড়াতে পারেন যেভাবে ছবি:দেলোয়ার হোসেন বাদল / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত থেকে ফিরে: খবরের পাতা খুললেই মোটামুটি নিয়মিতই চোখে পড়ে সাগরে ডুবে মৃত্যুর খবর। খবর চোখে পড়েছে প্রতিবেদনটি লেখার সময়ও।

সৌন্দর্যের কোলে কেন হবে মানুষের মৃত্যু? মৃত্যু তো সুন্দর নয়! তাই মেনে নেওয়া কঠিন।

সাগর মানুষকে সবসময় টানে তার মোহনীয় সৌন্দর্যে। সাগরের ডাক উপেক্ষা করা কঠিন। সাঁতার জানুক বা না জানুক সৈকতে গিয়ে গা ভেজান না এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর। যারা গিয়েছেন, নেমেছেন সাগরজলে তারা বলতে পারবেন যে, সে ডাক এড়ানো অসম্ভব।

তবে সে ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে মৃত্যু কাম্য নয় কারও। একটু সচেতনতা, একটু কৌশলী হলেই নিরাপদ থাকতে পারবেন আপনি।

বিষয়টি নিয়ে কথা হয় সৈকতের পর্যটকদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত লাইফগার্ড সদস্যদের সঙ্গে। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার হয়ে কাজ করেন তারা।

সৈকতে নামার সময় জোয়ার-ভাটার বিষয়টিকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। বলা হয়, ভাটার সময় সাগর কিছু নিলে তা ‍আর ফেরত দেয় না। এ বিষয়ে সতর্কবাণীও দেওয়া আছে সৈকতে।

তবে লাইফগার্ড সদস্যদের বক্তব্য, জোয়ার বা ভাটা মুখ্য বিষয় নয়,  সৈকতের একটি নির্দিষ্ট চ্যানেল রয়েছে। এটি বেশ গভীর। গভীরতা পেরিয়ে ওপারে আবার উঁচু। যখন বড় বড় ঢেউগুলো কিনারে আছড়ে পড়ে তখন নিজের শরীরের ভারসাম্য রক্ষা না করতে পেরে অনেকে ঢুকে যান ওই চ্যানেলে। আর চ্যানেলে ঢুকে পড়লে ভেসে ওঠার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। ফলে মৃত্যু হয় বেশি।

এজন্য লাইফগার্ড সদস্যরা নির্দিষ্ট এলাকা ভাগ করে নিয়মিত প্রহরা দেন। কয়েকটি টাওয়ার থেকে দূরবীন দিয়ে নজর রাখা হয়। আর নিচে যারা থাকেন তাদের কাছে একটি হলুদ সোলার দণ্ড, ওয়্যারলেস, বাঁশি থাকে। কেউ বেশি দূরে যেতে থাকলে বাঁশি বাজিয়ে সতর্ক করে দেন। তবু হাজার হাজার পর্যটকের মধ্যে সবার খেয়াল রাখতে পারেন না তারা। প্রয়োজনের তুলনায় লোকবল কম। তছাড়া, সরকারিভাবেও নেই যথাযথ তদারকি।

যখন বড় বড় ঢেউ আসে তখন ঢেউয়ের উপর উল্টো দিক থেকে লাফিয়ে পড়লে ঢেউটা এলোমেলোভাবে ডুবিয়ে বা ভাসিয়ে নিতে পারে না। এটাও একটি সাধারণ কৌশল। এই কৌশলটি একবার রপ্ত করতে পারলেও অনেকটা নিরাপদ থাকা সম্ভব।

ভাটার সময় একটি ভয় বেশি থাকে। সেটা হলো, ঢেউ যখন কিনার থেকে ফিরে যায় তখন টানটা অনেক বেশি জোরালো আর গতিশীল থাকে। তাই ভারসাম্য রাখা অনেক সময় কঠিন হয়ে পড়ে।

লাইফগার্ড সদস্যরা সতর্ককরণ ফ্ল্যাগ দিয়ে নিরাপদ জোন ভাগ করে রাখলেও কেউ কেউ এর বাইরে গিয়ে নামেন। তখন লাইফগার্ড সদস্যদের কিছু করার থাকে না।

আর অল্প পানিতে অনেক সময় ডুবে মারা যান অনেকে। এদের বেশির ভাগই যুবক। সাগরজলে বেঁচে থাকার আরেকটি বিশেষ কৌশল চোখে ও মুখে যথাসম্ভব পানি না ঢুকতে দেওয়া। কারণ অতিরিক্ত লবণ পানি আমাদের শরীর বেশি গ্রহণ করতে পারে না।

সমুদ্রস্নানের সময় ঢেউয়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারা সুবিধার। ঢেউ শরীরে আছড়ে পড়ার আগে শরীরটাকে একটু উঁচু করে বাঁকিয়ে ভাসিয়ে দিতে পারলেই ‍আর ভয় নেই।

সাগর একবার কিছু কেড়ে নিলে তা আর ফেরত দেয় না। এটা তার স্বভাব।

সমুদ্রে যাবো, আনন্দ করবো, উপভোগ করবো-এটাই এর সৌন্দর্য, তবে সতর্ক হয়ে। নিজে আগে সতর্ক হতে হবে। জোয়ার-ভাটা, বর্ষা, উত্তালতার চেয়ে বড় বিষয় সচেতনতা, কিছু প্রাথমিক নিয়ম-কানুন মেনে চলা। নিশ্চিত মৃত্যু ঠেকানোর ক্ষমতা কারও নেই, তবে সচেতনতা আমাদের হাতে।

তাই নিজে সচেতন হতে হবে, অন্যকে সচেতন করতে হবে, লাইফগার্ডদের নির্দেশনা মেনে চলতে হবে, এড়াতে হবে মৃত্যুর মতো ভয়ংকর দুর্ঘটনা।

** চোখ যখন গুগল আর্থ!
** রূপচাঁদার নামে টেকচাঁদা!
** আকাশ থেকে ভূমিতে (ভিডিও)
** যৌবনবতী নাফ, সুন্দরীতমা টেকনাফ
** সাগর পানে সাগর টানে
** প্রেমের অমর সাক্ষী মাথিনের কূপ
** খেতে ভুলবেন না আইনচি
** সোনাদিয়া, সম্ভাবনাময় সোনার দ্বীপ
** মিষ্টি পানের সবুজ দ্বীপ
** খাবারের সন্ধানে সাঁতারু গাভী!
** অটল পাহাড়ের বুকে উদ্দাম সাগর
** শারদ মেঘের দেশে, পাখির ডানায় ভেসে
** গরম গরম ফিশ ফ্রাই
** মহাপতঙ্গের পেটে একঘণ্টা!
** রিজেন্টে ফ্রি কক্সবাজার দর্শন


বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৬, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।